কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের নদীর কুল মাঠপাড়া এলাকার গৃহবধূ আদরি। দুই সন্তান ও স্বামী নিয়ে সুখের সংসার। হঠাৎ এক ঝড়ে সব এলোমেলো হয়ে গেল। গত সোমবার রাতে পার্শ্ববর্তী মুক্তার আদরির পরকীয়ার অপবাদ দেয় একই এলাকার শামীম, আল-আমিন ও রাজিব। এই অপবাদের প্রতিবাদ করতে গিয়ে অনেক অপমান সয়তে হয় আদরির। তাই গত শুক্রবার গভীর রাতে গলায় ফাঁস নিয়ে আত্মহত্যা করে আদরি।
আদরির স্বামী কামাল জানান, গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আমাকে আদরি বলে তুমি বাইরের লোকের কথা শুনে আমাকে বকাবকি করলে। আমার কাছে কিছু শুনলে না। গত সোমবার রাতে শামীম, আল-আমিন ও রাজিব আমাকে রুমে আটকে রেখে জোর বলে আমরা যা বলতে বলবো তাই বলবি। না হলে এক সপ্তাহের মধ্যে এই গ্ৰাম ছেড়ে চলে যাবি। পরে আমি ওদের শিখিয়ে দেওয়া কথা বলি। ওরা আমার সব গহনা খুলে নিয়ে যায়। আমি ওদের ভয়ে বাড়ি বিক্রয় করে এখান থেকে চলে যেতে চেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা হলো না আদরি সেই রাতেই গলায় ফাঁস লাগিয়ে আত্মহত্যা করে দুনিয়া ছেড়ে চলে গেল।
এদিকে মুক্তারের মা বলেন, আমার একটা ফ্রীজ আদরির কাছে বিক্রয় করেছিলাম। সেই টাকা আনতে যায় মুক্তার। কিন্তু ষড়যন্ত্র করে শামীম, আল-আমিন ও রাজিব আমার ছেলেকে ফাঁসিয়েছে। মুক্তার এখন ভয়ে বাড়ি ছাড়া।
মুক্তার, শামীম আল-আমিন ও রাজিব এর বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি তাদের।
মুক্তার হোসেন কুষ্টিয়া সদর উপজেলার হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের ফজর আলীর ছেলে, রাজীব বিশ্বাস একই এলাকার সাদেক হোসেনের ছেলে, আলামিন একই এলাকার রমজান ফকিরের ছেলে ও শামীম হোসেন একই এলাকার হামিদুল ইসলামের ছেলে।
এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, আদরিকে ভিডিও ফাঁস করার হুমকি দেওয়ার জন্য আদরি আত্মহত্যা করেছে। গতকাল আদরি আত্মহত্যার কথা শুনে সবাই বাড়ি থেকে পালিয়ে গেছে। এদের পরিবারের সদস্যরা জানান, গত কাল থেকে এরা কোথায় গেছে আমরা জানি না।
কুষ্টিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ গোলাম মোস্তফা জানান, এই ঘটনায় ৪ জনের বিরুদ্ধে আত্মহত্যার প্ররোচনা মামলা হয়েছে। আসামিদের ধরতে অভিযান চলছে।