ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগ সাধারণ সম্পাদককে চতুর্থবারের মতো ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস তাড়া করেছে শাখা ছাত্রলীগের বিদ্রোহীরা।
শনিবার দুপুর পৌনে ৩ টার দিকে ছাত্রলীগ সম্পাদক ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেছে এমন সংবাদ পেয়ে তাকে ধাওয়া দেওয়ার নামে ক্যাম্পাসে আতঙ্ক ছড়ায় বিদ্রোহীরা। পরে ৪ টার দিকে সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব প্রশাসন ভবন থেকে বের হলে তাকে ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস ছাড়া করে তারা।
জানা যায়, ছাত্রলীগ সম্পাদক রাকিব মাস্টার্সের মৌখিক পরীক্ষা দিতে শনিবার সকালে ক্যাম্পাসে আসে। পরীক্ষা শেষে প্রশাসন ভবনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এক কর্তাব্যক্তির সাথে সাক্ষাৎ করতে যান। খবর পেয়ে ছাত্রলীগের পদবঞ্চিত গ্রুপটি সকল আবাসিক হল থেকে একত্রিত হয়ে শোডাউন দিয়ে দলীয় টেন্টে যায়। টেন্টে থেকে হঠাৎ করেই ধর, ধর চিৎকার করে প্রধান ফটক হয়ে প্রশাসন ভবনের দিকে তেড়ে আসে। এসময় ডায়না চত্ত্বরসহ সমস্ত ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। পরে পদবঞ্চিত গ্রুপটি প্রশাসন ভবনের সামনে থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের করে। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে দলীয় টেন্টে গিয়ে শেষ হয়। এসময় তাদের রাকিবের চামড়া তুলে নেব আমরা, রাকিব-পলাশ যেখানে ধোলায় হবে সেখানে, টাকার বিনিময়ে কমিটি মানিনা মানব না, এসব স্লোগান দিতে দেখা যায়।
পরে বিকেল ৪টার দিকে রাকিব প্রশাসন ভবন থেকে বের হলে ফের ধাওয়া দেয় এ গ্রুপটি। এসময় রাকিব মোটরসাইকেল যোগে দ্রুত ক্যাম্পাস ত্যাগ করে। এর আগেও তিনবার ছাত্রলীগ সম্পাদক রাকিবকে এবং একবার সভাপতি রবিউল ইসলাম পলাশকে ধাওয়া দিয়েছে বিদ্রোহীরা।
বিদ্রোহী গ্রুপের নেতা যোবায়ের মাহমুদ বলেন, “৪০ লাখ টাকার বিনিময়ের এই কমিটি অবিলম্বে বাতিল করে নতুন কমিটি দিতে হবে। দূর্নীতিবাজ ছাত্রলীগের সভাপতি এবং সাধারণ সম্পাদককে ক্যাম্পাসে আগেই অবাঞ্ছিত ঘোষিত হয়েছে। তাই তারা ক্যাম্পাসে প্রবেশ করলেই প্রতিহত করব।”
ছাত্রলীগ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেন, “ আমি ক্যাম্পাসে প্রবেশের সময়ই প্রক্টরকে জানিয়েছি এবং একজন সাধারণ শিক্ষার্থী হিসেবে আমার নিরাপত্তা চেয়েছি। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আর বিদ্রোহীরা একটি ইউনিটের সভাপতি সম্পাদককে যে অশ্রাব্য ভাষায় স্লোগান দিয়েছে তাতে আমি সংগঠনের নেতা হিসেবে কষ্ট পেয়েছি। আমি ক্যাম্পাসে আসার পরে ট্রেজারার স্যারের রুমে গুরুত্বপূর্ণ কথা বলার সময় ছাত্রলীগের কিছু কর্মী আমার বিরুদ্ধে মিছিল করে। একজন ছাত্রলীগের নেতার বিরুদ্ধে কর্মীদের মুখে অকথ্য ভাষায় স্লোগান শুনে আমি খুবই মর্মাহত হয়েছি। তারা ক্যাম্পাসকে অশান্ত করে মেগা প্রকল্পের টেন্ডার হাতিয়ে নেওয়ার পায়তারা করছে। আমি কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে অভিযোগ করে এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চাইবো। “
বিশ্ববিদ্যালয়ের সাময়িক দ্বায়িত্বে থাকা প্রক্টর অধ্যাপক পরেশ চন্দ্র বর্ম্মণ সাংবাদিকদের বলেন, “ছাত্রলীগের কিছু কর্মী রাকিবের বিরুদ্ধে শ্লোগান দিয়েছে। তবে আমরা তাকে নিরাপত্তার সহিত ক্যাম্পাস পার করার ব্যবস্থা করেছি।”