হত্যার হুমকির পর কুষ্টিয়ার ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের হ্যান্ডবল টিমকে পিটিয়ে রক্তাক্ত করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের খেলোয়াড় ও শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় ইবির সাবেক প্রক্টর, ক্রীড়া বিভাগের পরিচালকসহ ৯ জন খেলোয়াড় রক্তাক্ত ও গুরুতর আহত হয়েছে বলে জানা গেছে। আহতদের মধ্যে হাত ও কোমর ভাঙা রাব্বি ও ইমনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকেল ৪টার দিকে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় মাঠে ইবি ও জাবির খেলা শুরু হয়। বঙ্গবন্ধু আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় স্পোর্টস চ্যাম্পিয়নশিপ হ্যান্ডবলের সেমিফাইনাল ম্যাচ ছিল এটি। খেলা চলাকালীন ৩ পয়েন্টে এগিয়ে থাকা ইবির খেলোয়াড়দের বারবার ধাক্কা দিয়ে ফেলে দেয় জাবি টিম। একাধিকবার ফাউল করার পরও রেফারি তাদের কোনও ফাউল দেয়নি। পরে আবারও আরেক প্লেয়ারকে ফেলে দেয়ায় প্রতিবাদ জানালে জাবি টিম আক্রমণ করে।
এসময় বাইরে থেকে অন্যান্য শিক্ষার্থীরা রড ও লাঠিসোটা নিয়ে ইবি টিমের ওপর ঝাপিয়ে পড়ে। এতে ইবির সাবেক প্রক্টর ড. মাহবুবুর রহমান, শারীরিক শিক্ষা বিভাগের পরিচালক ড. মো. সোহেল, টিম প্রশিক্ষক শাহালম কোচী, খেলোয়াড় ইমন, রাব্বি, আশিক, শিমুল, সাকিব, হৃদয়, সালমান, দ্বীপন, জাকারিয়া, শোভন, সালভি, সৌরভ গুরুতর আহত হয়। মারপিটে রাব্বির হাত ও ইমনের কোমর ভেঙে গেছে বলে জানা গেছে।
এছাড়া ড. মো. সোহেলের নাক ফেটে গিয়ে প্রচুর রক্তক্ষরণ হয়। হামলার একটি ভিডিও ক্লিপ ইতোমধ্যে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধির কাছে এসে পৌছেছে। এর আগে গত শুক্রবার ইবি টিমের প্লেয়ারদের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দিয়েছিল তারা। সেদিন ক্যাম্পাস ছেড়ে গেলেও নিরাপত্তার আশ্বাসে আবারও খেলতে আসে ইবি টিম।
এদিকে হামলার প্রতিবাদে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক আন্দোলনে নেমেছে। তারা কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের দাবি, ক্রীড়াঙ্গণে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়কে কালো তালিকাভূক্ত করতে হবে। আজীবনের জন্য তাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভেন্যু নির্ধারণ বন্ধ করতে হবে। এছাড়াও ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তাদের বিচার না হলে পুনরায় আন্দোলনে নামবে ইবির শিক্ষার্থীরা। এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে ইবি প্রশাসন, শিক্ষক সমিতি, ছাত্র-উপদেষ্টা, শাখা ছাত্রদল, ছাত্রলীগসহ পুরো ইবি পরিবার।
হামলার বিষয়ে জাবি প্রক্টর আ স ম ফিরোজুল হাসান আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের পক্ষ থেকে আমরা আন্তরিকভাবে দুঃখ প্রকাশ করছি। নিরাপত্তা দিতে না পারায় আমরা মর্মাহত।’
ইবি ভিসি ড. রাশিদ আসকারী আরটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘আমি এই বর্বরোচিত হামলার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে সংশ্লিষ্টদের প্রতি জোর দাবি জানাচ্ছি।’