করোনাভাইরাসের কারণে সংখ্যাধিক্য বন্দি কমাতে সরকার ঘোষিত সাধারণ ক্ষমার অংশ হিসেবে ২৪ বন্দিকে মুক্তি দেয়া হয়েছে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে।
শনিবার (০৯ মে) দুপুরে জেল সুপার জাকের হোসেন ও এনডিসি মুসাব্বেরুল ইসলামের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিকভাবে তাদের মুুক্তি দেয়া হয়।। লঘু দন্ডে দন্ডিত তৃতীয় ধাপে ৫৯ জন বন্দির সাজা মওকুফ করে ২৪ জন বন্দিকে মুক্তি দিয়েছে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার কতৃপক্ষ।
এর আগে প্রথম ধাপে ১৮ জন বন্দীকে মুক্তি দেয়া হয়। মুক্তি পাওয়ার প্রক্রিয়ায় আছেন আরো ৩৫ বন্দি।
কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের সুপার জাকের হোসেন জানান, করোনাভাইরাস প্রকোপের কারণে সরকার ফৌজদারি কার্যবিধির ৪০১ (১) ধারার প্রদত্ত ক্ষমতা বলে লঘুদন্ডে দন্ডিত তৃতীয় ধাপে কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে ৫৯ জন বন্দির সাজা মওকুফ করেছেন। শনিবার কুষ্টিয়া জেলা কারাগার থেকে ২৪ জন বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়। সাধারণত বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও ঈদ উপলক্ষ্যে এ সকল বন্দিকে মুক্তি দেওয়া হয়।
এ সময় জেলা প্রশাসকের ত্রাণ তহবিল থেকে প্রত্যেক কারামুক্তকে এক হাজার টাকা তাদের যাতায়াত ভাড়া হিসেবে প্রদান করা হয়েছে।
উল্লেখ্য,যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারসহ খুলনা বিভাগের ১০টি কারাগার থেকে মুক্তি পাচ্ছেন আরও ১৫৮ জন কয়েদি। এদের মধ্যে ৫ জন মহিলা ও ১৫৩ জন পুরুষ রয়েছেন। মুক্তির নির্দেশ প্রাপ্তদের তালিকায় যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারের ৪ কয়েদি রয়েছেন বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়।
এ নিয়ে খুলনা বিভাগের কারাগারগুলো থেকে তিন দফায় মুক্তি পাচ্ছেন ১৮৮ জন কয়েদি। যার মধ্যে গত শুক্রবার তৃতীয় দফায় আসা ১৫৮ জন কয়েদি মুক্তি পাবেন শনিবার। অবশ্য কোর্টের রায়ে যাদের জরিমানা করা হয়েছে তাদের মুক্তি পেতে জরিমানা পরিশোধের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।
খুলনা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স-এর দফতর থেকে জানা যায়, লঘুদন্ড পাওয়া অপরাধে সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে শুক্রবার তৃতীয় দফায় খুলনা বিভাগের ১৫৮ জনসহ দেশের ৬৮ টি কারাগার থেকে ২৩২৯ জন কারাবন্দিকে মুক্তির নির্দেশ দিয়েছে কারা অধিদফতর। এর আগে দু’দফায় খুলনা বিভাগের ১০ কারাগার থেকে ৩০ জনসহ সারা দেশ থেকে মুক্তি দেয়া হয় ৫৫৫ জনকে।
কারগারের একাধিক দায়িত্বশীল সূত্র জানিয়েছে, করোনা ঝুঁকিতে উদ্ভূত পরিস্থিতি বিবেচনায় সরকার তিন ধাপে খুলনা বিভাগের ১০টি কারাগারের ১৮৮ জনসহ সারা দেশের ৬৮ টি কারাগারের ২ হাজার ৮৮৪ বন্দিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে কারা অধিদফতর। সূত্র জানায়, কারাবন্দিদের আরও এক বা একাধিক তালিকা আসতে পারে।
এদিকে, শুক্রবার যাদের মুক্তির নির্দেশ দেয়া হয়েছে তার মধ্যে যশোর কেন্দ্রীয় কারাগার হতে তিনজন মহিলাসহ ৪ জন, কুষ্টিয়া জেলা কারাগারের একজন মহিলাসহ ৫৯ জন, সাতক্ষীরা জেলা কারাগার হতে একজন মহিলাসহ ১৭ জন, খুলনা জেলা কারাগার হতে ৫ জন, মাগুরা জেলা কারাগার হতে ৮ জন, বাগেরহাট জেলা কারাগার হতে ২১ জন, নড়াইল জেলা কারাগার হতে ১৪ জন, ঝিনাইদহ জেলা কারাগার হতে ২০ জন এবং মেহেরপুর জেলা কারাগার হতে ১০ জন রয়েছেন। এদের শনিবার মুক্তি দেয়া হয়।
প্রসঙ্গত, যারা কারা অভ্যন্তরে থাকা অবস্থায় কোনো ধরনের অন্যায় আচরণ করেননি এমন লঘুদণ্ড পাওয়া বন্দিদের তালিকা পাঠাতে বলে কারা অধিদফতর। খুুলনা বিভাগের ডিআইজি প্রিজন্স-এর দফতরের মাধ্যমে বিভাগের ১০টি কারাগারের একটি তালিকা চাওয়া হয়। সরকারের নির্দেশনার আলোকে ২ হাজার ১৯ জন কয়েদি ও হাজতির তালিকা তৈরি করে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপ বরাবর পাঠানো হয়। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায় জানায়, দু’বছরের কারাদন্ডপ্রাপ্তসহ যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্তদের মধ্যে ইতিমধ্যে যারা ২০ বছর কারাবাস অতিক্রান্ত করেছেন তাদের মুক্তির নির্দেশ সম্বলিত আরও এক বা দুটি তালিকা আসতে পারে।