বাংলাদেশি ক্রেতাদের জন্য অনলাইন মার্কেটপ্লেস ‘দারাজ’ দ্বিতীয়বারের মত আয়োজন করছে ‘ইলেভেন ইলেভেন’ (১১.১১) ক্যাম্পেইন। দারাজের প্যারেন্ট কোম্পানি, আলিবাবা গ্রুপ এটি সর্ব প্রথম ২০০৯ সালে শুরু করেছিল; যা বাংলাদেশে গত বছর প্রথম অনুষ্ঠিত হয়।
নভেম্বরের ১১ তারিখে শুরু হওয়া এক দিনের এই বিষেশ ক্যাম্পেইনে থাকছে অভূতপূর্ব কিছু অফার। এই ক্যাম্পেনে ১১ নভেম্বর মাত্র এক টাকায় লটারির মাধ্যমে পাওয়া যাবে নতুন গাড়ি ও মোটরসাইকেল।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এই তথ্য জানান, দারাজ বাংলাদেশে ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ মোস্তাহিদল হক।
‘ইলেভেন ইলেভেন’ ক্যাম্পেইন কেমন হবে, কি পরিমাণ পণ্য বিক্রয়ের টার্গেট নেয়া হয়েছে এবং কি কি অফার ও ছাড় রয়েছে সে বিষয়ে কথা বলেন দারাজ বাংলাদেশ লিমিটেডের ম্যানেজিং ডিরেক্টর সৈয়দ মোস্তাহিদল হক।
‘ইলেভেন ইলেভেন’ (১১.১১) ক্যাম্পেইন সম্পর্কে কিছু বলুন এবং গ্রাহকদের জন্য দারাজে কি কি অফার রয়েছে?
সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, এক দিনের এই ইভেন্টে ক্রেতাদের জন্য একটি পরিপূর্ণ শপিং অভিজ্ঞতা নিয়ে হাজির হচ্ছে দারাজ বাংলাদেশ। ‘ইলেভেন ইলেভেন’ ক্যাম্পেইন হচ্ছে বিশ্বের সবচেয়ে বড় অনলাইন শপিং ইভেন্ট যা অ্যামাজন প্রাইম ডে’র তুলনায় প্রায় ১৮ গুণ ও ব্ল্যাক ফ্রাইডের তুলনায় প্রায় আড়াই গুণ বড়।
বাংলাদেশে দ্বিতীয়বারের মত ‘ইলেভেন ইলেভেন’ ক্যাম্পেইন আয়োজন করছি আমরা। এতে থাকছে- ৭০ লাখের অধিক পণ্য, বিশাল ডিসকাউন্ট। বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে- ১১ টাকা ডিল, প্রি-সেল ডিসকাউন্ট, ১ টাকা গেম, ডাবল টাকা ভাউচার, শেক শেক ভাউচার, হ্যাপি আওয়ার ভাউচার, রাত ৯টা থেকে ১২টা পর্যন্ত বিগ সেল ছাড়াও দারাজে পাওয়া যাবে ১ টাকায় টয়োটা ব্র্যান্ডের নতুন গাড়ি ও মোটরসাইকেলসহ অনেক কিছু।
ক্রেতাদের সুবিধার কথা মাথায় রেখে আরও আয়োজন করা হয়েছে- প্রি-সেল ক্যাম্পেইন, যা চলবে ১ থেকে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত। যেখানে ১১.১১ ক্যাম্পেইনের চেয়েও কম মূল্যে উপভোগ করতে পারবে নির্ধারিত কিছু পণ্য। এছাড়াও প্রথমবারের মত ১১ নভেম্বর সেলারদের পক্ষ থেকে থাকছে বিশেষ বিশেষ ব্র্যান্ডের উপর ফ্রি ডেলিভারি।
গতবারের ১১.১১ ক্যাম্পেইন কেমন হয়েছিল এবং এবারের আয়োজন কেমন হবে জানতে চাইলে সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, গত বছর নভেম্বরের ১১ তারিখ দারাজের ইলেভেন ইলেভেন ক্যাম্পেইম প্রথমবার শুরু করি। এতে শপিং করেছিল ৪৫ কোটি টাকার অধিক মূল্যের! মাত্র ৩০ মিনিটে ক্রেতারা কিনেছিল ৬ কোটি টাকার বেশি মূল্যের পকো ফোন। পুরো দিনজুড়ে ক্রেতাদের অর্ডার ছিল ১ লাখ ২০ হাজার।
১১.১১ সিঙ্গেল ডে ক্যাম্পেইনে ক্রেতাদের আমন্ত্রণ করার জন্য আবারও প্রস্তুত দারাজ। গতবারের চেয়ে আরও বড় পরিসরে উৎযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছি। এবারের আয়োজনে এমন কিছু চমক থাকছে যা বাংলাদেশের ই-কমার্স ইন্ডাস্ট্রি আগে কখনও দেখেনি। এবারের ক্যাম্পেইনে সাড়ে তিন হাজার দারাজ কর্মী এবং পনেরো হাজার সেলার কাজ করছে। গতবার তিন লাখ পণ্য নিয়ে ১১.১১ ক্যাম্পেইন আয়োজন করা হয়েছিল। এবার ঊনিশ লাখ পণ্য নিয়ে আয়োজন করা হয়েছে। গতবার আড়াই হাজার সেলার ছিল এবার তের হাজার সেলার কাজ করছে। গতবার ১ টাকার গেমটা ছিল না, এবার সেটা করা হয়েছে। গতবারের চেয়ে এবার অনেক অফার বাড়ানো হয়েছে।
এবার কি পরিমাণ পণ্য বিক্রয়ের টার্গেট নিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, গত ১১.১১ ক্যাম্পেইনে ১ লাখ ২০ হাজার আইটেমের পণ্যের অর্ডার পেয়েছি। এবার আমরা ৯ লাখ আইটেমের পণ্য বিক্রয়ের টার্গেট নিয়েছি। যা গত বারের চেয়ে সাড়ে চার গুণ বেশি।
এই ক্যাম্পেইনে আপনাদের পেমেন্ট পাটর্নাররা কি কি অফার দিচ্ছে এমন প্রশ্নের জবাবে সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন, আমাদের পেমেন্ট পার্টনারদের মাধ্যমে কেনাকাটা করলে থাকছে ডিসকাউন্ট এবং ক্যাশব্যাক অফার। ১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংক, ইউসিবি ব্যাংক, মার্কেনটাইল ব্যাংক এবং ঢাকা ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ডে লেনদেনের মাধ্যমে পাওয়া যাবে ১৫% পর্যন্ত মূল্যছাড়। এছাড়াও দারাজে ১১ নভেম্বর থেকে ১৫ নভেম্বর পর্যন্ত বিকাশের মাধ্যমে পেমেন্ট করলে থাকছে সর্বোচ্চ ১৫% পর্যন্ত ক্যাশব্যাক সুবিধা।
পণ্যের ডেলিভারি নিয়ে আপনাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ আসে প্রায়ই। ১১.১১ ক্যাম্পেইনে পণ্য ডেলিভারির ক্ষেত্রে বিশেষ কোন উদ্যাগ নিয়েছেন কিনা? এমন প্রশ্নের জবাবে দারাজ বাংলাদেশের এম ডি সৈয়দ মোস্তাহিদল হক বলেন-
আসলে অনেক বড় পরিমাণে যেখানে আমরা অর্ডার হ্যান্ডেল করি সেখানে কিছুটা বিলম্ব আমাদের দিক থেকে হয়ে যায়। তবে এর পরিমাণ হয়তো ০.০৫ শতাংশের কিছু বেশি। ১১.১১ ক্যাম্পেইনে ক্রেতা বা গ্রাহকদের সর্বোচ্চ সেবা নিশ্চিত করতে এবার আমরা খণ্ডকালীন প্রায় ১ হাজার ৫০০ কর্মী নিয়োগ দিয়েছি।
ঢাকার মধ্যে ও বাইরে প্রায় ২১ জন কালেকশন পয়েন্ট এজেন্ট, ২০০ জন অপারেটর, ৭৩২ জন রাইডার, ৪৫ জন ড্রাইভার, ৩০০ জন কাস্টমার সার্ভিস এজেন্ট থেকে শুরু করে কমার্শিয়াল, মার্কেটিং, অপারেশন্স ও ক্রস বর্ডার ডিপার্টমেন্টে আরও অনেক ফুলটাইম এক্সিকিউটিভ নিয়োগ করা হয়েছে।