কোরিয়ান ভাষা শিখে যথাযথ পরিক্ষার মাধ্যমে উত্তীর্ণ হয়ে শুধুমাত্র বিমান ভাড়া টাকা খরচে ইতিমধ্যেই দক্ষিণ কোরিয়া গমন করে কুষ্টিয়া মিরপুরের অর্ধশতাধিক তরুণ অভাবণীয়ভাবে নিজেদের ভাগ্য বদলের পাশাপাশি মিরপুরের অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছে।
ভাগ্য বদলানো তরুণরা হলোঃ উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের ধুবইল গ্রামের রুবায়েত (৩৭), সুজন (৩৫), মিরপুর পৌরসভা এলাকার আরিফুল হক রানা (২৭), মহাম্মদ ছোটন (২৯), রাশেদ খাঁন মিলন (৩২), আমিরুল ইসলাম (৩৪), ইসমাইল হোসেন (৩৭), রয়েল (৩৪), বোরহান (৩৮), ইউসুফ (৩৮) ও ছাতিয়ান ইউনিয়নের মাধবপুর গ্রামের আজিম (৩৪), নাদিম (৩৫) ও ইকবাল (৩৪), গোপালপুরের তরিকুল,ধুবইলের মাহবুব, মিরপুরের রাসেল, ফুলবাড়ীয়ার রবিউল,জুয়েল,সিংপুরের জিল্লুর।
এছাড়াও উপজেলার নাম না জানা তরুণ দক্ষিণ কোরিয়া যাবার অপেক্ষায় রয়েছে।
জানা যায়, ২০০৮ সালে উপজেলার ধুবইল ইউনিয়নের ধুবইল গ্রামের আমজাদ আলীর ছেলে রুবায়েত ঢাকা থেকে কোরিয়াণ ভাষা শিখে মিরপুর থানার সামনে শনিবার হাট এলাকায় কোরিয়ান ভাষা শিক্ষার কোচিং সেন্টার স্থাপন করেন। অত্র এলাকার হতাশা পিড়িত কয়েকজন বেকার তরুণ ওই কেন্দ্রে ছাত্র হিসেবে ভর্তি হন। ছাত্রদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য আরিফুল হক রানা, কাজী জুবায়ের হোসেন ও জনি। তাঁরা কোরিয়ান ভাষা শিখেও ভাগ্য বদল করতে না পারায় তাদের মধ্যে এক সময় চরম হতাশা দেখা দেয়।
এরই মধ্যে ২০১২ সালে ওই কোচিং সেন্টারের শিক্ষক রুবায়েত হোসেন কোরিয়ান ওয়েব সাইটের মাধ্যমে আবেদন করে লটারীর মাধ্যমে অনলাইনে ভাষা পরীক্ষায় অংশ গ্রহনের সুবর্ণ সুযোগ পায়। পরীক্ষায় রুবায়েত কৃতিত্বের সাথে উত্তীর্ণ হয়ে দক্ষিণ কোরিয়া যাবার সুযোগ পায়। সাফল্যের সেই শুরু। রুবায়েত দক্ষিণ কোরিয়া যাবার পর কোচিং সেন্টারের দায়িত্ব বর্তায় আরিফুল হক রানা’র উপর। রানাও একই বছর দক্ষিণ কোরিয়া যাবার সুযোগ পায়। রানা দক্ষিণ কোরিয়া যাবার পর কাজী জুবায়ের হোসেন ও জনি‘র উপর কোচিং সেন্টারের প্রশিক্ষকের দায়িত্ব বর্তায়। বর্তমানে জুবায়ের ও জনি মিরপুর পৌর বাজারের সিরাজ চৌধুরী মার্কেটের ২য় তলায় ‘সিডি মিডিয়া লিমিটেড’ নামে কোরিয়া ভাষা প্রশিক্ষণ সেন্টার গড়ে তুলে এলাকার তরুণদের কোরিয়া ভাষা শেখার প্রতি উদ্বুদ্ধ করে চলেছেন।
২০১২ সাল থেকে ২০১৪ সাল ওই ২ বছরে মিরপুর উপজেলা থেকে উল্লেখিত তরুণরা উচ্চ শিক্ষিত না হয়েও শুধুমাত্র কোরিয়ান ভাষা শিখে অনলাইনে ভাষা পরীক্ষায় অংশ নিয়ে কৃতিত্বের সাথে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে সুনামের দায়িত্ব পালন করছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় তারা বাংলাদেশী টাকায় সর্বনিম্ন ২ লক্ষ টাকা মাসিক বেতন পায়। একই সাথে তারা এখন দক্ষিণ কোরিয়া প্রবাসী হিসাবে আত্মমর্যাদার সাথে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করছেন। দক্ষিণ কোরিয়ায় কর্মরত তরুণদের পরিবার গাড়ী বাড়ীর মালিক হবার পাশাপাশি আশাতিত আর্থিক মুক্তি লাভ করেছে।