দুর্নীতি করে অফিস স্টাফদের মাসিক বেতনের ভুয়া স্টেটমেন্ট তৈরী করে সরকারি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের করা মামলায় ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের দ:বি:র ৫(২), দ:বি: ৪০৯ এবং ৪৭৭(ক) ধারায় আনীত অভিযোগ প্রমানিত হওয়ায় একজনের সর্বোচ্চ ৭ বছর কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা আদেশ দিয়েছেন আদালত।
কুষ্টিয়া বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মোঃ কামরুল হাসান জনাকীর্ণ আদালতে আসামীর উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষনা করেন। দন্ডপ্রাপ্ত আসামী হলেন- দৌলতপুর কৃষি অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ আকরাম হোসেন। আদালত সূত্রে জানা যায়, আসামী নিজ কর্মস্থল উপজেলা কৃষি অফিসে কর্মরত থাকাকালীন দুর্নীতি করে মাসের পর মাস ওই দপ্তরের কর্মচারী কর্মকর্তাদের মাসিক বেতন বাবদ নির্দিষ্ট পরিমানের অধিক সরকারী টাকা উত্তোলনসহ কয়েক লক্ষ টাকা আত্মসাত করেন। বিষয়টি সরকারী নিরীক্ষা টিমের নজরে আসায় দুদককে অবহিত করা হয়। ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়ায় সরকারী এই কর্মচারী আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে দুদক কুষ্টিয়ার সাবেক উপ-পরিচালক খান মোঃ মিজানুল ইসলাম বাদি হয়ে দুর্নীতির অভিযোগ এনে ২০০৯ সালের ৩ নভেম্বর দৌলতপুর থানায় মামলা করেন। মামলা নং-০৫, যা তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল পূর্বক বিশেষ জজ আদালত স্পেশাল মামলা নং ১৩/২০১১ হিসেবে নথিভুক্ত হয় এবং আসামীর বিরুদ্ধে চার্জ গঠন হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদকের কৌশুলী এ্যাড. শুধীর কুমার শর্মা জানান, আসামী দৌলতপুর কৃষি অফিসের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক মোঃ আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালত চার্জ গঠন শেষে স্বাক্ষ্য শুনানী শুরু করেন। দীর্ঘ স্বাক্ষ্য শুনানী শেষে ২০০৯ সালে দৌলতপুর থানায় দায়েরকৃত দুদকের এই মামলা আসামীর বিরুদ্ধে আনীত অভিযোগ সন্দেহাতীত প্রমানিত হওয়ায় এই রায় ঘোষনা করেন বিজ্ঞ আদালত।
বিজ্ঞ আদালত কর্তৃক ঘোষিত রায়ে বলা হয়েছে- আসামী (১) মোঃ আকরাম হোসেন, উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক, দৌলতপুর কৃষি অফিস, কুষ্টিয়ার বিরুদ্ধে দন্ডবিধির ৪০৯ ধারায় ৭ বছরের সশ্রম কারাদন্ড ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরোও ৬ মাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড এবং দন্ডবিধির ৪৭৭(ক) ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ড এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় ৫ বছরের সশ্রম কারাদন্ডে দন্ডিত করা হয়। সাজাপ্রাপ্ত আসামীর বিরুদ্ধে আদালত ঘোষিত শাস্তি একসাথে চলবে মর্মে রায়ের আদেশে উল্লেখ করা হয়।
দুর্নীতি দমন কমিশন দুদক কুষ্টিয়ার অফিস সূত্রে জানাযায়, অফিস সহকারী আকরাম হোসেন ইতোপূর্বেও একই জাতীয় অপরাধের দায়ে আরও দুই বার দন্ডপ্রাপ্ত হয়ে জেল খাটেন পরে ওই মামলায় উচ্চ আদালত থেকে জামিন পান।