এক জন ভন্ড কবিরাজ সাত্তার। বছর দুয়েক আগেও যার ঘরে নুন আনতে পান্তা ফুরাতো তার। কিন্তু হঠাৎ করেই একদিন গোটা কুষ্টিয়ায় হৈচৈ পরে যায়, সদর উপজেলার কবুরহাট দোস্ত পাড়া এলাকার মৃত ইমারতের ছেলে ভন্ড কবিরাজ সাত্তারের জ্বীন পরী ক্ষপ্পরে কথা। বহু দূর দূরান্ত থেকে লোকজন ভন্ড কবিরাজ সাত্তারের কাছে এসে চিকিৎসা নিতে বাড়ীতে ভীড় জমাতে থাকে।
এর পর আর পিছু ফিরে তাকাতে হয়নি সাত্তার কবিরাজকে। মা মনোষার আশীর্বাদে নামী কবিরাজ বনে গেছেন তিনি। স্বাক্ষরতা জ্ঞান নেই, নেই সরকারী কোন অনুমোদন অথচ ক্যান্সার, প্যারালাইসিস, হার্টের সমস্যা সহ যে কোন জটিল ও কঠিন রোগের চিকিৎসা সেবা দিচ্ছেন তিনি। সেটাও আবার শুধু মাত্র ঝারফুঁক আর তাবিজ কবচের মাধ্যমে।
কবিরাজি চিকিৎসা করে মাত্র দুবছরের মধ্যে ভাগ্য বদলেছে সাত্তার আর পরিবারের লোকজনের।পাকা বসত বাড়ি, ধানী জমি, ব্যাংকে গচ্ছিত লক্ষ লক্ষ টাকা। কি নেই সাত্তার কবিরাজের এখন। কুষ্টিয়া সদর উপজেলা কবুরহাট দোস্ত পাড়া এলাকার কথিত জ্বীনের বাদশা সাত্তার কে না চেনে।
বছর দুই আগেও যিনি একজন কাচা মালের ব্যাবসায়ী হিসেবে পরিচিত ছিলেন। হঠাৎ করেই তিনি একদিন উপলব্ধি করতে সক্ষম হলেন জ্বীন পরীদের বশিভূত করার মত সক্ষমতা তার রয়েছে। এরপর দীর্ঘ সাধনার পর কয়েক শত জ্বীন আর পরীদের তিনি বশ করে তাদের দিয়ে এমন কোন অসাধ্য কাজ নেই যা তিনি সাধন করছেন না। আপনি কি নিঃসন্তান, প্রেমে ব্যার্থ, চাকরি বাকরি কিংবা বিয়ে হচ্ছে না, ব্যাবসায় উন্নতি নেই, শত্রুকে পরাজিত করতে চান, ধনী হতে চান? সকল সমস্যার সমাধান রয়েছে কথিত এ জ্বীনের বাদশার সাত্তারের কাছে।
এমনকি তিনি ক্যান্সার ভালো করার মত অসাধ্যকে সাধন করতে পারে বলে কথিত রয়েছে। ভন্ড কবিরাজ সাত্তার আদলে একই কায়দায় সপ্তাহে মঙ্গল ও শুক্রবার এই দুই দিন রীতিমত বাড়ীতে চেম্বার খুলে জ্বীন পড়ীদের সাহায্যে ঝাড়ফুক ও তাবিজ কবজের মাধ্যমে চিকিৎসা সেবা দিয়ে আসছে জ্বীনের বাদশা সাত্তার। আর এমন অভিনব প্রতারনার মাধ্যমে সাধারন মানুষ কে ধোকা দিচ্ছে। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট দোস্ত পাড়া এলাকার একসময়ের হতদরিদ্র কৃষক মৃত ইমারত ছেলে সাত্তার।
গত এক যুগ ধরে তার কাধে মা ফাতেমা (রাঃ),হযরত শাহ জালাল, এমনকি হিন্দু দেবী মা কালী সহ কালজয়ী মনীঋষীরা ভর করে আছে। যাদের সাহায্যে তিনিও নিঃসন্তান দম্পতিদেরকে সন্তান দান, মরন ব্যাধী ক্যান্সারের চিকিৎসা, শত্রুর উপর বিজয় লাভ করিয়ে দেওয়া, মনের মানুষকে কাছে পাইয়ে দেওয়া সহ একের পর এক অসাধ্য সাধনে ঝাড়ফুঁক আর তাবিজ কবচ দিয়ে চলেছেন।
শুধুমাত্র যারা কু সংস্কারচ্ছন্ন সাধারন মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে পুজি করে নির্বিঘ্নে তাদের প্রতারনা চলিয়ে যাচ্ছে। এদের ক্ষপ্পরে পরে একদিকে যেমন প্রতারিত হচ্ছে সাধারন মানুষ অপর দিকে অপচিকিৎসার কবলে পরে মারাত্মক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে রয়েছে তারা। অথচ এ নিয়ে সংশ্লিষ্ট কারোই যেন কোন মাথা ব্যাথ নেই।