ঝিনাইদহে একটি পুকুর থেকে ভাই আবু সালেহ মাহি (৫) ও বোন সাফিয়া খাতুনের (৯) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রবিবার দুপুরে সদর উপজেলার বানিয়াকান্দর গ্রামের জামতলাপাড়ার একটি পুকুর থেকে তাদের লাশ উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় তাদের মা মনিরা খাতুনকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করেছে পুলিশ। মনিরা খাতুন ওই গ্রামের নজরুল ইসলামের স্ত্রী।
ঝিনাইদহ সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এমদাদুল হক জানান, সকালে মনিরা বেগম ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে বাড়ির পাশের পুকুরে গোসল করতে যান। গোসল শেষে মনিরা বেগম বাড়িতে ফিরে আসে। প্রতিবেশী এক নারীর কাছে গ্লাস পানি খেতে চান।
প্রতিবেশী সুফিয়া খাতুন জানান, মনিরা খাতুন তাকে বলে, আগের সন্তানদের মানুষ করতে কষ্ট হয়নি। এ দুটোর মানুষ করতে কষ্ট হচ্ছে। তাই ওদের পানিতে ফেলে দিয়েছি। পরে তাকে সঙ্গে নিয়ে পুকুরে যায় প্রতিবেশীরা। অনেক খোঁজাখুঁজির পর পুকুর থেকে শিশু দুটির লাশ উদ্ধার করা হয়।
স্থানীয় ইউপি মেম্বর সুজন গনমাধ্যমকে জানান, রোববার সকালে সাফিয়া ও মাহিদকে নিয়ে গোসল করতে যায় তার মা মনিরা খাতুন (৪০)। বাড়ি ফিরে মনিরা প্রতিবেশি রাবেয়া খাতুন নামে এক মহিলাকে জানায় তার দুই সন্তানকে সে পুকুরে রেখে এসেছে। মনিরার অসংলগ্ন কথাবর্তার পর রাবেয়া খাতুনসহ লোকজন পুকুরে কাদায় পুতে রাখা অবস্থায় দুই ভাই বোনের মৃতদের উদ্ধার করে।
গ্রামবাসির অভিযোগ মনিরা খাতুনের মানসিক সমস্যার পাশাপাশি সে বদরাগি মহিলা হিসেবে মহল্লায় পরিচিত। দুই বছর আগে সে তার এক সন্তানকে বিক্রি করে দেয় বলে অভিযোগ করেন সুজন মেম্বর।
এ ব্যাপারে ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঝিনাইদহ সদর থানার এসআই সাখওয়াত হোসেন জানান, পুকুর থেকে দুই শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। প্রাথমিক ভাবে ধারণা করা হচ্ছে তার মা দুই সন্তানকে পুকুরে ডুবিয়ে হত্যা করেছে। বিস্তারিত তদন্তের পর বলা যাবে।
এ ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য মা মনিরা বেগমকে আটক করা হয়েছে বলে জানান পুলিশ অফিসার এমদাদ। তিনি জানান, এটি হত্যা নাকি পানিতে ডুবে মৃত্যু তা সঠিকভাবে জানা যায়নি। ময়নাতদন্তের পর জানা যাবে।
উল্লেখ্য, শনিবার ঝিনাইদহের মহেশপুরের বাকোসপোতা গ্রামে ৫ বছরের শিশু পুত্র রাব্বি হাসান রিফাতকে গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যার পর মা রিফা খাতুন (২৬) গলায় রশি দিয়ে আত্নহত্যা করে। এ ঘটনার একদিন পর ঝিনাইদহ সদর থানায় দুই সন্তানকে পানিতে চুবিয়ে হত্যার ঘটনায় অপরাধ বিশেষজ্ঞদের কপালে ভাজ পড়েছে।