কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে গত ২৪ ঘন্টায় কুষ্টিয়া জেলার ১৪০ টি রিপোর্ট পাওয়া গেছে যার মধ্যে ৪৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। এটিই জেলাটিতে এ যাবতকালের আক্রান্তে সব্বোর্চ। নতুন আক্রান্তের মধ্যে পুরুষ ৩৪ জন, মহিলা ১০ জন। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত বহিরাগত বাদে ৭৮৯ জন রোগী শনাক্ত হল। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১৪ জন।
সোমবার (৬ জুলাই) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার মেডিকেল কলেজের প্রদত্ত তথ্য মতে পিসিআর ল্যাবে আজ ০৬ জুলাই মোট ৩২৯ টি স্যাম্পলের (কুষ্টিয়া ১৪০ টি, মেহেরপুরের ২৯ টি, চুয়াডাঙ্গার ১৬ টি, নড়াইল ৮৪ টি এবং ঝিনাইদহের ৬০ টি) মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ২৯ জন, কুমারখালী উপজেলায় ৫ জন, দৌলতপুর উপজেলার ৭ জন ও মিরপুর উপজেলায় ৩ জন মোট ৪৪ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। এছাড়া কুমারখালীর ১ টি ও সদরের ১ টি নমুনার ফলোআপ রিপোর্ট পজিটিভ। চুয়াডাঙ্গা জেলায় ১ জন, মেহেরপুর জেলায় ২ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ২৫ জন, নাটোরে ১ জন ও নড়াইল জেলায় ২৭ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে। বাকিগুলোর ফলাফল নেগেটিভ৷
গতকাল সনাক্ত হওয়া সদরের একজন রোগী ফলোআপ পজেটিভ হওয়ায় তাকে হিসাব থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় আক্রান্ত ২৯ জনের ঠিকানা- হরিপুর ২ জন, রাজু আহমেদ সড়ক ১ জন, পূর্ব মজমপুর ১ জন, কালিশংকরপুর ৩ জন, উজানগ্রাম ১জন, কমলাপুর ১ জন, বেলঘড়িয়া ১ জন, লুতফুর মঞ্জিল রোড ১ জন, চৌড়হাস ১ জন, বাড়াদি ১ জন, কুমারগাড়া ২ জন, মিনাপাড়া ১ জন, বড় আইলচারা ১ জন, ঢাকা ঝালুপাড়া ১ জন, হাউজিং ব্লক বি ১ জন, আড়ুয়াপাড়া ১ জন, এনএস রোড ১ জন, গোসালারোড ৩ জন, কোর্টপাড়া ২ জন, সকাল সন্ধ্যা গলি ৩ জন।
দৌলতপুর উপজেলায় আক্রান্ত ৭ জনের ঠিকানা- আল্লারদরগা ১ জন, মহিষকুণ্ডি ১ জন, পুলিশ ক্যাম্প খলিশাকুণ্ডি ৫ জন।
কুমারখালী উপজেলায় আক্রান্ত ৫ জনের ঠিকানা- অগ্রণী ব্যাংক ১ জন, কুশলিবাস ১ জন, শিলাইদহ ১ জন, বাঁশগ্রাম ১ জন, হাউজিং ব্লক ডি ১ জন(অবস্থান কুমারখালী)।
মিরপুর উপজেলায় আক্রান্ত ৩ জনের ঠিকানা- কল্যাণপুর ১ জন, নওয়াপাড়া ২ জন।
নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার মোট ৬৪০৩ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৬২৯০ জনের। ৫৪৯৯ জনের রেজাল্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে। কুষ্টিয়ার মোট করোনা পজিটিভ রোগী ৭৯২ জন (৭৯১ জনের টেস্ট কুষ্টিয়ায় করা হয়েছে এবং ১ জনের টেস্ট ঢাকায় করা হয়েছে), যার মধ্যে মোট ৩৭০ জন সুস্থ হয়ে গেছেন এবং ১৪ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকী ৪০৮ জনের সবার বাসা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে। ১১৩টি স্যাম্পলের টেন্ট রেজাল্ট এখনো পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়া জেলায় ০৬ জুলাই, ২০২০ তারিখ পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬৭৩ জনসহ ঢাকা/নারায়ণগঞ্জ/করোনা আক্রান্ত এলাকা হতে আগত ২৫৯২ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন এবং ৪ জনের প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমানে ৪৫০ জন আইসোলেশনে আছেন।
সোমবার (৬ জুলাই) এর করোনা আপডেট
বহিরাগত বাদে জেলায় আদ্যাবধি কোভিড সনাক্ত ৭৮৯ জন। বহিরাগত সনাক্ত-২।
উপজেলা ভিত্তিক রোগী-
দৌলতপুর-১০৫, ভেড়ামারা-৮৭, মিরপুর-৪৭, সদর-৪২৩, কুমারখালী-১০০, খোকসা-২৭
(পুরুষ রোগী-৫৭৯, নারী রোগী-২১০)
মৃত- ১৪ জন (কুমারখালী -৩, দৌলতপুর-১, ভেড়ামারা-১, কুষ্টিয়া সদর-৯ ) পুরুষ ১৩, মহিলা ১ জন
সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ৩৬৯ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সুস্থ- ৩৬৭ জন
দৌলতপুর-৫৫, ভেড়ামারা-৫৮, মিরপুর-২৬, সদর-১৬৮, কুমারখালী-৪৪, খোকসা-১৬, বহিরাগত সুস্থ-২
বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৭২ জন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৪ জন।
গতকাল কুষ্টিয়া সদরের কাস্টম মোড়ের বাসিন্দা আমজাদ হোসেন (৩৫) নামের বি আর বি’র এক কর্মকর্তা করোনায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেছেন।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা দেশে ৬৮টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার করোনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৫ হাজার ২০১টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৪ হাজার ২৪৫টি। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো আট লাখ ৬০ হাজার ৩০৭টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ২০১ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৬৫ হাজার ৬১৮ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৪৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে দুই হাজার ৯৬ জনের। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও তিন হাজার ৫২৪ জন। এতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৭৬ হাজার ১৪৯ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যারা মারা গেছেন তাদের ৩৩ জন পুরুষ, ১১ জন নারী। ১৭ জন ঢাকা বিভাগের, ১১ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, তিনজন রাজশাহী বিভাগের, দুজন খুলনা বিভাগের, চারজন বরিশাল বিভাগের, তিনজন সিলেট বিভাগের, দুজন রংপুর বিভাগের এবং দুজন ময়মনসিংহ বিভাগের। ৩৫ জন মারা গেছেন হাসপাতালে এবং ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে বাসায়।
সোমবারের বুলেটিনে জানানো হয়, গত ২৪ ঘণ্টায় নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ২২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। এ পর্যন্ত নমুনা পরীক্ষার তুলনায় রোগী শনাক্তের হার ১৯ দশমিক ২৫ শতাংশ। রোগী শনাক্ত বিবেচনায় সুস্থতার হার ৪৫ দশমিক ৯৮ এবং মৃত্যুর হার ১ দশমিক ২৭ শতাংশ।