কুষ্টিয়ার জগতি সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম ফরেস্টার এর দুর্নীতি অভিযোগ পাওয়া গেছে।
একটি নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা যায়, গত কিছুদিন আগে তিনি জগতি নার্সারির মধ্যে পুকুর পাড়ের দণ্ডায়মান ৩৫/৪০ বছরের একটি আকাশমনি গাছ কাউকে না জানিয়ে অবৈধভাবে কাটে। গাছের বেড ছিল ৭ ফুট লম্বা প্রায় ২৫ ফুট। এ ব্যাপারে বাগান মালিক নূরু মন্ডলকে ম্যানেজ করতে নিচের অংশ থেকে ৫ ফুট একটি লগ দেয়। অন্য কাঠগুলো রবিউল ইসলাম পার্শ্ববর্তী একটি করাত কল থেকে ফাড়াই করে। এই কাঠ রবিউল ইসলাম এর শোবার ঘরের পাশের রুমে রেখে দিয়েছিল। এই বিষয়টি নিয়ে আশপাশে গুঞ্জন ছড়িয়ে পড়লে গত শুক্রবার গভীর রাতে কাঠগুলো নজরুল ইসলাম এর ফার্নিচারের দোকানে দুটি বক্স খাট ও একটি ওয়াল শোকেস বানাতে দেয় জগতি সামাজিক বনায়ন নার্সারী ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম।
এমনকি গাছের নিচের অংশটুকু তুলে ফেলে প্রমাণ লোপাট করার চেষ্টা করে এই অফিস কর্মকর্তা। শুধু তাই নয় ২০১৭-১৮ অর্থবছরে জগতি নার্সারিতে ৭ ইঞ্চি বাই ৫ ইঞ্চি সাইজের পলিব্যাগে বিভিন্ন প্রজাতির ৪০হাজার চারা উত্তোলনের জন্য বরাদ্দ দেয়া হয়। সেই চারা অধিকাংশই বিক্রি করে আত্মসাৎ করে বলেও সূত্রটি জানায়। সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এই চুরি ঢাকতে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানি থেকে ৫ ইঞ্চি বাই ৩ ইঞ্চি সাইজের পলিব্যাগে ৩০ হাজার চারা এনে নার্সারিতে সাজিয়ে রাখা হয়েছে।অধিকাংশ চারার পলিথিনে সরকারি কোনো লেবেল লাগানো নেই,মাপেও ছোট। এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক কর্মচারী জানান, সরকারি ভালো চারা গুলা বিক্রয় করে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকোর কাছ থেকে নিম্নমানের চারা এনে রাখা হয়েছে এই নার্সারিতে।
সূত্রটি আরো জানান, ইতিপূর্বে রবিউল ইসলাম ফরেস্টারের বিরুদ্ধে অনেক দুর্নীতির অভিযোগ ছিল। কিন্তু কোন এক অজ্ঞাত কারণে তার বিরুদ্ধে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। ইতিপূর্বে গাছ বহনকারী গাড়ির চলাচল পাশ (টিপি) দিত স্টাফরা। বর্তমানে রবিউল ইসলাম যেখানে কাঠের গাড়ি লোড হয় সেখানে নিজে গিয়ে ২ হাজার টাকার বিনিময়ে চলাচলের পাশ দেয়। কিন্তু চলাচল পাশের কোন টাকা সরকারি রাজস্ব হিসেবে জমা দেয়া হয় না।
জগতি সামাজিক বনায়ন নার্সারি ও প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা রবিউল ইসলামের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আমার বিরুদ্ধে যে অভিযোগ তোলা হয়েছে সব মিথ্যা। কিছু গাছ এখানে লাগানো হয়েছে এজন্য ছোট পলিথিন রয়েছে।
বিভাগীয় বন কর্মকর্তা আসলাম মন্ডলের মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে বলেন, বিষয়গুলি তদন্ত করা হবে। যদি দোষী প্রমাণিত হয় তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।