কালবৈশাখী ঝড়ের ছোবলে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর কলাচাষীরা। গত রবিবার বিকালে কালবৈশাখী ঝড় আঘাত হানে। এতে উপজেলার শিলাইদহ ও জগন্নাথপুর ইউনিয়নের কলাচাষীরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, শিলাইদহ ইউনিয়নের কল্যাণপুর গ্রামের বিপুল পরিমান জমির কলাগাছ ঝড়ের তান্ডবে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। কল্যাণপুর গ্রামের কলাচাষী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ নেতা এনায়েত আলী জানান, তাদের গ্রামের (কল্যাণপুর) প্রায় দেড়শত বিঘা জমির কলাগাছ ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তিনি নিজেই প্রায় ৭ বিঘা জমিতে কলাচাষ করেছেন। এরমধ্যে পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে ৪ বিঘা জমির কলাগাছ। এ ছাড়াও মাঠে গিয়ে আলাপকালে জানাগেছে, কোরবান আলী, পাঁচু কুমার দাস সহ অনেকের জমির কলাগাছ মাটিতে পড়ে রয়েছে। পাঁচু কুমার দাস জানান, আমি খুবই গরীব চাষী। আর কয়েকমাসের মধ্যেই কলা বিক্রি করতে পারতাম, কিন্তু ঝড়ের আঘাতে আমার ক্ষেতের অধিকাংশ কলাগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। অন্যদিকে, উপজেলার জগন্নাথপুর ইউনিয়নের চরাঞ্চলের চরদয়ারামপুর, চর মহেন্দ্রপুর, চরভবানীপুর এলাকায় কালবৈশাখী ঝড়ের আঘাতে বিপুল সংখ্যক কলাগাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। স্থানীয় কলাচাষীদের সাথে আলাপকালে জানাগেছে, রবিবার বিকালে কালবৈশাখী ঝড় তাদের এলাকায় আঘাত হেনেছে। এতে উঠতি কলাগাছের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে পুরাতন কলাগাছের বেশি ক্ষতি হয়েছে। আর নতুন গাছগুলো ঝড়ের আঘাতে দুমড়ে মুচড়ে গেছে। চর দয়ারামপুর এলাকার হবিবর রহমান ও শরীফুল ইসলাম জানান, কালবৈশাখী ঝড়ে তাদের বাগানের অধিকাংশ কলাগাছ কলাসহ মাটিতে পড়ে গিয়েছে। মাটিতে লুটিয়ে পড়া যাওয়া অধিকাংশ গাছেই অপরিপক্ক কলা রয়েছে। যা বাজারে বিক্রি করা সম্ভব হবে না। এ ছাড়াও চর মহেন্দ্রপুর, চর ভবানীপুর এলাকায় আবুল হোসেন কাজী, রবিউল, খলিল, কালাম, মামুন, সোবাহান ও ওহাব খান সহ আরো অনেকে কলাচাষী ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। সরেজমিনে গিয়ে দেখাগেছে, ঝড়ের আঘাতে চরমহেন্দ্রপুর এলাকার অধিকাংশ জমির পুরাতন কলাগাছ কলাসহ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। আর পড়ে যাওয়া গাছের কলাগুলো এখনো বিক্রির উপযোগী হয়নি। চাষীরা জানান, সামান্য কিছু কলা বিক্রি করা গেলেও ঝড়ে ভেঙ্গে পড়ার কারণে নায্যমূল্য পাওয়া যাচ্ছেনা। জগন্নাথপুর ইউনিয়নের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপ সহকারি কৃষি অফিসার মো: আরিফুল ইসলাম জানান, জগন্নাথপুর ইউনিয়নে নতুন ও পুরাতনসহ প্রায় ১১০ হেক্টর জমিতে কলার চাষ করা হয়েছে। এর মধ্যে ঝড়ে ক্ষতি হয়েছে প্রায় ২০/২৫ হেক্টর জমির কলাগাছ। ঝড়ের আঘাতে মাটিতে পড়ে যাওয়া গাছগুলোর মধ্যে অধিকাংশই পুরাতান কলাগাছ। আর দুই-এক মাসের মধ্যেই ওই গাছগুলোর কলা বিক্রির উপযোগী হতো।