ছবিতে এক পা বিহীন এই যুবকটির নাম ইব্রাহীম (২২)। সে কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার আমলা ইউনিয়নের অঞ্জনগাছী গ্রামের দোয়ানী পাড়ার হতদরিদ্র দিনমজুর তোফাজ্জেল মণ্ডলের ছেলে।
যুবক ইব্রাহীম সংসারে আর্থিক স্বচ্ছলতা আনতে ২০১৮ সালের শুরুতে ইব্রাহীম এলাকার সুদী মহাজনদের কাছ থেকে চড়াসুদে ৪ লক্ষ টাকা ও বাড়ীর আবাদের ২ বিঘা জমি বন্ধক রেখে ৫ লক্ষাধিক টাকা খরচ করে কন্সট্রাকসন ভিসায় সৌদি আরব যায়। সেখানে আল মোনার নামের এক কোম্পানীতে কন্সট্রাকশনের কাজ পায়। ওখানে ৬ মাস কর্মকালীন সময়ে ২ মাসের বেতন পায় ইব্রাহীম। এরই মধ্যে ওই মালিকের কন্সট্রাকসন সাইডে কাজ করে মালিকের ট্রাকে চড়ে বাসায় দুপুরের খাবার খেতে আসার পথে ট্রাকটি সড়ক দুর্ঘটনায় পতিত হয়। সড়ক দুর্ঘটনায় ওই ট্রাকে থাকা চাপাই নবাবগঞ্জে এক প্রবাসী বাংলাদশী নিহত হয় ও ইব্রাহীমসহ আরো কয়েকজন গুরত্বর আহত হয়।
পরে সড়ক দুর্ঘটনায় পায়ে গুরুত্বর আঘাত প্রাপ্ত ইব্রাহীমকে সঙ্গাহীন অবস্থায় সৌদির রাজধানী রিয়াদের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে উন্নত চিকিৎসার ব্যবস্থা না করে তার ডান পাটি কেটে ফেলার প্রস্তাব দেয় ওই হাসপাতালের চিকিৎসক। আপত্তি জানায় ইব্রাহীব। এক পর্যায়ে বিনা চিকিৎসায় অবর্ণনীয় কষ্ট সইতে না পেরে নিরুপায় ইব্রাহীম চিকিৎসকের পা কেটে ফেলার সিদ্ধান্তে রাজী হয়। পরে তাকে সৌদিস্থ বাংলাদেশ দুতাবাসের সাথে কোনরুপ যোগাযোগ করার সুযোগ না দিয়ে ও ক্ষতিপুরনের ব্যবস্থা না করে মাত্র ৩ শ রিয়াল দিয়ে বিমানের টিকেট কেটে দেশে পাঠিয়ে দেয়া হয়।
দেশে একাধিক সুদী মহাজনের কাছ থেকে নেয়া ৪ লক্ষ টাকা কিভাবে ফেরত দেবে সে চিন্তায় রীতিমত দিশেহারা ইব্রাহীম ও তার পরিবার।
ইব্রাহীমের সাথে আলাপকালে সে জানায়,সরকারী/বেসরকারী কোন প্রতিষ্ঠান অথবা ব্যাক্তি যদি তার এই চরম অসহায় মুহুর্তে নিজ এলাকায় একটি ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করার জন্য সহায়তা করতো তাহলে সেই ব্যবসায়ের মুনাফার অর্থদিয়ে অল্প অল্প করে হলেও ঋন পরিশোধ করত।