কুষ্টিয়া দৌলতপুর আদাবাড়িয়া গ্রামের ডাঃ ফজলু বাগোয়ান গার্লস ডিগ্রী কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রীকে হোসেন মালিথা(২৮) নামে এক যুবক জোরপূর্বক অপহরণ করে ধর্ষণ করে। অতঃপর ধর্ষণের ঘটনা ধামাচাপা দিতে ও মামলা থেকে রেহাই পেতে তড়িঘড়ি করে ওই কলেজ ছাত্রীকে বিয়ে করে। বিয়ে করলেও ওই কলেজ ছাত্রীকে স্ত্রীর মর্যাদা দিচ্ছেনা বলে অভিযোগ করেন ওই কলেজ ছাত্রী।
কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবার জানায়, গত ৯ই নভেম্বর ডাঃ ফজলু বাগোয়ান গার্লস ডিগ্রী কলেজের সামনে বেলা ১ টার সময় বাড়ি যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাসের অপেক্ষায় দাড়িয়ে থাকেন। এ সময় দৌলতপুর উপজেলার বিলগাথুয়া গ্রামের খলিল মালিথার ছেলে হোসেন মালিথা তার দুলাভাই হিটু সহ ৩ জন দুইটি মোটর সাইকেলযোগে এসে ওই কলেজ ছাত্রীর মুখ চেপে ধরে গরুড়া ডিজিটি স্কুলের পাশে একটি বাড়িতে আটকে রাখে। এ সময় রাতভর পাশবিক নির্যাতন চালায় হোসেন মালিথা।
পরেরদিন সকালে ওই কলেজ ছাত্রীর বড় বোনকে মোবাইল ফোনে হোসেনের দুলাভাই হিটু জানায়, তোমার বোনকে নিতে ডাংমর্কা স্কুল ফিল্ডের কাছে আসতে বলেন। এরপর ওই কলেজ ছাত্রীর বড় বোন উল্লেখিত জায়গা এসে দেখতে পাই হোসেন মোটর সাইকেল থেকে তার বোনকে ফেলে দিচ্ছে। ওই কলেজ ছাত্রীর বড় বোন হোসেনকে ধরে আত্মচিৎকার করে। স্থানীয় জনতা ছুটে এসে হোসেনকে ধরতে গেলে সে মোটর সাইকেল ফেলে রেখে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে স্থানীয়রা তাকে ধরে পাশের একটি বাড়িতে আটকে রাখে। সুচতুর হোসেন মালিথা ঘর থেকে পালিয়ে যায়।
এ সময় মথুরা পুলিশ ক্যাম্পের পুলিশ এসে মোটর সাইকেলটি জব্দ করে ক্যাম্পে নিয়ে যায়। স্থানীয়দের সহযোগিতায় ওই কলেজ ছাত্রীর বড় বোন তাকে দৌলতপুর স্বাস্থ্য কম্পেলেক্সে ভর্তি করে। পরবর্তীতে অবস্থার অবনতি হলে ওই কলেজ ছাত্রীকে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের ৮ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করে। এখানে ওই ছাত্রী ১০-১২ তারিখ পর্যন্ত চিকিৎসা গ্রহণ করেন। সে সময় তার শারীরিক পরীক্ষা করা হয়। তার চিকিৎসা ছাড়পত্রে সেক্সুয়াল এসাল্ট লেখা থাকে।
ওই কলেজ ছাত্রীর বাবা মেয়েকে নিজ বাড়িতে নিয়ে গেলে হোসেন মালিথা মামলা থেকে বাঁচতে গত ১৩ই নভেম্বর তড়িঘড়ি করে হিটু, সেন্টু মাষ্টার, শামীম, আল্লারদর্গার মান্নানসহ স্থানীয় লোকজনের উপস্থিতে ৪ লক্ষ টাকা দেনমোহর ধার্য করে ইসলামী শরিয়াহ মোতাবেক বিয়ে করে। সেখান থেকে ওই কলেজ ছাত্রীকে হোসেন মালিথা নিজ বাড়িতে নিয়ে যায়। পরেরদিন সকালে মোটর সাইকেল যোগে তার বাবার বাড়িতে রেখে হোসেন মালিথা। এরপর হোসেন মালিথা ও তার লোকজন কোন যোগাযোগ করেনা বলে ওই কলেজ ছাত্রীর বাবা জানায়।
কলেজ ছাত্রীর বাবা বিচারের আশায় দ্বারে দ্বারে ঘুরছে সুবিচারের আশায়। এ ব্যাপারে অভিযুক্ত হোসেন মালিথার সাথে মুঠোফোনে কথা বললে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমার সাথে দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল ওই মেয়ের। আমি তাকে ঘুরতে নিয়েগিয়েছিলাম। তাকে বিয়ে করেছি। এটা আমাদের পারিবারিক ব্যাপার।
হোসেন মালিথার দুলাভাই হিটুর মুঠোফোনে কল দিলে তিনি জানান, হোসেনের সাথে ওই মেয়ের সম্পর্ক ছিল। আমার জানা মতে তাদের বিয়ে হয়েছে। কোথায় বিয়ে হয়েছে কত টাকা দেনমোহর এইটা আমার জানা নেই। ওই কলেজ ছাত্রী ও তার পরিবার সু-বিচারের আশায় কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের আশু হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।