নিউ ইয়ার্ক প্রতিনিধি মুনসী মোঃ সাজেদুর রহমান টেনটু –
জাতিসংঘে পিচ কিপিং মিশনে বাংলাদেশ এখন দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে। বাংলাদেশের সদস্যদের চাহিদা দিনে দিনে পিচ কিপিংয়ে বাড়ছে। সেই জন্য বাংলাদেশ থেকে আরও বেশি সংখ্যক নারী সদস্য পাঠানোর প্রয়োজন রয়েছে। জাতিসংঘ চাইছে আগামীতে এই সংখ্যা ৫০, ৫০ (ফিফটি ফিফটি) করার জন্য। অর্থ্যাৎ পুরুষ সদস্য ৫০ আর নারী সদস্য ৫০। সেটি করতে হলে বাংলাদেশ সামরিক বাহিনীর নারী সদস্য সংখ্যা আরো বাড়াতে হবে। আমাদের দেশে এখনও সামরিক বাহিনী ও পুলিশ বাহিনীতে নারী সদস্য সংখ্যা কম। কিন্তু আগামী দিনে এটা বাড়াতে হবে। এই ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকারকে অবগত করেছে জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশণ থেকে। জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী মিশনের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশের দুইজন নারী বৈমানিক জাতিসংঘে এখন কাজ করছেন। তারা বেশ প্রশংসিত হচ্ছেন। আগামী দিনে যদি বাংলাদেশে নারী বৈমানিকের সংখ্যা বাড়ে তাহলে সুবিধা হবে। এর পাশাপাশি বিভিন্ন বাহিনীতে আরও নারী সদস্য বাড়াতে হবে।
এক প্রশ্নের জবাবে এই বিষয়ে মাসুদ বিন মোমেন বলেন, বাংলাদেশ জাতিসংঘে এখন দ্বিতীয় অবস্থানে। কখনো এক নম্বরেও আসে। অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাদেশ এক ও দুই নম্বর অবস্থান করে। এই অবস্থান পরিবর্তন হয়। কিন্তু তারপরও বলবো আমরা এক কিংবা দুই যে অবস্থানেই থাকিনা কেন আমাদের দেশের পিচ কিপারদের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। এখন জাতিসংঘ চাইছে জাতিসংঘে নারী ক্ষমায়নের বিষয়টি আরও নিশ্চিত করতে। সেই জন্য শতকরা ৫০ ভাগ নারী কর্মীও করার চেষ্টা করছে। সেটা পুরোপুরি বাস্তবায়ন করলে আমাদের মিশনেও নারী সদস্য সংখ্যা আরও বাড়বে। বিশেষ করে আমাদের পুলিশ বাহিনী ও সামরিক বাহিনীতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে হবে। সেটা বাড়ানো হলে আরো বিপুল সংখ্যক নারী সদস্য আমরা জাতিসংঘে নিযুক্ত করতে পারবো। তিনি বলেন, আমি আশা করছি আগামী দিনে আমাদের সরকারও দেশের বিভিন্ন বাহিনীতে নারী সদস্য আরও বাড়ানোর ব্যাপারে গুরুত্বারোপ করবে। সামরিক বাহিনীর বিভিন্ন সেক্টরে নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে। এটা আস্তে আস্তে বাড়ছে। তবে এই জন্য একটু সময়েরও প্রয়োজন আছে। যখন বাংলাদেশ পিচ কিপিংয়ে আরও বেশি সংখ্যক নারী সদস্য দিতে প্রস্তুত হবে আমরাও তাদেরকে সম্পৃক্ত করতে পারবো।
তিনি বলেন, বাংলাদেশের সামরিক বাহিনী ,ও পৃুলিশ বাহিনীসহ যারাই মিশনে কাজ করছেন তাদের কাজের কারণে বাংলাদেশ প্রশংসিত হয়েছে। বাংলাদেশের সদস্যরা গঠনমূলকভাবে পিচ কিপিংয়ে অংশ নিচ্ছে। এবারের জাতিসংঘের ৭৩ তম সাধারণ অধিবেশনে পিচ কিপিং বিষয়ক বৈঠকটির জন্য দশটি দেশকে নির্বাচিত করা হয়েছে। বাংলাদেশও এর মধ্যে রয়েছে। আমাদের বিভিন্ন বাহিনীর সদস্যদেরকে আরও কিভাবে এখানে সম্পৃক্ত করা যায় সেই বিষয়টি দেখা হচ্ছে।
তিনি জানান, জাতিসংঘ মহাসচিবের আয়োজনে অ্যাকশন ফর পিস কিপিং বিষয়ক উচ্চ পর্যায়ের সভায় অংশগ্রহণ করবেন। পিস কিপিং বিষয়ক এই ইভেন্টে প্রদেয় বক্তব্যে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশের শান্তিরক্ষা সক্ষমতা বৃদ্ধিতে ক্রমাগত উন্নতির বিষয়গুলো তুলে ধরবেন। এছাড়া তিনি ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামের চতুর্থ শিল্প বিপ্লব সম্পর্কিত একটি প্যানেলে যোগ দিবেন।
বাংলাদেশের সামরিক বাহিনীকে আধুনিকায়নের জন্য এই সরকার কাজ করছে এবং লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেই কাজ করছে। এই বিষয়ে তিনি বলেন, সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়ন প্রয়োজন। সরকার এই ব্যাপারে কাজ করে যাচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সামরিক বাহিনীর আধুনিকায়নের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণভাবেই এগিয়ে নেওয়া হচ্ছে। আগামী দিনে পিচ কিপারদের আরও নানামুখী অভিজ্ঞতার প্রয়োজন হবে। সেই হিসাবেও তাদের আধুনিকায়ন করা হলে পিচ কিংপিংয়েও কাজ করতে সুবিধা হবে।