কুষ্টিয়ার কবুরহাট এলাকায় ৩ দিন ব্যাপ গ্রামীণ ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
কবুরহাট স্থানীয় এলাকাবাসীর আয়োজনে ৩ দিন ব্যাপী এ লাঠিখেলায় কবুরহাট, দোস্তাপাড়া, খাজানগর এলাকার মানুষের মাঝে বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছিল কবুরহাট ‘কদম তলা’র লাঠিয়াল বাহিনী।
আবহমানকাল ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন এলাকায় এক সময় বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে এই লাঠিখেলা। কিন্তু কালের বির্বতনে মানুষ ভুলতে বসেছে এসব বিনোদন। বাংলার ঐতিহ্যের অংশ এ বিনোদন নিয়ে মানুষের অনেক আগ্রহ রয়েছে। লাঠি খেলার নতুন করে কোন সংগঠন বা দল তৈরি না হওয়ায় এই খেলা আজ হারিয়ে যেতে বসলেও গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী লাঠি খেলা ধরে রাখতে চেষ্টা করে যাচ্ছে কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট কদমতলা লাঠিয়াল দল।
খেলায় ঢোল আর লাঠির তালে তালে নাচা-নাচি, অন্য দিকে প্রতিপক্ষের হাত থেকে আত্মরক্ষার কৌশল অবলম্বনের প্রচেষ্টা সম্বলিত টান টান উত্তেজনার এ খেলায় উপস্থিত দর্শকরা যেন বিনোদনের প্রাণ ফিরে পেয়েছিল। ঢাকের বাজনার সাথে মার্শাল আর্ট আর লাঠি এই দুইয়ের সংমিশ্রণে লাঠি খেলায় অনুশীলনকারী লাঠিয়াল বাহিনীকে বাংলার ঐতিহ্য ধরে রাখার জন্য সাধুবাদ জানান উপস্থিত অসংখ্য নারী পুরুষ দর্শক । প্রত্যেক খেলোয়ার তাদের নিজ নিজ লাঠি দিয়ে রণকৌশল প্রদর্শন করায় তাদের মধ্যে কেউ কেউ উপস্থিত দর্শকদের কাছে বকশিশ পেয়েছেন।
গত রোববার সকালে এই লাঠিয়াল দল তাদের লাঠিখেলা প্রদর্শন শুরু করে। দলটি কবুরহাট কদমতলা, মাদ্রাসাপাড়া, দোস্তপাড়া, সদ্দারপাড়ায় লাঠিখেলা প্রদর্শন করে এবং মঙ্গলবার রাতে খাজানগর এফ এম এনামুল হকের ধান চাতালে লাঠিখেলা প্রদর্শন শেষে এক প্রীতিভোজের মধ্যে দিয়ে এ খেলার শেষ হয়।
এব্যাপারে খেলার আয়োজক প্রবীণ মাতব্বর ইব্রাহীম শেখ, আরশেদ আলী বলেন, এলাকাবাসীদের মাঝে পুরানো ঐতিহ্য তুলে ধরার জন্যই আমাদের এই আয়োজন। নতুন দল কতোটুকু বিনোদন দিতে পেরেছে তা নির্ণেয় করেছে দর্শক। তবে আগামীতে আরো ভালো লাঠিখেলা উপহার দেয়ার প্রত্যাশা ব্যক্ত করেন তারা।
কুষ্টিয়া সদর উপজেলার কবুরহাট “কদমতলা” লাঠিয়াল দলের সরদার শের আলী, কোরবান আলী, আতিপ মন্ডল, ফজলুর রহমান ও জানার হোসেন বলেন, গ্রামীণ সংস্কৃতির বহু পুরাতন ঐতিহ্যের এই লাঠি খেলা আজ হারিয়ে যেতে বসেছে। আমাদের কুষ্টিয়ার বেশ কিছু এলাকায় এই খেলাটি এখনো বেশ জনপ্রিয়। আবহমানকাল ধরে কুষ্টিয়ার বিভিন্ন জেলায় এক সময় বিনোদনের খোরাক জুগিয়েছে এই লাঠি খেলা। কিন্তু কালের বির্বতনে মানুষ আজ ভুলেই যেতে বসেছে ঐতিহ্যবাহী এই খেলাটি। তাই আমাদের লাঠি খেলার এই ঐতিহ্য ধরার চেষ্টা মাত্র।