দেশের সব মোবাইল ফোন অপারেটরে কথা বলার জন্য প্রতি মিনিট কলচার্জ ১০ পয়সা করার দাবি জানিয়েছে সিটিজেনস রাইটস মুভমেন্ট।
শনিবার (১৮ আগস্ট) বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশন মিলনায়তনে সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
সম্প্রতি সব মোবাইলের জন্য প্রতি মিনিট সর্বোচ্চ ২ টাকা এবং সর্বনিম্ন ৪৫ পয়সা ট্যারিফ নির্ধারণ করে বিটিআরসি।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সিটিজেন রাইটস মুভমেন্টের মহাসচিব তুষার রেহমান। বিটিআরসির সাবেক চেয়ারম্যান সৈয়দ মার্গুব মোর্শেদও এতে উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে তুষার রেহমান বলেন, কলরেট বিষয়ে বিটিআরসির ভাষ্য শুনলে মনে হয়, তারা মোবাইল ফোন কোম্পানিগুলোর মুনাফা বাণিজ্যের অংশীদার ছাড়া আর কিছু নয়। কখনো কলরেট বাড়িয়ে, কখনো নানা প্যাকেজের ফাঁদে, কখনো বা ভিওআইপি ব্যবসার ফাঁকে মোবাইল ফোন অপারেটররা বিদেশে প্রায় ৫ লাখ কোটি টাকা পাচার করেছে।
সংবাদ সম্মেলনে কলচার্জ কমানোসহ ১১ দফা দাবি উপস্থাপন করা হয়। মোবাইল ফোনের কলচার্জ বিষয়ক গবেষণার জন্য বিটিআরসি একসময় যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক প্রাইস ওয়াটার হাউস কুপার্সকে দায়িত্ব দিয়েছিল।
তবে হাউজ কুপার্সের সঠিক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়নি জানিয়ে মার্গুব মোর্শেদ বলেন, আমাদের দেশের ন্যাশনাল অডিট হাউজই এ কাজ করতে পারবে। তারাই বের করতে পারবে কত টাকা ইনভেস্টমেন্ট হয়েছে, আর কত টাকা দেশ থেকে বেরিয়ে গেছে। হাউজ কুপার্সের দরকার নেই বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এ দিকে মোবাইল ফোনের অযৌক্তিক কলরেট বাতিলের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশন। শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে সংগঠনের পক্ষ থেকে এ দাবি জানানো হয়।
মানববন্ধনে সংগঠনের সভাপতি মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘বিটিআরসি গ্রাহকদের স্বার্থ বিবেচনায় না নিয়ে শুধু অপারেটরদের স্বার্থ বিবেচনা করে কলরেট ২৫ পয়সা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ পয়সা নির্ধারণ করেছে। এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাস্তবায়ন করার আগে গ্রাহকদের মতামত নেয়া উচিত ছিল। তাদের নেয়া সিদ্ধান্ত গ্রাহককে মানতে বাধ্য করা একটি অগণতান্ত্রিক ও অনৈতিক সিদ্ধান্ত।’
মানববন্ধনে সিপিবির সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, ‘শুধু অপারেটরদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে লোকচক্ষুর অন্তরালে এই মূল্যবৃদ্ধি মেনে নেয়া যায় না। অতিদ্রুত মূল্যবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত বাতিল করে জনগণের কাছ থেকে নেয়া অতিরিক্ত অর্থ জনগণকে ফেরত দেয়ার দাবি জানান তিনি।’
বাসদের কেন্দ্রীয় নেতা রাজেকুজ্জামান রতন বলেন, ‘নতুন এই কলরেটের ফলে গ্রাহকের পকেট থেকে বছরে ছয় হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত আদায় করা হবে। তাই মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের দাবির প্রতি সংহতি জানিয়ে সরকারকে দ্রুত নতুন কলরেট বাতিল করতে হবে।’
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি মোবাইল ফোন গ্রাহক অ্যাসোসিয়েশনের দাবির সঙ্গে সংহতি প্রকাশ করেন।
মানববন্ধনে আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক এমপি হুমায়ুন কবির, ন্যাশনাল কংগ্রেস বাংলাদেশের চেয়ারম্যান কাজী ছাবের আহমেদ ছাব্বীর, দুর্নীতি প্রতিরোধ আন্দোলনের সভাপতি হারুন অর রশিদ খান প্রমুখ।