কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতুর উজানে গড়াই নদীর বাম তীর ধ্বসের ফলে সদর উপজেলার ১নং হাটশ হরিপুর ইউনিয়নবাসীর দীর্ঘদিনের লালিত স্বপ্ন এই সেতুসহ ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ড হাটশ হরিপুর গ্রামের প্রায় ২হাজার বসত ভিটাসহ গোটা জনপদের মসজিদ, মাদ্রাসা, সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও রাস্তা-ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার শংকা এবং নদীর গতিপথ পরিবর্তনের ফলে আজকের জনবসতি আগামীতে নদীর স্রোত প্রবাহে ভেসে যাওয়ার সমুহ সম্ভাবনার বিষয়টি তুলে ধরায় এর স্থায়ী সমাধানের আশ্বাস দিয়েছেন পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার এবং বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক মাহফুজুর রহমান।
নদী রক্ষা ও ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির সদস্য সচিব হাসাান আলী জানান, ক্রটিপূর্ণ/অসম্পূর্ণ ডিজাইনে নির্মিত কুষ্টিয়া-হরিপুর শেখ রাসেল সেতু’র উজান থেকে গড়াই নদীর বাম তীর ভেঙ্গে নদীর গতিপথ পরিবর্তনের সূচনা করেছে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, অতি দ্রুত এই সেতু’র অপরিহার্য অনুষঙ্গ নির্ধারিত দৈর্ঘ/প্রস্থের অসম্পূর্ণ ডিজাইন সংযোজনসহ নদীর বামতীরে ৮৮৬.৫ মিটার রিভার্টমেন্ট প্রটেকশন জরুরী ভিত্তিতে নির্মান করা না হলে গড়াই নদী বাম তীর ভেঙ্গে সেতুর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় ইউনিয়নের ২নং হাটশ হরিপুর ওয়ার্ডের জন বসতিসহ গোটা জনপদের মসজিদ, মাদ্রাসা, সরকারী বেসরকারী শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছাড়াও রাস্তা-ঘাট নদীগর্ভে বিলীন হবে এবং গতিপথ পরিবর্তনের ফলে আজকের জনবসতির উপর দিয়ে নদীর স্রোত প্রবাহ বইতে থাকবে। এতে বর্তমান অবস্থান নদীর মাঝখানে সেতু থাকবে কিন্তু এর সাথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে ব্যবহারযোগ্যতা হারাবে।
বিশেষজ্ঞদের দেয়া এমন মতামতের ভিত্তিতে শংকিত ইউনিয়নবাসীর অস্তিত্ব রক্ষার দাবিতে হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এবং নদী রক্ষা ও ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগ এবং পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার দৃষ্টি আকর্ষন করলে উভয় দপ্তর দায় নিতে অস্বীকার করেন। মৃত্যুকুপে দাঁড়িয়ে শংকামুক্তির দাবিতে গত ১৭ সেপ্টেম্বর, সকাল সাড়ে ১০ টায় ভাঙ্গন কবলিত নদী পাড়ে ইউনিয়নের সর্বস্তরের নারী-পুরুষ, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষক/শিক্ষার্থীদের অংশ গ্রহনে মানববন্ধন ও সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। এরই ধারাবাহিকতায় গত ১৯ সেপ্টেম্বর, বৃহষ্পতিবার সকাল ১০টায় বিশ্ব কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়ি চত্বরস্থ গীতাঞ্জলী অতিথি ভবনে হাটশ হরিপুর ইউনিয়ন পরিষদ এবং নদী রক্ষা ও ভাঙ্গন প্রতিরোধ সংগ্রাম কমিটির পক্ষ থেকে শিলাইদহ কুঠিবাড়ি রক্ষা বাধ পরিদর্শনে আগত বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক প্রকৌশলী মো: মাহফুজুর রহমান এবং পানি সম্পদ মন্ত্রনালয়ের সচিব কবির বিন আনোয়ার মহোদয়ের সাথে কথা বলেন এবং সমাধানে যথাযথ প্রকল্প গ্রহণ, অনুমোদসহ বাস্তবায়নের আবেদনটি তুলে দেয়া হয়।
এসময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন, কুমারখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: শাহীনুজ্জামান ও কুষ্টিয়া অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) মুহাম্মদ ওবাইদুর রহমান, শিলাইদহ ইউপি চেয়ারম্যান মো: সালাহ উদ্দিন খান তারিক প্রমুখ।
সচিব ও মহাপরিচালকদ্বয় গুরত্বসহকারে আবেদনটি গ্রহণ পূর্বক আশ^াসই নয় রীতিমত কমিটমেন্ট করেন যাতে এবিষয়ে যথাযথ প্রকল্প গ্রহনসহ তা বাস্তবায়ন করা যায়। এসময় সচিব বলেন, এটার জন্য কোন একনেক অনুমোদনের প্রয়োজন হবে না। এটা মন্ত্রনালয় থেকেই করে দেয়া হবে। পরে শিলাইদহ রক্ষা বাধ পরিদর্শনকালে ধ্বসে যাওয়া সুলতানপুর কালোয়ায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড কুষ্টিয়ার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মুনিরুজ্জামান এবং নির্বাহী প্রকৌশলী আরিফুজ্জামান খাঁনদ্বয়ের সামনা সামনি এবিষয়ে বিশেষ উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তুতসহ তা প্রেরণের বিষয়েও কথা হয়।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তি