কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার বারুইপাড়া ইউনিয়নের মির্জানগর গ্রামের ৫৭ বছরের গোষ্ঠিগত বিরোধের মিমাংসা করেছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল আহমেদ। এ উপলক্ষে শনিবার দুপুর ২টায় মির্জানগর বাজারের মসজিদ সংলগ্ন স্থানে এক শালিশী বৈঠকে বিরোধের নিস্পত্তি করা হয়।
সূত্র জানায়, ১৯৬১ সাল হতে মির্জানগর গ্রামে মল্লিক ও মন্ডল গ্রæপের সামাজিক বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দাঙ্গা, হাঙ্গামা চলে আসছিল। যার ফলে সেই সময় থেকেই পক্ষে বিপক্ষে মামলা, হামলা, ভাংচুর, লুটপাট সহ বিভিন্ন অসামাজিক কর্মকান্ড ঘটছিল। তারই ধারাবাহিকতায় চলতি বছরের মে মাসের প্রথম দিকে ঈদগাহ ও মসজিদ নিয়ে দু-পক্ষের সংঘর্ষে বেশ কয়েকজন গুরুত্বর আহত হয়।
এঘটনায় স্থানীয় থানায় পাল্টা পাল্টি মামলা দায়ের হয়। উভয় পক্ষের মামলা হওয়ার পরেও দু-গ্রæপের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সম্ভাবনা দেখা দিলে মিরপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার এস এম জামাল আহমেদ সামাজিক নিস্পত্তির জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালান।
৫৭ বছরের বিরোধের নিস্পত্তির বৈঠকে প্রধান অতিথি’র বক্তব্যে ইউএনও বলেন, হানাহানি, দাঙ্গা, হাঙ্গামা এমনি একটি বিষয় যা মানুষের জীবনে উন্নয়নের বড় অন্তরায়। হিংসা বিদ্বেষ মানুষকে বর্বরতার দিকে ঠেলে দেয়। আপনারা এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বিগত ৫ যুগ ধরে এলাকা থেকে গোষ্ঠিগত দ্বন্দের ফলে উভয় পক্ষের অনেকেই আর্থিক ও সামাজিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। এখন থেকে আপনারা সবাই সব দ্বন্দ ভূলে গিয়ে এলাকার উন্নয়নে কাজ করবেন। সেই সাথে পরস্পরের প্রতি সহমর্মিতা ও সহনশীল মানষিকতা পোষন করে চলবেন।
বারুইপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সাইদুর রহমানের সভাপতিত্বে বিরোধ নিস্পত্তি সভায় বিশেষ অতিথি ছিলেন, মিরপুর পৌরসভার মেয়র হাজী এনামুল হক, মিরপুর থানার অফিসার ইনচার্জ রফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি হাজী এ্যাড. আব্দুল হালিম, জেলা যুবলীগের সভাপতি রবিউল ইসলাম, তালবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুল হান্নান ও বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সোহেল রানা। বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক শহীদুল ইসলামের পরিচালনায় বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন, বারুইপাড়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি ডা. শফিকুল ইসলাম, বহলবাড়ীয়া ইউনিয়ন আওয়ামীলীগের সভাপতি নজরুল ইসলাম সহ এলাকার বিশিষ্ট জনেরা।
সভায় সর্বসম্মতিক্রমে উভয় পক্ষের ৫জন করে মোট ১০ সদস্য বিশিষ্ট একটি শান্তি কমিটি গঠিত হয়।