৬ বছর আগে খালাতো বোন সামিয়া শারমিনের সঙ্গে বিয়ে হয় জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের। শারমিন বিয়ের পর থেকেই মোসাদ্দেককে তার পরিবার ছেড়ে আলাদা সংসার করার জন্য চাপ দিতে থাকে। মায়ের প্রতি শ্রদ্ধা অন্যদিকে স্ত্রীর আলাদা হওয়ার চাপ। একপর্যায়ে স্ত্রীকে তালাক দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার।
২০১২ সালে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সাথে তার আপন খালাতো বোন সামিয়া শারমিনের বিয়ে হয়।নির্যাতন ও যৌতুকের অভিযোগে মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেছেন তার স্ত্রী শারমিন।
এ বিষয় নিয়ে গণমাধ্যমকে মোসাদ্দেক বলেন, ‘বিয়ের পর থেকেই ও আমাকে আলাদা সংসার করার জন্য চাপ দিতে থাকে। কিন্তু আমার বাবা নেই, যে মায়ের কারণে আমি আজ ক্রিকেটার। সেই মাকে ছেড়ে কিভাবে আলাদা থাকি? এটা আমার পক্ষে সম্ভব ছিল না। আমি ওকে এটা নিয়ে অনেক বুঝিয়েছি।’
সৈকত আরও বলেন, ‘আমি যখন খেলার কারণে ট্যুরে থাকতাম তখন ও আমার মার সঙ্গে ঝগড়া করত। মাকে একাধিকবার মেরেছে। এসব কারণে আমি গত ১৬ আগস্ট তাকে কোর্টের মাধ্যমে ডিভোর্স দেই।’
স্ত্রীর যৌতুকের অভিযোগ নিয়ে মোসাদ্দেক বলেন, ‘দেখেন ওকে আমি গত ১৬ আগস্ট তালাক দিয়েছি। তার আগে ও কিন্তু আমার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ করেনি। তালাক দেয়ার পর ও নাটক শুরু করেছে। আমার ক্যারিয়ার ধ্বংসের চক্রান্ত করছে। তিনি আরো বলেন, ‘আমি মনে করি যে, এত খারাপ সময় আমার আসেনি যে যৌতুক নিয়ে আমার চলতে হবে। আমি শুনেছি যে ডিভোর্স দিলে নাকি এমন নারী নির্যাতন বা যৌতুকের একটা মামলা করা হয়। তারাও হয়তো তাই করেছে।’
স্ত্রীর কর্মকাণ্ডে হতাশ জাতীয় দলের এই অলরাউন্ডার আক্ষেপ করে বলেন, ‘ছেলে হয়ে জন্মে ভুল করেছি। আজ মেয়েরা যা বলে তাই সত্যি হয়। আমাদের কথা কেউ সত্যি মনে করে না। ’
জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন। ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে যৌতুক নিরোধ আইন ৩ ও ৪ ধারায় অভিযোগ করেন তিনি। এ বিষয়ে সদর উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তাকে তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
সৈকতের স্ত্রীর বড় ভাই মোজাম্মেল কবির জানান, সৈকত আমার খালাতো ভাই। তাদের পারিবারিক অবস্থা এক সময় খুব খারাপ ছিল। সে আমাদের বাসায় আসা-যাওয়া করতো। তখন আমার বোনের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক হয়। আমরা বোনের বিয়ের জন্য পাত্র ঠিক করি, সৈকত তখন অনূর্ধ্ব-১৯ দলের খেলোয়াড়। সৈকত তখন আত্মহত্যার হুমকি দেয়। ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল করে। একসময় আমরা তাদের বিয়ে দেই।
সৈকতের স্ত্রী সামিয়া শারমিন বলেন, সৈকতের দুর্দিনে আমি তার পাশে ছিলাম। তার অর্থ-খ্যাতি হওয়ার পর সে আমার সাথে বাজে ব্যবহার শুরু করে। মানসিক নির্যাতনের পাশাপাশি শারীরিক নির্যাতনও শুরু করে। এপ্রিলে আমি কনসিভ করি। রোজার ঈদের আগে আমার বাচ্চাটা নষ্ট হয়ে যায়। ঈদে সৈকত বাড়ি আসে। আমি তাদের বাসায় ছিলাম। তার মা আমাকে বললো, বাপের বাড়ি চলে যেতে। কারণ আমার সেভাবে যত্ন হচ্ছিল না সেখানে। দু’মাস ধরে আমি বাসায়। তারা আমার সাথে কোনো ধরনের যোগাযোগ করেনি।
১০ লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে নির্যাতন করে তাড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগে বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে রোববার আদালতে মামলা করেন তার স্ত্রী সামিরা শারমীন।
প্রসঙ্গত, ছয় বছর আগে মাত্র ষোল বছর বয়সেই আপন খালাতো বোন সামিরাকে বিয়ে করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।