কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের পিসিআর ল্যাব থেকে গত ২৪ ঘন্টায় কুষ্টিয়া জেলার ১৮০ টি রিপোর্ট পাওয়া গেছে যার মধ্যে ২৪ জনের শরীরে করোনাভাইরাসের (কোভিড-১৯) সংক্রমণ শনাক্ত হয়েছে। নতুন আক্রান্তের মধ্যে পুরুষ ১৫ জন, মহিলা ৯ জন। এ নিয়ে জেলায় এ পর্যন্ত বহিরাগত বাদে ৬২২ জন রোগী শনাক্ত হল। এ পর্যন্ত মারা গেছেন ১০ জন।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার সিভিল সার্জন ডা. এইচ এম আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা যায়, কুষ্টিয়ার মেডিকেল কলেজের প্রদত্ত তথ্য মতে পিসিআর ল্যাবে আজ ৩০ জুন মোট ৩৭৪ টি স্যাম্পলের (কুষ্টিয়া ১৮০ টি, নড়াইল ৪৭ টি , মেহেরপুরের ৩০ টি, চুয়াডাঙ্গার ৪৬ টি এবং ঝিনাইদহের ৭১ টি) মধ্যে কুষ্টিয়া জেলার সদর উপজেলায় ১৬ জন, কুমারখালী উপজেলায় ১ জন, মিরপুর উপজেলায় ১ জন ও ভেড়ামারা উপজেলায় ৬ জন। মোট ২৪ জন নতুন করোনা রোগী সনাক্ত হয়েছে (এবং ২ টি ফলোয়াপ পজেটিভ)।
নড়াইল জেলায় ১৯ জন, ঝিনাইদহ জেলায় ১৪ জন, চুয়াডাঙ্গা জেলায় ৭ জন ও মেহেরপুর জেলায় ২ জন নতুন রোগী সনাক্ত হয়েছে, বাকি রিপোর্ট নেগেটিভ।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১৬ জনের ঠিকানা- জিয়ারখী ১ জন, চৌড়হাস ৬ জন, সি ব্লক হাউজিং ১ জন, কুমারগাড়া ১ জন, মিনাপাড়া ১ জন, হরিপুর ২ জন, ডি ব্লক হাউজিং ১ জন, থানাপাড়া ১ জন, হসপিটাল কোয়ার্টার ১ জন, কোর্টপাড়া ১ জন।
মিরপুর উপজেলায় আক্রান্ত জনের ঠিকানা- মিরপুর ১ জন,
ভেড়ামারা উপজেলায় আক্রান্ত ৬ জনের ঠিকানা- নওদাপাড়া ২ জন, কলেজপাড়া ১ জন, গোলাপনগর ২ জন, চর দামুড়দিয়া ১ জন।
কুমারখালী উপজেলায় আক্রান্ত ১ জনের ঠিকানা- উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
নোভেল করোনা ভাইরাস (কোভিড-১৯) এর প্রাদুর্ভাব মোকাবেলায় আজ পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলার মোট ৫৭২৫ জনের স্যাম্পল সংগ্রহ করা হয়েছে, এর মধ্যে রিপোর্ট পাওয়া গেছে ৫৫৫৬ জনের। ৪৯৩৩ জনের রেজাল্ট নেগেটিভ পাওয়া গেছে৷ কুষ্টিয়ার মোট করোনা পজিটিভ রোগী ৬২৪ জন (৬২৩ জনের টেস্ট কুষ্টিয়ায় করা হয়েছে এবং ১ জনের টেস্ট ঢাকায় করা হয়েছে), যার মধ্যে মোট ২৩২ জন সুস্থ হয়ে গেছেন এবং ১০ জন মৃত্যুবরণ করেছেন। বাকী ৩৮৩ জনের সবার বাসা লকডাউনের আওতায় আনা হয়েছে এবং আক্রান্ত রোগীদের আইসোলেশন নিশ্চিত করা হয়েছে। ১৬৯টি স্যাম্পলের টেস্ট রেজাল্ট এখনো পাওয়া যায়নি। কুষ্টিয়া জেলায় ৩০ জুন পর্যন্ত বিদেশ ফেরত ৬৭৩ জনসহ ঢাকা/নারায়ণগঞ্জ করোনা আক্রান্ত এলাকা হতে আগত ২৫৯২ জনের হোম কোয়ারেন্টাইন নিশ্চিত করা হয়েছে। বর্তমানে ৩৮৯ জন আইসোলেশনে আছেন।
মঙ্গলবার (৩০ জুন) এর করোনা আপডেট
বহিরাগত বাদে জেলায় আদ্যাবধি কোভিড সনাক্ত ৬২২ জন। বহিরাগত সনাক্ত-২।
উপজেলা ভিত্তিক রোগী-
দৌলতপুর-৮০, ভেড়ামারা-৮১, মিরপুর-৪৩, সদর-৩১৭, কুমারখালী-৭৯, খোকসা-২২
(পুরুষ রোগী-৪৫৯, নারী রোগী-১৬৩)
সুস্থ হয়ে ছাড় পেয়েছেন ২৩২ জন।
উপজেলা ভিত্তিক সুস্থ- ২৩০ জন
দৌলতপুর-২৯, ভেড়ামারা-৩৭, মিরপুর-১৮, সদর-১০১, কুমারখালী-৩২, খোকসা-১৩, বহিরাগত সুস্থ-২
বর্তমানে হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন ৩৪৭ জন
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ৩৩ জন।
মৃত- ১০ জন (কুমারখালী -২, দৌলতপুর-১, ভেড়ামারা-১, কুষ্টিয়া সদর-৬ ) পুরুষ ৯, মহিলা ১ জন
গতকাল জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মারা যাওয়া চৌড়হাস স্টেডিয়ামপাড়ার বাসিন্দা আলি আহম্মেদ লিটন (৪৮) কোভিড-১৯ পজেটিভ।
এদিকে স্বাস্থ্য অধিদফতরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. নাসিমা সুলতানা দেশে ৬৬টি ল্যাবরেটরিতে নমুনা পরীক্ষার করোনার চিত্র তুলে ধরে বলেন, করোনাভাইরাস শনাক্তে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও ১৮ হাজার ৮৬৩টি নমুনা সংগ্রহ করা হয়। পরীক্ষা করা হয় ১৮ হাজার ৪২৬টি নমুনা। এ নিয়ে দেশে মোট নমুনা পরীক্ষা করা হলো সাত লাখ ৬৬ হাজার ৪৬০টি। নতুন নমুনা পরীক্ষায় করোনা শনাক্ত হয়েছে আরও তিন হাজার ৬৮২ জনের মধ্যে। ফলে শনাক্ত করোনা রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল এক লাখ ৪৫ হাজার ৪৮৩ জনে। আক্রান্তদের মধ্যে মারা গেছেন আরও ৬৪ জন। এ নিয়ে মোট মৃত্যু হয়েছে এক হাজার ৮৪৭ জনের। এছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন আরও এক হাজার ৮৪৪ জন। এতে মোট সুস্থ রোগীর সংখ্যা দাঁড়াল ৫৯ হাজার ৬২৪ জনে।
গত ২৪ ঘণ্টায় যে ৬৪ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে পুরুষ ৫২ জন এবং নারী ১২ জন। এদের মধ্যে ২১ থেকে ৩০ বছরের সাতজন, ত্রিশোর্ধ্ব ছয়জন, পঞ্চাশোর্ধ্ব ২১ জন, ষাটোর্ধ্ব ১৬ জন, সত্তরোর্ধ্ব ১১ জন, আশি বছরের বেশি বয়সী তিনজন রয়েছেন। ৩১ জন ঢাকা বিভাগের, ১২ জন চট্টগ্রাম বিভাগের, সাতজন রাজশাহী বিভাগের, সাতজন খুলনা বিভাগের এবং দুজন করে সিলেট, বরিশাল ও ময়মনসিংহ বিভাগের রয়েছেন। এদের মধ্যে ৫১ জন হাসপাতালে এবং ১৩ জন বাসায় মারা যান।
গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে আরও ৪৪৯ জনকে এবং এ পর্যন্ত আইসোলেশনে নেয়া হয়েছে ২৬ হাজার ৫৮৭ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় আইসোলেশন থেকে ছাড় পেয়েছেন ৫৪৪ এবং এ পর্যন্ত ছাড় পেয়েছেন ১১ হাজার ৪৪০ জন। বর্তমানে আইসোলেশনে রয়েছেন ১৫ হাজার ১৪৫ জন।
গত ২৪ ঘণ্টায় হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে দুই হাজার ৫৪২ জনকে, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইনে নেয়া হয়েছে তিন লাখ ৬৩ হাজার ৮৬৬ জনকে। গত ২৪ ঘণ্টায় কোয়ারেন্টাইন থেকে ছাড় পেয়েছেন দুই হাজার ৮৩৪ জন, এ পর্যন্ত কোয়ারেন্টাইন থেকে মোট ছাড় পেয়েছেন দুই লাখ ৯৯ হাজার ১৯৯ জন। বর্তমানে হোম ও প্রাতিষ্ঠানিক মিলিয়ে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন ৬৪ হাজার ৬৬৭ জন।