কুষ্টিয়ায় পৃথক স্থান থেকে দুইজনের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। বুধবার কুষ্টিয়া সদর এবং কুমারখালীর পৃথক স্থান থেকে এ দুটি মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহতরা হলেন, সদর উপজেলার ইবি থানার উজানগ্রাম ইউনিয়নের গজনবীপুর গ্রামের মৃত যাত্রা মন্ডলের ছেলে শামীম আলী (৩৬) এবং কুমারখালী উপজেলার কয়া ইউনিয়নের মালিথাপাড়া এলাকায় জিয়ারুল ইসলামের মেয়ে ৭ম শ্রেণির শিক্ষার্থী জয়া (১৬)।
পৃথক দুটি ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধারের বিষয়টি নিশ্চিত করেন স্ব-স্ব থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
কুমারখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মজিবুর রহমান জানান, বুধবার সকালে স্থানীয়দের দেয়া খবরের ভিত্তিতে কয়া এলাকায় তার বাড়ির পাশের একটি আমগাছ থেকে থেকে জয়ার ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়। মরদেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে। তবে এটি হত্যা নাকি আত্মহত্যা ময়নাতদন্ত না আসা পর্যন্ত বলা যাচ্ছে না।
মেয়েটির পারিবারিক ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা যায়, একই এলাকার জসিম মালিথার ছেলে লিমন মালিথার সাথে মেয়েটির সর্ম্পক ছিল। বিষয়টি উভয় পরিবারই জানতো।
নিহত জয়ার বাবা জিয়ারুল ইসলাম অভিযোগ করেন, তার মেয়ে সন্ধ্যায় বাড়ি থেকে ব্যবহৃত কাপড়-চোপড় সহ একটি ব্যাগ নিয়ে বের হয়ে যায়। এটা তারা যখন জানতে পারে তখন রাত ১ টা। এসময় তারা লিমনের বাড়িতে খুঁজতে গিয়ে লিমনকে বাড়িতে দেখতে পান। তার মেয়ে কোথায় জিজ্ঞেস করলে লিমন জানেনা বলে জানায়। পরবর্তীতে খোঁজাখুঁজি করেও তারা জয়াকে উদ্ধার করতে ব্যর্থ হয়। ভোর রাতে তার বাড়ির পিছনে আম গাছের সাথে ঝুলন্ত লাশ পাওয়া যায়।
জিয়া দাবী করেন লিমন তার মেয়েকে মেরে গাছে ঝুলিয়ে রেখেছে। পাশেই জয়ার ব্যবহৃত পোষাকের ব্যাগটি পাওয়া যায়।
অপরদিকে ছেলের বাবা জসিম মালিথা জানায়, জয়ার সাথে তার ছেলের প্রেমের সম্পর্ক ৭/৮ মাস পূর্বে জানতে পেরে সে মেয়ের বাবা জসিমের নিকট বিয়ের প্রস্তাব দেয়। জয়া সপ্তম শ্রেণীতে পড়া অবস্থায় বর্তমানে লেখাপড়া বাদ দিয়েছে। কিন্তু তার বয়স (১৬) বছর হওয়ায় কিছুদিন অপেক্ষা করে তার ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ে দেবার কথা বললে এতেও জিয়া বিয়ে দিতে অসম্মতি জানায়।
জসিম জানায়, ভোর রাতে মেয়ের বাবা সহ কয়েকজন তার বাড়িতে যায় ও তার মেয়ের না পাওয়ার বিষয়টি তাকে জানায়। সে সময় লিমন তার ঘরে ঘুমিয়ে ছিলো। জসিম জানায় বিয়ে দিতে রাজি না হওয়ার তার মেয়ে আত্মহত্যা করে থাকতে পারে।
অপরদিকে, কুষ্টিয়ার সদর উপজেলার গজনবীপুর গ্রামের মৃত যাত্রা মন্ডলের ছেলে মহিষ ব্যবসায়ী শামিম (৩৬) এর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় থানা পুলিশ।
ইবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জাহাঙ্গীর আরিফ জানান, বিত্তিপাড়া লালন তৈল পাম্পের অদুরে একটি বাঁশবাগান থেকে শামীম আলীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তিনি মহিষের ব্যাপারি ছিলেন। তবে ব্যবসায়ীক কোন ঝামেলার কারণে তাকে হত্যা করে হতে পারে বলেও ধারণা করেন তিনি। তার মরদেহ উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।