কুষ্টিয়ায় কোন্দল আর গ্রুপিংয়ে কর্মীদেরও ভুলে গেছে জেলা বিএনপির নেতারা। করোনাকালীন এই দুর্যোগে অসহায় কর্মীদের পাশে থাকছেন না জেলার সিনিয়র নেতৃবৃন্দ। ফলে অনেক কর্মীই ভুলতে বসেছে বিএনপিকে। ক্ষোভ আর অনাগ্রহ নিয়ে দল ছাড়ছেন কেউ কেউ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, কুষ্টিয়ায় একপক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী এবং সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন। আরেক পক্ষের নেতৃত্বে আছেন জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি অধ্যাপক শহীদুল ইসলাম ও সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কুষ্টিয়া-৩ আসন থেকে বিএনপি দলীয় মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার।
জানা গেছে, প্রায় ১ বছর আগে কুষ্টিয়ায় জেলা বিএনপির বর্তমান সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে একই পদে রেখে জেলা বিএনপির নতুন কমিটি অনুমোদন দেয় কেন্দ্রীয় কমিটি। এ কমিটিতে অপেক্ষাকৃত তরুণদের নতুন কমিটিতে স্থান দিয়ে ৩ বছর মেয়াদে ১৫১ সদস্য বিশিষ্ট পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেয়া হয়। কমিটির সভাপতি সৈয়দ মেহেদী আহমেদ রুমী, সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন, সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীমূল হাসান অপু, কোষাধ্যক্ষ জয়নাল আবেদীন প্রধান। এ কমিটিতে বেশ কিছু ত্যাগী নেতা বাদ পড়লে দলের মধ্যে অন্তকোন্দল সৃষ্টি হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকার থাকেন ঢাকায়। তারেক জিয়ার সঙ্গে জাকির সরকারের সু-সম্পর্ক থাকার কারণে তাকে দলীয় মনোনয়ন দেয়া হয়। জাকির সরকার মাঠে থাকে না, জনগণের কাছেও যায়না। তার কোনো কার্যক্রম নেই। তিনি অতিথি পাখির মতো আসেন কিন্তু সংসদ নির্বাচনে জাকির সরকারকে মনোনয়ন দেয়া হয়। এতে করে প্রকাশ্যে না হলেও দলের মধ্যে অন্তঃকোন্দল সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ কমিটিতে ত্যাগী নেতা বাদ পড়ে। এতে কর্মীদের মনে ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। সর্বশেষ কমিটিতে কারা রয়েছেন, তা তৃণমূলের অনেক কর্মীরাই জানে না। সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম নেই। কর্মীদেরে মধ্যে নেতৃত্বে অসন্তোষ রয়েছে।
জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট শামীমূল হাসান অপু বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে বিএনপি নেতাকর্মীরা প্রতিটি এলাকায় গরীব-অসহায়দের ত্রাণ বিতরণ করেছে। যদিও এসব ত্রাণ কাদের দেয়া হয়ে অনেকেই জানেন না।
কুষ্টিয়া জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন নতুন কমিটিতে ত্যাগী নেতারা বাদ পড়া বিষয়ে বলেন, কমিটিতে দলের ত্যাগী ও তরুণ নেতাদের মূল্যায়ন করা হয়েছে। এই কমিটি দলের নেতৃত্বে গুরুত্বপূর্ণ ও গতিশীল রাজনীতিতে ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবে।
করোনাভাইরাস মহামারিতে কার্যক্রম বিষয়ে জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ সোহরাব উদ্দিন বলেন, আমরা গরীব ও অসহায়দের মধ্যে খাবার বিতরণ করেছি, মাক্স বিতরণ করেছি। এছাড়াও ঈদের আগে শাড়ি-লুঙ্গি বিতরণ করেছি।
তবে এ বিষয়ে প্রকৌশলী জাকির হোসেন সরকারের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।