ছেলে ও মেয়েকে নিয়ে কুষ্টিয়া থেকে রাজশাহী আসছিলেন চিকিৎসা করানোর উদ্দেশ্যে। কিন্তু রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নেমেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন এ যাত্রী। পরে নিথর দেহ নিয়ে প্রায় একঘণ্টা প্ল্যাটফর্মের ওপর বসে থাকেন তার ছেলে। করোনা ভাইরাস আতঙ্কে এসময় কেউ তার পাশে যায়নি।
পরে রেলওয়ে পুলিশের সহায়তায় অটোরিকশায় করে তাকে রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, হাসপাতালে নেওয়ার অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
বুধবার (১০ জুন) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের চার নম্বর প্ল্যাটফর্মে এ ঘটনা ঘটে।
চিকিৎসার জন্য কুষ্টিয়া থেকে রাজশাহী আসা এ যাত্রীর নাম আবদুল কুদ্দুস ওরফে রাজন (৫৫)। তার বাড়ি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার নাজিরপুর গ্রামে। ছেলে ও মেয়ের সঙ্গে তিনি আন্তঃনগর ট্রেন কপোতাক্ষ এক্সপ্রেসে রাজশাহী আসেন। প্ল্যাটফর্মে নেমেই লুটিয়ে পড়েন তিনি। এরপর তার ছেলে-মেয়েরা বাবার নিথর দেহ নিয়ে সেখানেই বসে থাকেন।
এসময় অনুরোধ করলেও করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত সন্দেহে অচেতন আব্দুল কুদ্দুসকে রেল কর্তৃপক্ষ তাদের অ্যাম্বুলেন্সে হাসপাতালে নিয়ে যেতে রাজি হয়নি। পরে রাজশাহী রেলওয়ে থানা পুলিশ মরদেহটি একটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশায় করে রামেক হাসপাতালে পাঠায়। কিন্তু হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক জানান, অনেক আগেই তার মৃত্যু হয়েছে।
রাজশাহী গভর্নমেন্ট রেলওয়ে পুলিশ (জিআরপি) থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহ্ কামাল বলেন, ‘আবদুল কুদ্দুস হৃদরোগে ভুগছিলেন। তার সন্তানরা জানিয়েছেন, বাবার চিকিৎসা করানোর জন্য তাকে কুষ্টিয়া থেকে রাজশাহী নিয়ে আসা হয়েছিল। কিন্তু রাজশাহী রেলওয়ে স্টেশনের প্ল্যাটফর্মে নেমেই মাথা ঘুরে পড়ে যান তিনি। এর পরপরই তার মৃত্যু হয়। তবে তার মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগে পাঠানো হয়। সেখানে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।’
এটি হৃদরোগজনিত মৃত্যু হওয়ায় তার মরদেহ নিজ ব্যবস্থাপনায় গ্রামের বাড়িতে নিয়ে যাওয়ার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান এ পুলিশ কর্মকর্তা।