গ্রাম পুলিশ পুলিশেরই একটা অংশ। দায়িত্ব পালন করছেন গ্রামবাসীকে নিরাপত্তা দিতে। কিন্তু তাদের মানে না গ্রামের লোকজন।
শুধু তাই নয়,কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকার (ইউপি) চেয়ারম্যান ও মেম্বারদের চোখরাঙানি দেখে ও অবহেলায় দিন কাটে গ্রাম পুলিশের।
তবে গ্রাম পুলিশের দাবি, অবস্থার উন্নতি না হলে এই চাকরি থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে মানুষ। শুধু পরনে নীল রঙের জামা আর খাকি রঙের প্যান্ট। হাতে লাঠিতেই সীমাবদ্ধ থাকতে চান না তারা। সম্মান ও কাজের গতি বাড়ালে দেশ উন্নয়নে গ্রাম পুলিশের ভূমিকার প্রতিফলন ঘটবে বলে মনে করেন তারা।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে জেলার বিভিন্ন এলাকার কয়েকজন গ্রাম পুলিশ জানান, সম্মান ও কাজের গতি বাড়ালে দেশ উন্নয়নে গ্রাম পুলিশের ভূমিকার প্রতিফলন ঘটবে। গ্রাম পুলিশের সততায় একমাত্র শক্তি তাদের। যা বেতন পাই তা দিয়ে সংসার চলে না। এখন ৩ হাজার টাকা বেতন পাই আমরা। মাঝে মাঝে অন্যের বাড়িতে দিনমজুরের কাজ করে সংসার চালাতে হয়। কাজ করার সময় ইউনিয়ন অথবা থানা থেকে ফোন করলে সেই কাজ ফেলে রেখে দ্রুত সেখানে উপস্থিত হতে হয়। এভাবেই দিন কাটে এই জেলার গ্রাম পুলিশের।
তারা জানান, শুনেছি সরকার গ্রাম পুলিশের কল্যাণের কথা চিন্তা করে বেতন বাড়িয়েছে। এখন থেকে আমরা ৬ হাজার পাঁচশত টাকা বেতন পাবো। কিন্ত এখনো হাতে পাইনি সেই টাকা। বেতনের টাকা ঠিকমত হাতে পাওয়া যায় না। এই মাসের বেতনের টাকা ওই মাসে পাওয়া যায় গ্রাম পুলিশের চাকরিতে।
তবে বেতন বাড়লেও অবস্থা পাল্টায়নি। প্রতিদিন এলাকার মানুষ ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের অবহেলায় দিন কাটে আমাদের। অনেকেই আবার হতাশা নিয়ে ঘুরে ফেরেন। আবার অনেকেই চেয়ারম্যানের চোখে নিজেকে একটু ভালো করতে চেয়ারম্যানের বাড়িতে বাড়তি কাজও করেন। আর এ সুযোগে চেয়ারম্যান নিজের ইচ্ছে মতো কাজ করান গ্রাম পুলিশকে। এমন চিত্র এখন কুষ্টিয়ার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়ন এলাকায়।
কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার এস এম তানভীর আরাফাত বলেন, গ্রাম পুলিশ পুলিশের একটা অংশ, গ্রামের উন্নয়ন ও আইন-শৃঙ্খলা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে তারা। ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিটি উন্নয়ন কর্মসূচিতে তারা নানা ভূমিকা পালন করেন। পাশাপাশি গ্রামের চোর-ডাকাত-সন্ত্রাসীদের ধরতে তারা পুলিশকে সহযোগিতা করেন। তাদের উন্নয়নে সরকার কাজ করছে।
কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক আসলাম হোসেন বলেন, গ্রাম পুলিশ ইউনিয়ন পরিষদের একটি অংশ। যেই কাজটি আগে হতো তারা কিছু এলাকায় সময় দিতে পারতেন। এখন ইউনিয়ন পরিষদের অনেক কাজ তাই তাদের দিয়ে ইউনিয়নের বিভিন্ন সময় জরিপ কাজ, ট্যাক্স আদায়সহ এ রকম বিভিন্ন কাজ করেন তারা। এখন প্রয়োজন তাদেরকে প্রশিক্ষণের মাধ্যমে আরো দক্ষ হিসাবে গড়ে তোলার সেই কাজটি করে চলেছি।