বাংলাদেশ জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় নিয়োগ পেয়েছেন কুষ্টিয়া খোকসার সন্তান সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
এ বিষয়ে আইন মন্ত্রণালয় প্রজ্ঞাপন জারি করেছে। এই নিয়োগ প্রজ্ঞাপন জারির দিন থেকে কার্যকর হবে। বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী বর্তমানে আপিল বিভাগে সিনিয়র জজ হিসেবে কর্মরত আছেন।
গত রোববার (০৩ মে) আইন সচিব মো. গোলাম সারওয়ার স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশন বিধিমালা ২০০৭ এর বিধি ৩(২) (ক) ও ৩(৪) মোতাবেক সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীকে জুডিশিয়াল সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান হিসেবে পুনরায় নিয়োগ দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।
হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী দেশের শীর্ষ আদালতে ৯০ এর দশকের এক অনন্য ডাকসাইটে আইনজীবী। তিনি আইনজীবিদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন যার হাতে ছিল মামলার দীর্ঘ তালিকা। তিনি ২০ বছর ক্যারিয়ার আইন অনুশীলন করেন। এই সময়ে তিনি অত্যন্ত নিরপেক্ষতার সাথে নানা ধরনের মামলা পরিচালনা করেন। আইনের পক্ষে সত্য ও ন্যায়কে প্রতিষ্ঠা করতে ভূমিকা পালন করেন।
হাসান ফয়েজের আইনজীবী জীবনের অধ্যায়টি শেষ হয় ২০০১ সালে যখন তিনি আওয়ামী লীগ সরকার তাকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে অতিরিক্ত বিচারক হিসাবে নিয়োগ দেন। তারপরে ২০০৯ সালে তিনি স্থায়ী বিচারক হিসাবে নিযুক্ত হন। ২০১৩ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগে নিয়োগ পান।
বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী ১৯৫৬ সালে কুষ্টিয়ার খোকসা উপজেলার রমানাথপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার নয় ভাইবোনের মধ্যে তিনি চতুর্থ। তার শৈশব কেটেছে গড়াই নদীর তীর ঘেঁষা প্রত্যন্ত গ্রামে।
তিনি গ্রামের আজইল সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা শেষ করেন। প্রাথমিক সমাপনের পরে তিনি খোকসা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৭২ সালে তিনি খোকসা-জানিপুর পাইলট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাস করেন।
এর পর তিনি সাতক্ষীরার আচার্য্য প্রফুল্ল কলেজে ভর্তি হন। ১৯৭৪ সালে তিনি এই কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করেন। তিনি সাতক্ষীরা কলেজে ভর্তি হন এবং ১৯৭৬ সালে স্নাতক পাস করেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হন। সেখান থেকে তিনি ১৯৭৮ সালে এমএ করেন।
তারপরে তিনি ধানমন্ডি ল কলেজে এলএলবিতে ভর্তি হন এবং ১৯৭৯ সালে আইন ডিগ্রি গ্রহণ করেন। সফলভাবে পড়াশোনা শেষ করার পরে তিনি পেশাদার আইনজীবী হিসাবে তার ক্যারিয়ার গড়ার সিদ্ধান্ত নেন।
১৯৮১ সালে তিনি ঢাকা বারে যোগদান করেন এবং ১৯৮৩ সালে বাংলাদেশ সুপ্রীম কোর্টে আইনজীবী তালিকাভুক্ত হন।
তিনি বাংলাদেশের অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল হিসাবেও কাজ করেছেন। এছাড়া তিনি দেশে বিদেশে বিচারকদের বিভিন্ন সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন।