Thursday, March 28, 2024
প্রচ্ছদকুষ্টিয়াঅপরাধকুষ্টিয়া পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম

কুষ্টিয়া পৌরসভার ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতিসহ ৩ জনকে কুপিয়ে জখম

Published on

কুষ্টিয়া পৌরসভার ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি ফরিদ উদ্দিন (৬২), ইনতাজ উদ্দিন (৩৮) ও লাভলী (৩৮) বেগমকে গত ২৬ তারিখে (ঈদের পরের দিন) কুপিয়ে জখম করে প্রতিপক্ষ গ্র“পের লোকজন।

জানা যায়, এলাকায় আদিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে পরিকল্পিতভাবে ওই দিন সকাল ১০টায় জুগিয়া কদমতলা বুড়িবটতলা জামে মসজিদের সামনে আওয়ামীলীগের অনুপ্রবেশকারী বিএনপি জামাত থেকে আসা জিয়াউর রহমান জিয়া সর্দ্দার, মাসুম মালিথা, আশাদুল সর্দ্দারসহ ২০ থেকে ২৫টি মটরসাইকেলযোগে রামদা, ডাসা, লোহার রড ও আগ্নেয়াস্ত্রসহ বিভিন্ন দেশীয় অস্ত্রে সুসজ্জিত হয়ে হত্যার উদ্দেশে অতর্কিতভাবে ১৪ নং ওয়ার্ডের সভাপতি ফরিদ উদ্দিনকে এলোপাথারীভাবে কুপিয়ে জখম করে।

এছাড়াও ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক ও জুগিয়া কদমদতলা আনসার আলী মুক্তির ছেলে স্থানীয় দোকাদার ইনতাজ আলী (৩৮)কেও মারধর করে এবং তার দোকান লুট করে। এ সময় ইনতাজ আলী জীবন বাঁচাতে প্রতিবেশী লাভলী বেগমের ঘরে ঢুকে দরজা দিলে দরজার খিল ভেঙ্গে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করলে বাড়ির মালিক লাভলী বাধা দিলে তাকেও মারধর করে ঘরে ঢুকে ইনতাজকে বের করে নিয়ে আবারও তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে তার মাথায় আঘাত করে। এ সময় এদেরকে প্রাণ নাশের হুমকি দিয়ে মটরসাইকেলে উল­াস করতে করতে সন্ত্রাসীরা বের হয়ে যায়।

স্থানীয়রা ইনতাজকে উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করে। বর্তমানে সে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে। তার অবস্থায় আশংকাজনক। পরে সংবাদ পেয়ে কুষ্টিয়া জেলা পুলিশ এবং র‌্যাবের ফোর্স ঘটনাস্থলে যেয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।

এ ব্যাপারে ফরিদ উদ্দিন বাদী হয়ে কুষ্টিয়া মডেল থানায় অভিযোগ দিলেও অজ্ঞাত কারণে মামলা হচ্ছে না। এদিকে ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি কুপিয়ে জখম হওয়ার ঘটনায় থানায় মামলা না হওয়া ও পুলিশের ভুমিকা নিস্ক্রীয় হওয়ায় জনমনে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

ফরিদ উদ্দিনের মামলার এজাহার কপি থেকে জানা যায়, মাসুম মালিথা (৪৫), পিতা আনারুল মালিথা, মহিদুল ইসলাম, পিতা মুক্তার মালিথা, জিয়া সর্দ্দার (৩৮), পিং আজিজ সর্দার, রশিদ সর্দার ড্রাইভার, পিতা ভাদু সর্দ্দার, সাহাবুল মন্ডল (৩৮) ও রাশেদুল ইসলাম জয় (৪৮) উভয় পিতা কাসেম সর্দ্দার, আসাদুল সর্দ্দার (৫৫), পিতা আফিল সর্দ্দার, ইকরাম মালিথা (৩৬), পিতা মৃত কিয়ামুদ্দিন, মেহেদী হাসান, পিতা আবুল সর্দ্দার ওরফে জটু, বাপ্পী সর্দ্দার, পিতা রশিদ সর্দ্দার, সর্বসাং-জুগিয়া ১৪ নং ওয়ার্ড, কুষ্টিয়া গংদের নেতৃত্বে হামলা চালানো হয়।

এ ব্যাপারে ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সভাপতি প্রবীন নেতা ফরিদ উদ্দীন জানান, দীর্ঘদিন আমি বঙ্গবন্ধুর আদর্শ বুকে ধারণ করে দল করে আসছি। সাবেক বারখাদা ইউনিয়নে প্রথমে যুবলীগের সদস্য থেকে শুরু করে দীর্ঘ ১০ বছর ইউনিয়ন যুবলীগের পর্যায়ক্রমে বরাংবর সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব সুনামের সহিত পালন করে আসছি। বর্তমানে এই ওয়ার্ডে বেশীর ভাগ বিএনপি জামাত থেকে অনুপ্রবশকারী হওয়ার কারণে প্রকত আওয়ামীলীগ ত্যাগী নেতাকর্মীদের দল থেকে তাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে। এই অনুপ্রবশকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য থানা ও জেলা পর্যায়ের নেতাদের অনুরোধ জানাচ্ছি। যারা এই হামলা চালিয়েছে তারা প্রত্যেকেই বিএনপি জামাত থেকে আওয়ামীলীগ দলে অনুপ্রবেশ করে এই অপর্কম চালিয়ে আসছে। বিশেষ করে জিয়ার রহমান, মাসুম মালিথা, আশাদুল সর্দ্দারসহ তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।

আওয়ামীলীগের ওয়ার্ড সভাপতি ফরিদ উদ্দিন আরও জানায়, জুগিয়া কদমতলা মসজিদের সামনে আমার পৈত্রিক সূত্রে প্রাপ্ত জায়গায় আওয়ামীলীগ আঞ্চলিক কার্যালয় ও শ্রমিক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অফিস আছে এবং অফিস সংলগ্ন আমার মামাতো ভাই ইনতাজ আলীর একটি মুদির দোকান আছে। আসামীদের সহিদ দীর্ঘদিন ধরে স্থানীয় রাজনৈতিক, সামাজিক ও জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আসামীগণ পরিকল্পিতভাবে রামদা, সেনদা, বেকী, হাসুয়া, বাটাম নিয়ে আওয়ামীলীগ আঞ্চলিক কার্যালয় ও শ্রমিক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের অফিস ভাংচুর করার সময় আমি নিষেধ করি। এ সময় মাসুম মালিথা আমার কাছে থাকা একটি মোবাইল সেট ছিনিয়ে নেয়। ইনতাজ আলী ঠেকাতে আসলে আসামীরা তাকেও মারপিট করে তার দোকান ভাংচুরসহ দোকানের মালামাল, নগদ টাকা লুটপাট করে নিয়ে যায়। যার ক্ষতির পরিমাণ ১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা।

উলে­খ্য এই মামলা আসামীরা প্রকাশ্যে বলে বেড়াচ্ছে ১৪ নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মারফোত আহমেদ, ১৪ নং ওয়ার্ড শ্রমিকলীগের সভাপতি সোহেল রানা ও শহর আওয়ামীলীগের সদস্য সবুজ আহমেদ সাজুকে যেখানে পাওয়া হবে সেখানেই তাদের জবাই করা হবে বলে জানিয়েছেন ১৪নং ওয়ার্ড আওয়ামীলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শেখ মারফোত আহমেদ। বর্তমানে এই তিন নেতা চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

শেখ মারফোত আহমেদ আরও জানান, কুষ্টিয়া শহর আওয়ামীলীগের সাধারন সম্পাদক ও কুষ্টিয়া সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আতাউর রহমান আতা ভাইকে বিষয়টি অবগত করেছি। তিনি আমাদের আইনের আশ্রয় নিতে বলেছেন। আমরা আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আইনের আশ্রয় নিয়েছি।

কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফার সাথে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।

সর্বশেষ

কুষ্টিয়ায় আর্জেন্টিনা-ব্রাজিল সমর্থকদের সংঘর্ষে আহত ৭

কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় বিশ্বকাপ ফুটবলের ফাইনাল খেলা নিয়ে বাগ্‌বিতণ্ডার পর সংঘর্ষে জড়িয়ে অন্তত সাতজন...

কুষ্টিয়ায় শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানি, বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে পুলিশে সোপর্দ

কুষ্টিয়ার কুমারখালীতে পঞ্চম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে শ্লীলতাহানির মামলায় বরখাস্ত প্রধান শিক্ষককে বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর)...

কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২

কুষ্টিয়ায় পৃথক সড়ক দুর্ঘটনায় একটি শিশুসহ দু’জনের মৃত্যু হয়েছে।   বৃহস্পতিবার (১৫ ডিসেম্বর) দুপুরের দিকে...

পাসপোর্ট সংশোধনে সরকারের নতুন নির্দেশনা

এনআইডির তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট রি-ইস্যুর নির্দেশ স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জাতীয় পরিচয়পত্রে (এনআইডি) দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পাসপোর্ট...

আরও পড়ুন

কুষ্টিয়ায় ফিটকারী, রঙ, সোডা, হাইড্রোজ দিয়ে তৈরি হচ্ছে গুড় | ব্যবস্থাপকের কারাদণ্ড

কুষ্টিয়ার খোকসায় আখেঁর গুড়ের সঙ্গে মানব দেহের জন্য ক্ষতিকারক ফিটকারী, রঙ, সোডা, হাইড্রোজ ও...

ভারতীয় সিরিয়াল ‘সিআইডি’ দেখে কুষ্টিয়ার ফুল ব্যবসায়ী আবু তৈয়ব হত্যার পরিকল্পনা

কুষ্টিয়ার মিরপুরে ফুল ব্যবসায়ী আবু তৈয়ব (৫৪) হত্যার পর দ্রুততার সাথে রহস্য উদঘাটন করেছে...

কুষ্টিয়া দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় বৃদ্ধ নিহত

কুষ্টিয়ার দৌলতপুরে প্রতিপক্ষের হামলায় সরোয়ার মালিথা (৭০) নামে এক বৃদ্ধ নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায়...