মোঃ তামজীদুল হক ফাহিম, ইবি প্রতিনিধি:- একজন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে নানামুখী ব্যস্ততার মাধ্যমে তার দিন অতিবাহিত করতে হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজের চাপে শ্রেনীকক্ষে সময় দেওয়া যেন প্রায় অসম্ভব একটি কাজ। কিন্তু ব্যতিক্রম ইবি উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী। ছুটির দিনেও শত ব্যস্ততার মাঝে ঠিকই সময় বের করে ক্লাস নিচ্ছেন তিনি।
আজ (২১ নভেম্বর) বৃহস্পতিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের সাপ্তাহিক ছুটি থাকা সত্বেও তিনি তাঁর বিভাগে ক্লাস নেন। রবীন্দ্র-নজরুল কলা ভবনে ইংরেজি বিভাগের ২০১৮-১৯ (মাস্টার্স) শিক্ষাবর্ষের ১ম সেমিস্টারের ৫১৪ নং কোর্স রিডিং লিটারেচার থ্রু থিওরির উপর প্রায় চার ঘন্টাব্যাপী ক্লাস নেন তিনি। তিনি ক্লাস শুরু করেন সকাল ৯.২০ টা থেকে। একটানা প্রায় তিন ঘন্টা ক্লাস নেওয়ার পরে ১২ টার দিকে ২০ মিনিটের বিশ্রাম দেন তিনি। পরে আবার ১২.২০ থেকে ১.১০ পর্যন্ত ক্লাস নেন।
এদিকে ছুটির দিনে ক্লাস নেওয়ায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে উল্লসিত মনোভাব দেখা গেছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও বিভাগের জেষ্ঠ্য অধ্যাপকের ক্লাস করতে পেরে খুশি তারা।
ড. রাশিদ আসকারী বলেন, উপাচার্য হিসেবে আমি যে প্রশাসনিক দায়িত্ব পালন করি এটি কর্তব্যবোধ থেকে, সরকার আমাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তা পালনের তাড়না থেকে করি। . ক্লাস নেয়া আমার পরম অনন্দের ব্যাপার। আমি মনে করি একজন শিক্ষকের শ্রেষ্ঠ আনন্দ শ্রেণিকক্ষে যখন সরাসরি ছাত্র ছাত্রীদের সাথে ইন্টার অ্যাকশন হয়। নতুন কোন বিষয়ে শিক্ষার্থীদের দেয়ার চেষ্টা করি।
আমি সাধারণত উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করায় ক্যাম্পাস খোলার দিনগুলোতে ব্যস্ত থাকতে হয়। তারপরও আমি দুই একটি কোর্স পড়ানোর চেষ্টা করি। আমাদের সময় কম কাজ বেশি তাই ছুটির দিনে ক্লাস চলমান রাখা যায় কিনা এ নিয়ে ভাবছি। এছাড়াও ছুটির দিনে ক্লাসে অংশগ্রহণ করায় শিক্ষার্থীদের তিনি ধন্যবাদ জানান। .
এ বিষয়ে জানতে চাইলে ২০১৮-১৯ (মাস্টার্স) শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী আদনান শাকুর সান বলেন, শত ব্যস্ততার মাঝেও ভিসি স্যারের ক্লাস নেওয়া সত্যিই একটি দৃষ্টান্ত। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হয়েও তিনি ইংরেজি বিভাগের একজন শিক্ষক হিসেবে নিজের দায়িত্ব পালন করতে ভুলে যান নি। আমাদের যে কোনো কোর্সে সমস্যা হলে আমরা তাকে জানালে তিনি ছুটির দিন হলেও আমাদের ক্লাস নেন।
বিভাগীয় শিক্ষার্থী সূত্রে জানা যায়, উপাচার্য ড. রাশিদ আসকারী রাত ১২ টায় ঢাকায় বিভিন্ন টেলিভিশনে টকশো ও অফিয়াল কাজ করে পরের দিন সকাল ৯ টায় ক্লাস নিয়েছেন। উপাচার্যের এমন আন্তরিকতায় মুগ্ধ শিক্ষার্থীরা।