টাঙ্গাইলে চাচা ও ভাতিজার যৌন লালসার শিকার স্কুল ছাত্রী কণ্যা সন্তান প্রসব করেছে। বর্তমানে মা-মেয়ে উভয়ই সুস্থ আছেন। কিন্তু শিশুটি কার পরিচয়ে বড় হবে? এমন প্রশ্নই এখন ঘোরপাক খাচ্ছে।
রোববার টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে অপারেশনের মাধ্যমে সে কন্যা সন্তানের জন্ম দেয়। ওই হাসপাতালের গাইনী বিভাগের অধ্যাপক ডা. নাজমা খলিল এ অপারেশন সম্পন্ন করেন। এর আগে শনিবার ভোর ৫ টার দিকে মেয়েটি প্রসব ব্যথা নিয়ে হাসপাতালের এক নম্বর ওয়ার্ডে ভর্তি হয়।
সে টাঙ্গাইলের কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের মেয়ে ও ভূঞাপুর উপজেলার নিকলা উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রী।
জানা যায়, দারিদ্রতার কারনে কালিহাতী উপজেলার গিলাবাড়ি গ্রামের আনছের আলীর বাসায় কাজ করতো ওই স্কুল ছাত্রী। কাজের সুবাধে আনছের আলী ওই স্কুল ছাত্রীকে জোর করে ধর্ষণ করে। পরে কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে নিয়মিত ধর্ষণ করতে থাকে। ধর্ষণ করার সময় ঘটনাটি দেখে ফেলে তারই আপন বড় ভাই মুনসুর আলীর ছেলে শরিফুল ইসলাম। পরে শরিফুল ঘটনাটি লোকজনের কাছে বলে দেয়ার ভয় দেখিয়ে সেও মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। হত্যার ভয় দেখিয়ে ও কাউকে কিছু না বলতে ওই মেয়েকে নিষেধ করে দেয় আনছের আলী ও শরিফুল। সুযোগ বুঝে চাচা-ভাতিজা প্রায়ই তাকে ধর্ষণ করতো। ধর্ষণের ফলে সে অন্তঃসত্বা হয়ে পড়ে।
জন্ম নেয়া ওই শিশুটির দেখভাল করছেন স্কুল ছাত্রীর মা কমলা বেগম ও বড় বোন মরিয়ম। পাশেই নিরবে বসে আছেন বাবা আবুল হোসেন ও ভগ্নপতি মোখলেছুর রহমান। তাদের চোঁখে-মুখে শুধুই হতাশার ছাপ।
হাসপাতালে কথা হয় ছাত্রীর বাবা মো. আবুল হোসেনের সাথে। তিনি বলেন, আমার মেয়ে এমনিতেই শিশু তার মধ্যে আবার আরেকটি শিশুর মা হলো। এখন এ শিশুর দায়িত্ব নেবে কে? তার পিতৃ পরিচয় কি? আমি এই মেয়েকে নিয়ে এখন কি করবো? আমি মামলা করার পরও মূল আসামি আনছের আলীকে ধরতে পারেনি পুলিশ। আসামির পরিবারের লোকজন আমার মেয়েকে হত্যার হুমকিও দিচ্ছে। আমি কি এর কোন বিচার পাবো না? নাকি আমি গরীব বলে বিচার পাওয়ার অধিকার আমার নাই?
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা কালিহাতী থানার এস আই মো. মনির হোসেন বলেন, স্কুল ছাত্রীর বাচ্চা প্রসবের বিষয়টি আমি শুনেছি। মামলাটি একটু জটিল। ইতিমধ্যে মামলার এক আসামী শরিফুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়েছি। সে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। ওই স্কুল ছাত্রী ও শরিফুলের ডিএনএ পরীক্ষা সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান আসামী আনছের আলীকে গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
এ ঘটনায় ওই ছাত্রীর পিতা বাদি হয়ে চাচা আনছের আলী ও ভাতিজা শরিফুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। গ্রেপ্তার করা হয় শরিফুলকে। আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয় শরিফুল।