কুষ্টিয়ায় হু হু করে বেড়েই চলেছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা। নতুন করে গত ২৪ ঘণ্টায় আক্রান্ত হয়েছেন ৩৬ জন। নতুন আক্রান্তের মধ্যে পুরুষ ২৫ জন, মহিলা ১১ জন। এ নিয়ে জেলায় করোনা শনাক্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ৪৯৭ জনে। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৬ জন।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার মেডিকেল কলেজের প্রদত্ত তথ্য মতে পিসিআর ল্যাবে আজ ২৫ জুন মোট ২৮২ টি স্যাম্পলের (কুষ্টিয়া ১৯৬, মেহেরপুর ৪৪, ঝিনাইদহ ৪২) মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায় ১৭ জন, কুমারখালী উপজেলায় ৮ জন, ভেড়ামারা উপজেলায় ৮ জন ও দৌলতপুর উপজেলায় ৩ জন মোট ৩৬ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে।
ঝিনাইদহ জেলায় ৮ জন ও মেহেরপুর জেলায় ২ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। খোকসা উপজেলায় টেস্টে পজিটিভ হওয়া ২ জনের ঠিকানা পাংশা, রাজবাড়ী। বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ৷
কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১৭ জনের ঠিকানা- থানাপাড়া ১ জন, কোর্টপাড়া ১ জন, জুগিয়া মংগলপাড়া ১ জন, হাউজিং বি ব্লক ১ জন, কুমারগাড়া কালীমন্দির লেন ১ জন, কাস্টম মোড় ১ জন, বিআরবি ১ জন, বড় আইলচাড়া ১ জন, মিনি মার্কেট পশ্চিমপাড়া (ফুলতলা) ১ জন, জুগিয়া বিএলটিসি পাড়া ১ জন, জগতি পোস্ট অফিসপাড়া ১ জন, মংগলবাড়িয়া বাজার ১ জন, আব্দুল আজিজ সড়ক আড়ুয়াপাড়া ১ জন, বিআরবি টাওয়ার উপজেলা মোড় ১ জন, আড়ুয়াপাড়া ২ জন ও খেজুরতলা ১ জন।
কুমারখালী উপজেলায় আক্রান্ত ৮ জনের ঠিকানা- বাড়াদি (কয়া) ১ জন, উপজেলা সাস্থ্য কমপ্লেক্স ১ জন, সুলতানপুর ১ জন, কুমারখালী পৌরসভা ১ জন, শেরকান্দি (কুমারখালী পৌরসভা) ৩ জন ও কুন্ডুপাড়া (কুমারখালী পৌরসভা) ১ জন।
ভেড়ামারা উপজেলায় আক্রান্ত ৮ জনের ঠিকানা- কুন্ডুপাড়া ২ জন, ১৬ দাগ ২ জন, নওদাপাড়া ২ জন, ধুবাইল ১ জন ও মাধবপুর ১ জন।
দৌলতপুর উপজেলায় আক্রান্ত ৩ জনের ঠিকানা- ওয়ালটন শো-রুম ১ জন, গংগারামপুর ১ জন ও জয়রামপুর ১ জন।
নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায়
আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার মোট ৫০৮২ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৪৮২৪ জনের। ৪৩২৬ জনের রেজাল্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার মোট করোনা পজিটিভ রোগী ৪৯৯ জন (৪৯৮ জনের টেস্ট কুষ্টিয়ায় করা হয়েছে এবং ১ জনের টেস্ট ঢাকায় করা হয়েছে), যার মধ্যে মোট ১২৭ জন সুস্থ হয়ে গেছেন এবং ৬ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকী ৩৬৬ জনের সবার বাসা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে। ২৫৮টি স্যাম্পলের টেস্ট রেজাল্ট এখনো পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়া জেলায় ২৫ জুন, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬৭৩ জনসহ ঢাকা/নারায়ণগঞ্জকরোনা আক্রান্ত এলাকা হতে আগত ২৫৯২ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন এবং ৪ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (২৫ জুন) এর করোনা আপডেট
বহিরাগত বাদে জেলায় আদ্যাবধি কোভিড সনাক্ত ৪৯৭ জন। বহিরাগত সনাক্ত-২।
উপজেলা ভিত্তিক রোগী-
দৌলতপুর-৬৪, ভেড়ামারা-৭২, মিরপুর-৩৬, সদর-২৩৮, কুমারখালী-৬৬, খোকসা-২১
(পুরুষ রোগী-৩৭২, নারী রোগী-১২৫)
সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ১২৭ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সুস্থ- ১২৫ জন
দৌলতপুর-২৪, ভেড়ামারা-১৭, মিরপুর-১৩, সদর-৩৯, কুমারখালী-২১, খোকসা-১১, বহিরাগত সুস্থ-২
বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৪৪ জন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ২০ জন।
মৃত- ৬ জন (কুমারখালী ১, দৌলতপুর ১, ভেড়ামারা ১, কুষ্টিয়া সদর ৩) পুরুষ ৫, মহিলা ১
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা দেশে করোনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, ৬৬টি ল্যাবে নমুনা পরীক্ষার তথ্য তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৭ হাজার ৫৮৬টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৭ হাজার ৯৯৯টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো ছয় লাখ ৭৮ হাজার ৪৪৩টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনার সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৯৪৬ জনের মধ্যে। শনাক্তের হার ২১ দশমিক ৯২ শতাংশ। ফলে শনাক্ত রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ২৬ হাজার ৬০৬ জনে।
নতুন করে যে ৩৯ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৩২ জন ও নারী ৭ জন। এ নিয়ে কোভিড-১৯-এ আক্রান্ত হয়ে দেশে মোট মারা গেলেন এক হাজার ৬২১ জন। শনাক্ত বিবেচনায় মৃত্যু হার ১ দশমিক ২৮ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও ১ হাজার ৮২৯ জন। সব মিলিয়ে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা এখন ৫১ হাজার ৪৯৫ জন। সুস্থতার হার ৪০ দশমিক ৬৭ শতাংশ।
গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত্যুবরণকারী ৩৯ জনের বয়স বিশ্লেষণে দেখা গেছে ২১ থেকে ৩০ বছরের ২ জন, ত্রিশোর্ধ্ব ১ জন, চল্লিশোর্ধ্ব ৭ জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ৯ জন, ষাটোর্ধ্ব ১২ জন, সত্তরোর্ধ্ব ৭ জন, আশি বছরের বেশি বয়সী ৭ জন এবং ৯০ বছরে বেশি বয়সী একজন রয়েছেন।
তাদের মধ্যে ১০ জন ঢাকা বিভাগের, ১০ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, ৫ জন রাজশাহী বিভাগের, ৫ জন খুলনা বিভাগের, ৩ জন ময়মনসিংহ বিভাগের, বরিশাল বিভাগে ২ জন ও রংপুরে বিভাগের ৪ জন রয়েছেন।
যে ৩৯ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে ২৮ জন হাসপাতালে এবং ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।