আল মামুন (২৭) একজন শারীরিক প্রতিবন্ধী। কুষ্টিয়া জেলার ভেড়ামারা উপজেলায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। ১০ বছর বয়সে ঢাকায় আসেন মামুন। শুরু করেন ভিক্ষাবৃত্তি। ১৭ বছর ধরে ঢাকাতে ভিক্ষা করছেন তিনি। ভিক্ষার টাকা দিয়ে দুই বোনের বিয়ে দিয়েছেন। পুরো সংসারের দায়িত্ব তাঁর কাধে। বাকি দুই বোনের বিয়ে দিয়ে নিজেও বিয়ে করবেন।
গতকাল শুক্রবার পবিত্র জুমাতুল বিদার দিনে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমে দেখা হয় আল মামুনের সঙ্গে। তখন তিনি জুমার নামাজ আদায় করছিলেন। তাঁর দুই হাত বেশ চিকন। দুই কবজিই বাঁকা। দুই পা-ও বেশ বাঁকা। সোজা হয়ে দাঁড়াতে কিংবা বসতে পারেন না। সিজদাহ দিতে গেলে সামনে হাতও দিতে পারেন না।
তিনি বলেন, ‘ছোট বেলায় ঢাকায় আইছি। তখন থেকে গুলিস্তানে থাকি। আমার চার বোন। মা আছে, বাবা মইরি গেছে। দুইডা বোনের বিয়ে দিছি। আর দুইডা বোনের বিয়ে দিলি হয়ে যাবে। এক বোনের বর মইরি গেছে। মা রোগা। আরেক বোন থাকে আলাদা সংসারে। আমার সাথে মা আর তিন বোন থাকে। বাকি দুই বোনের বিয়ে হয়ে গিলি আমি বিয়ে করব।’
আল মামুন আরো বলেন, ‘আগে যখন আব্বা বাইচি ছিল তখন আমার মায়ের কষ্ট ছিল না। পাঁচ বছর আগে আব্বা মইরি গেল, আর সব আমার দেখতি হয়। ছোট দুই বোন স্কুলি পড়ে। মা একটা বাসায় কাজ করে। খানিক টেকা পায়। এখন চলতিছে ভালো।’
বায়তুল মোকাররমে আরো কয়েকজন ভিক্ষুকের সঙ্গে কথা হয়। এদের ভেতরে গাজীপুর থেকে এসেছেন অহাব অলী। তিনি প্রতি বছর রোজার সময় ঢাকায় আসেন ভিক্ষা করতে। তিনি বলেন, ‘প্রতি বছর রোজার সময় ঢাকায় আসি। এহানে বইলে লোক অনেক ট্যাকা দেয়। জুমার দিন আরো বেশি দেয়। রোজা শেষ হলে আবার গাজীপুর চইলা যামু।’