ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় ভয়াবহ দুর্ঘটনার রেশ কাটতে না কাটতেই ফের দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে রেলওয়ে। এবার দুর্ঘটনার শিকার হয়েছে রংপুর এক্সপ্রেস। এতে চালকসহ অর্ধশত যাত্রী আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।
ট্রেনটির ইঞ্জিনসহ ও শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বগিসহ মোট নয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়ে যায়। ৩ টি বগিতে আগুন লেগে পুড়ে গেছে বলে জানা গেছে, তবে সম্পূর্ণ ট্রেনের আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আরিফুজ্জামান এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেন।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুর দুইটার দিকে সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া স্টেশন দুর্ঘটনাটি ঘটেছে বলে জানা গেছে। দুর্ঘটনায় পতিত হয়ে রেল লাইনের পাশে লাইনচ্যুত হয়ে পড়ে ট্রেনটির ইঞ্জিন। দুর্ঘটনার পরপর দাউ দাউ করে কয়েকটি বগিতে আগুন জ্বলে যায়। ফায়ার সার্ভিস ও স্থানীয়রা আগুন নেভানোসহ উদ্ধার কাজে অংশ নিয়েছেন। আগুন নিয়ন্ত্রণে এসেছে।
উল্লাপাড়া ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন অফিসার নাজির হোসেন জানান, ঢাকা থেকে রংপুরগামী রংপুর এক্সপ্রেস ট্রেনের ইঞ্জিন লাইনচ্যুত হয়ে অন্য তিনটি বগি ধাক্কা দেয়। এতে ইঞ্জিনে আগুন ধরে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে উদ্ধারকাজ চালায় ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা। এতে সহযোগিতা করেন স্থানীয় জনগণ। দুর্ঘটনার পর ঢাকার সঙ্গে উত্তরবঙ্গের রেল যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে।
খবর পেয়ে দুর্ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন উল্লাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুজ্জামান আরিফ ও উল্লাপাড়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফাসহ রেলওয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা।
রেলপথ মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা শরীফুল ইসলাম বলেন, “রংপুর এক্সপ্রেস আজ (১৪ নভেম্বর) দুপুর ২টা ১০ মিনিটের দিকে উল্লাপাড়া স্টেশন পার হওয়ার সময় তেলের ট্যাংক ফেটে আগুন লেগে যায়।”
“এর ফলে, আন্তঃনগর ট্রেনটির ইঞ্জিন, খাবারের গাড়ি ও এসি কেবিন পুড়ে যায়। একটি এসি চেয়ার কোচ, দুটি পাওয়ার কার ও শোভন চেয়ার লাইনচ্যুত হয়েও দাঁড়িয়ে রয়েছে,” যোগ করেন তিনি।
“রিলিফ ক্রেন ঈশ্বরদী ছেড়েছে সোয়া ৩টার দিকে,” উল্লেখ করে শরীফুল ইসলাম বলেন, “ট্রেন চালু হতে ৩/৪ ঘণ্টা লেগে যেতে পারে।”
এর আগে সোমবার (১২ নভেম্বর) দিবাগত রাত পৌনে ৩টার দিকে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার মন্দবাগ রেলওয়ে স্টেশনে তূর্ণা নিশীথা ও উদয়ন এক্সপ্রেস ট্রেনের সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত এবং শতাধিক আহত হন। দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে রেলপথ মন্ত্রী নূরুল ইসলাম সুজন দুর্ঘটনার জন্য তূর্ণা নিশীথার লোকোমোটিভ মাস্টারকে দায়ী করেন। দুর্ঘটনার পরই তূর্ণার লোকোমোটিভ মাস্টার ও সহকারী মাস্টারকে বরখাস্ত করা হয়।
দুর্ঘটনার ফলে উত্তরাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানীর রেলযোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেছে।