রাজধানীর মোহাম্মদপুরে লাইসেন্সবিহীন ১৪টি বেসরকারি হাসপাতাল ও ক্লিনিক বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট। বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ ও বিচারপতি আহমেদ সোহেলের হাইকোর্ট বেঞ্চ গতকাল রুলসহ এ আদেশ দেন। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের প্রতি এ আদেশ দেয়া হয়েছে।
চলতি বছরের ২০ এপ্রিল ‘রাজধানীতে বেসরকারি স্বাস্থ্যসেবা প্রতিষ্ঠান: ৫০০ মিটারে ২৬টি, ১৪টিই অবৈধ হাসপাতাল’ শিরোনামে বণিক বার্তায় প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনটি যুক্ত করে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় নির্দেশনা চেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর মানবাধিকার ও পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে রিট আবেদনটি করা হয়। রিটের পক্ষে আদালতে শুনানি করেন আইনজীবী মনজিল মোরসেদ। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল মোখলেছুর রহমান।
আদেশের পর মনজিল মোরসেদ বণিক বার্তাকে বলেন, আইন অনুসারে লাইসেন্সহীন হাসপাতাল-ক্লিনিকের কার্যক্রম পরিচালনা অবৈধ। বণিক বার্তার প্রতিবেদন পড়ে আমরা জানতে পারি, রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বাবর ও খিলজি রোডে অবস্থিত ১৪টি হাসপাতাল লাইসেন্সবিহীনভাবে কার্যক্রম চালাচ্ছে। তাই জনস্বার্থে রিটটি করা হলে আদালত রুলসহ অন্তর্বর্তীকালীন আদেশ দেন। হাইকোর্ট ওই হাসপাতাল ও ক্লিনিকগুলো লাইসেন্স না দেখাতে পারলে অবিলম্বে তা বন্ধ করতে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটকে আদেশ দিয়েছেন। তবে প্রতিবেদনটি যেহেতু এপ্রিল মাসের, এর মধ্যে কোনো হাসপাতাল ও ক্লিনিক যদি লাইসেন্স নবায়ন করে দেখাতে পারে, তাহলে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে না।
বণিক বার্তার প্রতিবেদনে যে ১৪ অবৈধ হাসপাতালের কথা উল্লেখ করা হয় সেগুলো হলো— সেবা নার্সিং হোম অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, লাইফ কেয়ার নার্সিং হোম, রয়্যাল মাল্টিস্পেশালিটি হসপিটাল, নবাব সিরাজ উদ-দৌলা মানসিক ও মাদকাসক্ত হাসপাতাল, মনমিতা মানসিক হাসপাতাল, প্লাজমা মেডিকেল সার্ভিস অ্যান্ড ক্লিনিক, শেফা হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার, ইসলামিয়া মানসিক হাসপাতাল, ক্রিসেন্ট হসপিটাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক কমপ্লেক্স, মক্কা মদিনা জেনারেল হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক, নিউ ওয়েল কেয়ার হাসপাতাল ও বাংলাদেশ ট্রমা স্পেশালাইজড হাসপাতাল, বিডিএম হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার এবং সেবিকা জেনারেল হাসপাতাল।
লাইসেন্স ছাড়া বা অনুমোদনহীনভাবে পরিচালিত এসব হাসপাতাল ও ক্লিনিক পরিচালনা বন্ধে ‘বিবাদীদের ব্যর্থতা বা নিষ্ক্রিয়তা’ কেন অবৈধ ও আইনগত কর্তৃত্ববহির্ভূত ঘোষণা করা হবে না এবং অবৈধভাবে পরিচালিত এ ১৪ হাসপাতাল পরিচালনার সঙ্গে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে যথাযথ আইনি পদক্ষেপ নিতে কেন নির্দেশ দেয়া হবে না— রুলে তা জানতে চাওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের চেয়ারম্যান, ঢাকার পুলিশ কমিশনার, ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা, র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও মোহাম্মদপুর থানার ওসিকে রুলের জবাব দিতে বলা হয়েছে।