শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িত থাকার অভিযোগে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষককে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। একি সঙ্গে নিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনায় গঠিত বোর্ডও স্থগিত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়য়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার এস আব্দুল লতিফ বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
শুক্রবার (২৮ জুন) রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত পৃথক দুটি অফিস আদেশে এই বহিষ্কারাদেশ দেওয়া হয়। বহিষ্কৃত শিক্ষকগণ হলেন- ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহা. রুহুল আমীন এবং ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহিম।
বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয় যে, ২৯-০৬-২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক পদের নিয়োগ নির্বাচনি বোর্ডের একজন আবেদনকারীকে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহিম-এর আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের বিষয়টি পত্র-পত্রিকা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত অডিওতে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথনের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৩ (সি) ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বিধায় ইলেকট্রিক্যাল অ্যান্ড ইলেক্ট্রনিক ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের সহকারী অধ্যাপক এস এম আব্দুর রহিম-
অপর এক অফিস আদেশে উল্লেখ করা হয় যে, ২৯-০৬-২০১৯ তারিখে অনুষ্ঠিতব্য ফিন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের প্রভাষক পদের নিয়োগ নির্বাচনি বোর্ডের একজন আবেদনকারীকে অর্থের বিনিময়ে চাকরি পাইয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহা. রুহুল আমীনের আর্থিক লেনদেনের অডিও ফাঁসের বিষয়টি পত্র-পত্রিকা সহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হয় যা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর হয়েছে। উক্ত অডিওতে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত কথোপকথনের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়। যা ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্মচারী দক্ষতা ও শৃঙ্খলা বিধির ৩ (সি) ধারার অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বিধায় ফাইন্যান্স অ্যান্ড ব্যাংকিং বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহা. রুহুল আমীনকে কে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হল। বরখাস্ত থাকা কালীন তিনি জীবন ধারণ ভাতা পাবেন।
উল্লেখ্য, ড. মো. রুহুল আমিন ইতোপূর্বে এ ধরনের অপরাধ সংগঠিত করেন এবং বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কর্তৃক সাজা প্রাপ্ত হন।
আরও জানা যায়, ২০১৭ সালের ২ এপ্রিল সাময়িক বরখাস্ত হওয়া শিক্ষক রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। পরবর্তীতে নিয়োগ বাণিজ্যের বিষয়টি প্রমাণিত হওয়ায় সিন্ডিকেট তাকে শাস্তি (৫টি ইনক্রিমেন্ট বন্ধ ও ৫ বছর কোনো প্রশাসনিক কাজে অংশ নিতে পারবেন না) দেয়।
জানা যায়, শুক্রবার (২৮ জুন) একটি জাতীয় দৈনিকে দুই শিক্ষকের নিয়োগ বাণিজ্যের অডিও ফাঁসের খবর প্রকাশিত হয়। প্রকাশিত সংবাদে শিক্ষক রুহুল আমিন এবং আব্দুর রহিমের সঙ্গে ফিন্যান্স বিভাগের শিক্ষক নিয়োগ প্রার্থী আরিফের আট মিনিট পঁয়ত্রিশ সেকেন্ডের কথোপকথন হয়।
কথোপকথনে প্রভাষক নিয়োগে ১৮ লাখ টাকার চুক্তি হয়। এর মধ্যে নিয়োগ নির্বাচনি বোর্ডের সভা হওয়ার আগে ১০ লাখ টাকা দেওয়ার কথা বলা হয়। আর বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী সভা সিন্ডিকেটে চূড়ান্তভাবে নিয়োগ পেলে বাকি ৮ লাখ টাকা পরিশোধ করতে হবে। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় প্রশাসন দুই শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত এবং নিয়োগ বোর্ড স্থগিত করেন।
এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. রাশিদ আসকারী বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দুর্নীতি ও আর্থিক অনিয়মের বিরুদ্ধে সর্বোচ্চ কঠোর অবস্থানে আছে। বিষয়টি প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাদের দুইজনকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। তদন্ত কমিটির রিপোর্টের ভিত্তিতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে চূড়ান্ত ব্যবস্থা গৃহীত হবে। আমরা এমন একটি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করতে চাই যেনো ভবিষ্যতে আর কেউ এই ধরনের কর্মকাণ্ডের ধৃষ্টতা না দেখান।’