কোন তোয়াক্কাই করছেন না ইটভাটার মালিকরা
কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার বিভিন্ন ইটভাটাগুলোতে চলছে জ্বালানী কাঠপোড়ানোর মহোউৎসব। সরকারি ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রন আইন উপেক্ষা করে উপজেলার প্রায়ই ৩০টি ইটভাটায় দেদারসে পুড়ছে কয়লার পরিবর্তে কাঠের গুড়ি।
উপজেলার বিভিন্ন ব্যক্তি মালিকাধীন বনাঞ্চল থেকে গাছ কিনে অসাধু ভাটা মালিকরা কাঠের ব্যবহার করছে বলে সরেজমিনে ঘুরে লক্ষ্য করা গেছে। এর ফলে ইটভাটা গুলো থেকে নির্গত কালো ধোঁয়ায় দূষিত হয়ে পড়ছে চারপাশের পরিবেশ। এতে একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বনাঞ্চল অপরদিকে পরিবেশ হচ্ছে রীতিমত দূষিত।
দৌলতপুর উপজেলার মানিকদিয়াড়, রিফায়েতপুর, চকদৌলতপুর, স্বরুপপুর, প্রাগপুর এলাকার ভাটায় গাছের গুড়ির পড়ে থাকতে দেখা গেছে।
উল্লেখ্য উপজেলা সদরে মানিকদিয়াড় এলাকায় একটি গ্রামেই গড়ে উঠেছে ছোট-বড় (০৮)আটটি ইটভাটা। ইটভাটার চুল্লিগুলিতে ১২০ ফুট উচু চিমনির পরিবর্তে মাত্র ৫ থেকে ৩০ ফুট উচু ড্রামের চিমনী ব্যবহার আর চুল্লিতে প্রকাশ্যে পোড়ানো হচ্ছে বনাঞ্চলের কাঠ।
দৌলতপুর উপজেলার সদরে স্বরুপপুর, মানিকদিয়াড় এলাকার ভাটার কাঠ পোড়ানো হলেও প্রশাসন যেন দেখেও না দেখার ভান করছে। এদিকে ফসলী জমি থেকে মাটি কেটে সেই মাটি দিয়ে তৈরী হচ্ছে ইট।
এ বিষয়ে ইটভাটা মালিক সূত্রে জানা যায়, একটি ভাটায় ইট পোড়াতে ১২-১৫ দিন সময় লাগে এ হিসেবে ইটের মৌসুমে প্রায় ১০ দফা ইট পোড়ানো যায়, এক দফায় ইট ভাটায় ইট পোড়াতে ৮-১০ হাজার মন জ্বালানী কাঠের প্রয়োজন হয়। আর ১০ দফায় ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মণ পর্যন্ত গাছ পোড়ানো হয়। এদিকে ইটভাটাগুলো ফসলী জমি ও বসতি এলাকায় গড়ে উঠায় শিশুদের স্বাস্থ্য হানী ও আশেপাশের জমির উর্বর ক্ষমতা হ্রাস পাচ্ছে। এতে ফসলী জমিগুলোও ধ্বংস হচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার শারমিন আক্তার জানান, ভাটা মালিকদের গাছ পোড়ানোর ব্যাপারে নিষেধাজ্ঞা প্রদান করা হয়েছে। তারা বলেছে, ভাটায় আগুন ধরাতে কিছু কাঠের প্রয়োজন হয়। তবে নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে কোন ভাটার মালিক ভাটায় কাঠের গুড়ি দিয়ে ইট পোড়ানো অব্যাহত রাখলে তাঁদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অপরদিকে দৌলতপুর উপজেলার ভাটা মালিকরা প্রতিবেদক কে জানান, ভাটায় বেশিরভাগ কয়লা পোড়ানো হয়। অল্প কিছু কাঠ আগুন ধরানোর জন্য ব্যবহার করা হয়।