দৌলতপুরে খোদ প্রশাসনিক এলাকায় জটলা, দায় নিচ্ছে না ব্যাংক।
কুষ্টিয়া দৌলতপুরে ব্যাংকে আসা গ্রাহকরা মানছে না সামাজিক দূরত্ব। গা ঘেষাঘেষি করে তারা দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে সারছেন ব্যাংকিং কার্যক্রম। এতে করোনাভাইরাস সংক্রমণের শঙ্কা বাড়লেও ব্যাংক কর্তৃপক্ষ রয়েছে উদাসীন। গ্রাহকদের চাপ সামলাতে ব্যাংক কর্মকর্তারাও হিমশিম খাচ্ছেন।
এমনিতেও সম্প্রতি পে-অর্ডার জালিয়াতি আর অরক্ষিত ফাইল-পত্রের বদনামে গ্রাহকের আস্থা অনেকটাই হারিয়েছে কুষ্টিয়ার দৌলতপুরের সোনালী ব্যাংক শাখা। করোনা ভাইরাস সংক্রমণ শুরু ও অঘোষিত লকডাউনের পর ব্যাংকিং কার্যক্রমে একেবারেই সতর্ক থাকতে দেখা যায়নি এই শাখাটিকে।
রোববার স্থানীয় সাংবাদিক দৈনিক সমকালের দৌলতপুর প্রতিনিধি আহমেদ রাজু’র ফেসবুক স্ট্যাটাসে এদিনের চিত্র উঠে আসলে বিষয়টি সাড়া ফেলে স্থানীয় মিডিয়া মহলে। আহমেদ রাজু তার ফেসবুক স্ট্যাটাসে লিখেন– ‘সোনালী ব্যাংক দৌলতপুর (কুষ্টিয়া) শাখা। সামাজিক ডিসটেন্স বজায় রাখার কোন বালাই নাই। বিষয়টি ভাববার দরকার। ব্যাংক ম্যানেজার বলছেন এগুলো আমাদের দেখার দরকার নেই! প্রশ্ন হলো তাহলে দেখবে কে?’ সাংবাদিক রাজুর পোস্ট করা ছবিগুলোতে দেখা যায় চলতি সময়ের জন্য ভয়াবহ ও হতাশার চিত্র।
প্রতিবেদন লেখার আগে পর্যন্ত মন্তব্য করেন স্থানীয় সাংবাদিক এশিয়ান টেলিভিশনের দৌলতপুর প্রতিনিধি সোহানুর রহমান, তিনি লিখেছেন–‘ বড়ই দুর্ভাগা দৌলতপুর উপজেলাবাসী’।
সম্প্রচার সাংবাদিক তাশরিক সঞ্চয় তার মন্তব্যে লিখেছেন– নিয়মিত চলে। বিষয়টি নিয়ে সংশ্লিষ্ট শাখার কোন মাথাব্যথা নেই!! নূন্যতম প্রস্তুতিও নাই তাদের। এই শাখায় গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্রও অগোছালো অরক্ষিত অবস্থায় পড়ে থাকে। বিষয়টা এই আধুনিক যুগে দুঃখজনক। শাখা ব্যবস্থাপক কতটা উদ্যোগী সেটাও দেখার বিষয়। সমাধান সম্ভব-অসম্ভব পরের কথা,উদ্যোগ তো থাকতে হবে। পাশেই ঈদগাহ মাঠ।’
দৈনিক প্রথম আলোর কুষ্টিয়া জেলা প্রতিনিধি তৌহিদ শেখর লিখেন– ব্যাংক থেকে মাত্র ৫০ গজ দূরে উপজেলার শীর্ষ দুজন সরকারী কর্মচারী সরকারি কক্ষে বসে আছেন। তারা কি করেন?
তবে,স্থানীয় প্রশাসন এর আগে ব্যাংকিং সেবা নিতে সমাগমকারী লোকদের ব্যাংক এলাকা থেকে বেশ কয়েকবার সরিয়ে দিয়েছেন বলেও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে। ব্যাংক কর্তৃপক্ষ এবিষয়ে উদাসীন বলে মন্তব্য করেন স্থানীয় একাধিক সুত্র,এমনকি আগতদের জন্য কোন নিয়ম-কানুন বা সতর্কতার ব্যবস্থাও রাখা হয়নি সেখানে।
এ প্রসঙ্গে সোনালী ব্যাংকের সংশ্লিষ্ট শাখার ব্যবস্থাপক ওবাইদুর রহমান বলেন, ব্যাংকের বাইরে কি হচ্ছে সেটা আমাদের দেখার বিষয় না। আমরা আরও ১৫-২০ দিন আগে লিখিত ভাবে প্রশাসন কে জানিয়েছি বিষয়টি দেখার জন্য।
সোনালী ব্যাংকের এই শাখায় নিয়মিত লোক সমাগম ঝুকিপূর্ণ। সেবা গ্রহীতাদের ভোগান্তিও চরমে বলে মত দেন দৌলতপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন আক্তার।
ব্যাংক শাখা নাকি প্রশাসন! দায়িত্ব যারই হোক,দ্রুত সমাধান চাইছেন শাখা সংশ্লিষ্ট সাধারণ মানুষ। এদিকে, প্রতিদিনই করোনা আক্রান্তের হার উদ্বেগজনক ভাবে বাড়ছে বাংলাদেশে।