পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের চাঁদপাই রেঞ্জের ফুয়েল জেটির রেষ্টহাউজ ও জেটিতে থাকা “বাঘ রক্ষী-১” নামক বনবিভাগের নিজস্ব লঞ্চে দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা দেহ ব্যবসার ঘটনা ফাঁস হয়ে পড়েছে। এর সাথে বনবিভাগের কিছু কর্মচারী জড়িত থাকায় এ ঘটনা ধামাচাপা দিতে অপচেষ্টা চালাচ্ছেন স্থানীয় বন কর্মকর্তারা। কর্মচারীদের চাকরি বাঁচাতে দায়সারা তদন্ত করছেন বলেও তাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের একজন বিএম (বোটম্যান) জানান, “বাঘ রক্ষী-১” নামক বনবিভাগের নিজস্ব লঞ্চে রবিবার ওই লঞ্চেরই লস্কর মো. চাঁন মিয়া চান্দু, বিভাগীয় বন কর্মকর্তার (ডিএফও) স্পীড বোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি, ফুয়েল জেটি রেষ্ট হাউজের অফিস সহকারী আনোয়ার হোসেন, আরেক বোটের ড্রাইভার আবু ইউসুফ তপু খুলনার পাইকগাছা উপজেলার মাজেদ সরদারের মেয়ে বৃষ্টির (২৫) সাথে আপত্তিজনক অবস্থায় হাতেনাতে ধরা পড়েন। এরপর বিষয়টি চারিদিকে জানাজানি হয়ে যায়।
বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর পূর্ব সুন্দরবনের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. মাহমুদুল হাসানের নির্দেশে চাঁদপাই রেঞ্জের সহকারী বন সংরক্ষক (এসিএফ) মো. শাহিন কবির সোমবার বিকেলে সরেজমিন তদন্ত করেন।
এ বিষয়ে শাহিন কবির বলেন, তদন্ত প্রতিবেদন বিভাগীয় বন কর্মকর্তার কাছে দাখিলের পর তিনিই পরবর্তীতে আইনগত ব্যবস্থা নিবেন। তবে এ বিষয়ে চাঁদপাই রেঞ্জের ষ্টেশন কর্মকর্তা মো. কামরুল ইসলাম বলেন, আপত্তিকর ও লজ্জাজনক এ ঘটনার সাথে পুরো বনবিভাগের মান সম্মান জড়িত, আমরা অফিসিয়ালভাবে ব্যবস্থা নিচ্ছি।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত বদি, আনোয়ার, চান্দু ও তপু বলেন, বৃষ্টি আমাদের দুঃসম্পর্কের বোন হয়। সে সুন্দরবন দেখার উদ্দেশ্যে খুলনা থেকে আমাদের কাছে বেড়াতে এসেছে, এর চেয়ে বেশি কিছু না।
এছাড়াও এর আগে বিভাগীয় বনকর্মকর্তার (ডিএফও) স্পীড বোট ড্রাইভার মনিরুজ্জামান বদি ও আনোয়ারের ফুয়েল জেটির রেষ্ট হাউজের বাসভবন থেকে বানিশান্তা পতিতাপল্লীর যৌন কর্মী রুমা (২০), জাহানারা (৩৫) ও তানিয়া (২২) কে হাতেনাতে আটক করেন স্থানীয় লোকজন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেষ্টহাউজের পাশ্ববর্তী মসজিদ কমিটির এক সদস্য বলেন, দীর্ঘদিন ধরে ফরেষ্টার বদি, আনোয়ার, সিরাজ, তপু ও চান্দু পার্শ¦বর্তী পশুর নদীর পাড়ের বানিশান্তা পতিতাপল্লীর যৌন কর্মীদের দিয়ে রেষ্টহাউজ ও লঞ্চে দেহ ব্যবসা করে যাচ্ছেন। তবে বিভিন্ন সময় বিষয়টি বনবিভাগের উর্ধতন কর্মকর্তাদের জানালেও তাদের কোনদিন ব্যবস্থা নিতে দেখিনি।
এ ব্যাপারে ডিএফও মো. মাহমুদুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমি জেনেছি এবং এসিএফ শাহিন কবিরকে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছি। তার তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পেলেই আমি ব্যবস্থা নিবো।