সম্প্রতি সারাদেশে শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক এর দাবিতে চলমান আন্দোলনের দাবি বাস্তবায়নে সরকার ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে বিভিন্ন পদক্ষেপ এর ঘোষনা দেওয়া হয়। নিরাপদ সড়ক প্রতিটি মানুষের চাওয়া। আমাদের মহাসড়ক গুলো এতটা ভয়ংকর হয়ে পড়েছে যে, প্রতিদিন কোন কোন জায়গায় ঘটছে দুর্ঘটনা। সড়কে ঝরে যাচ্ছে তাজা টগবগে প্রান যা কোন ভাবেই মানা সম্ভব নয়।
সড়ক দুর্ঘটনায় শুধু সাধারন মানুষ মরছে তা নয় পুলিশ প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তাসহ বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্নপদে থাকা মানুষও মারা যাচ্ছে। দেখা যায় বিশেষ কিছু ঘটনায় প্রশাসন ও সরকার নড়ে চড়ে বসলেও তা যথেষ্ট নয়। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে বিভিন্ন সময়ে দিক নির্দেশনা দিলে প্রশাসন তাদের চির চেনা অভিযান শুরু করে।
সম্প্রতি কুষ্টিয়ায় দেখা যাচ্ছে নিরাপদ সড়ক বাস্তবায়নে প্রশাসনের কঠোর নজর দারি। জেলা প্রশাসন ম্যাজিষ্ট্রেট বসিয়ে বিআরটিএ কর্তৃপক্ষকে দিয়ে অভিযান করছে অপর দিকে পুলিশ প্রশাসন ট্রাফিক পুলিশ, থানা ও ফাঁড়ির অফিসারদের দিয়ে ফিটনেস বিহিন গাড়ীর বিরুদ্ধে অভিযান পরিচালনা করছে যা কুষ্টিয়াবাসীর চোখে পড়েছে। প্রশাসনের এই অভিযানে সাধারন মানুষ কিছুটা সন্তোষ প্রকাশ করলেও, এই সকল অভিযান পরিচালনাকারীদের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই।
সাধারন মানুষ অভিযোগ করে বলেন, কুষ্টিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ রাস্তায় মোড়ে মোড়ে তাদের টহল টিম বসিয়ে ফিটনেস বিহিন গাড়ীর কাগজ পত্র পরিক্ষা করছে এর সাথে রয়েছে চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স এর তদারকি। সাধারন মানুষের প্রশ্ন অভিযানের নামে কোন গাড়ীর কাগজ দেখছেন তারা, এ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় যে অভিযান গুলো হচ্ছে তার অধিকাংশ মোটর বাইকের বিরুদ্ধে এবং চালকের ড্রাইভিং লাইসেন্স আছে কিনা দেখা হচ্ছে, এতে কারও কোন অভিযোগ বা অনুরাগ নেই। কিন্তু অভিযোগ রয়েছে অভিযানের বিরুদ্ধে, এ পর্যন্ত কুষ্টিয়ায় কতটি ফিটনেস বিহিন গাড়ীর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করা হয়েছে কয়জন পরিবহন চালকের লাইসেন্স দেখা হয়েছে এবং মামলা দেওয়া হয়েছে।
সাধারন মানুষের অভিযোগ নিরাপদ সড়ক এর দাবি বাস্তবায়নে মোটর বাইকের উপর অভিযান যথেষ্ট কি-না। সড়ক দুর্ঘটনায় মোটর বাইক কতটা দোষী, এখন অভিযান দেখে বোঝা যাচ্ছে সড়কে দুর্ঘটনার জন্য শুধু মোটর বাইক দায়ি।
কুষ্টিয়ার সচেতন মহলের প্রশ্ন, মজমপুর গেট দিয়ে ভোর থেকে শুরু করে নসিমন, করিমন, ট্রলি, ভটভটি, ইজিবাইক, সিএনজি গভীর রাত পর্যন্ত চলাচল করে এদের ফিটনেস আছে কি-না? এদের চালকের লাইসেন্স লাগবে কি-না? এই প্রশ্নের উত্তর আছে কি কর্তৃপক্ষের কাছে। এগুলো কিভাবে রাস্তায় চলাচল করে তা সব মহলের কম বেশি জানা, উচ্চ পর্যায় থেকে বার বার বললেও তাদের বিরুদ্ধে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয়না এর কারনও সাধারন মানুষের জানা আছে। সাধারন মানুষের প্রশাসন এর কর্তা ব্যক্তিদের কাছে দাবি একটায় কি হয়েছে অতিতে তা ভুলে গিয়ে এই গুলো বন্ধে ব্যবস্থা নিন।
জেলা প্রশাসন ও পুুলিশ প্রশাসনের কাছে একটি দাবি, অতিদ্রুত এই সকল অবৈধ যানবাহন তৈরি করতে গড়ে ওঠা ওয়ার্কশপ গুলোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুন। কুষ্টিয়ার শহর ঘেসে ত্রি-মোহনী এলাকায় আধুনিক মানের ড্রাম ট্রলি তৈরি হচ্ছে, ভাদালিয়া বাজারে শতাধিক ওয়ার্কশপ রয়েছে যেখানে দিনে শত শত নসিমন করিমন তৈরি হচ্ছে। এখানেই শেষ নয় এই সকল ওয়ার্কশপ মালিকদের দেশের বিভিন্ন জেলায় নসিমন করিমন এর শো-রুম রয়েছে।
সরেজমিনে তদন্তে দেখা গেছে, এই ওয়ার্কশপ মালিকেরা তাদের সমিতির মাধ্যমে মহাসড়ক এর নিয়ন্ত্রন কর্তাদের উৎকোচ দিয়ে ম্যানেজ রেখেছেন যে কারনে কোন ফিটনেস লাইসেন্স দরকার নেই, নেই চালকের লাইসেন্স কিংবা বয়স সিমা।
অভিযোগ নয়, প্রশাসনের কাছে সকল মহলের অনুরোধ চলাচল কারী সকল অবৈধ যানবাহনসহ তাদের তৈরি বন্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করুন।