কুষ্টিয়ায় প্লাইউড কারখানায় আগুনে চারজন শ্রমিক দগ্ধ হয়েছেন। তাঁদের কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দিয়ে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে পাঠানো হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত তিনটার দিকে শহরের বারখাদা এলাকায় উডল্যান্ড প্লাইউড প্রসেসিং কোম্পানির এমডিএফ সেকশনে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
দগ্ধ শ্রমিকেরা হলেন, বারখাদা ও জুগিয়া এলাকার সাজেদুল ইসলাম (২২), রায়হান আলী (১৮), চান্নু মিয়া (১৮) মেহেদী হাসান (১৭)।
পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস ও হাসপাতাল সূত্র জানায়, কারখানায় রাত ১০টা থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত রাতের পালায় কয়েকজন শ্রমিক কাজ করছিলেন। রাত তিনটার দিকে হঠাৎ কারখানার ভেতর বিকট শব্দ হয়। এরপর পরই আগুন লেগে যায়। সঙ্গে সঙ্গে চারজন শ্রমিক পুড়ে গুরুতর আহত হন। কারখানার লোকজন তাঁদের উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগের নেন।
খবর পেয়ে সেখানে ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা গিয়ে আগুন নেভানোর কাজ শুরু করেন। এর আগে কারখানার নিজস্ব ব্যবস্থাপনায় আগুন নেভানোর চেষ্টা চলছিল। ফায়ার সার্ভিস ও কারখানার লোকজন সকাল আটটা পর্যন্ত টানা ৫ ঘণ্টা চেষ্টা করে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। হাসপাতালের চারজন শ্রমিকের অবস্থার অবনতি হলে রাতেই তাঁদের ঢাকায় পাঠানো হয়।
কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের জ্যেষ্ঠ স্টেশন কর্মকর্তা আলী সাজ্জাদ বলেন, ‘আমরা পৌঁছানোর আগেই চারজন দগ্ধ শ্রমিককে হাসপাতালে নেওয়া হয়েছিল। ৫ ঘণ্টা কাজ করার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত।’
উডল্যান্ড প্লাইউড প্রসেসিং কোম্পানির এডমিন তুহিনুল ইসলাম জানান, উডল্যান্ড কারখানায় রাতের শিফটে কাজ চলছিলো। বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সুত্রপাত ঘটে। এসময় আমাদের শ্রমিকরা আগুন নেভাতে গিয়ে ৪ জন দগ্ধ হয়। তাদের রাতেই ঢাকায় চিকিৎসার জন্য পাঠানো হয়েছে। পরে ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তারা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
সেখানকার কর্মরত কয়েকজন শ্রমিক অভিযোগ করে বলেন, এরআগে সরকারী ছুটি দেওয়ায় আজ শুক্রবারেও আমাদের দিয়ে কাজ করিয়ে পুষিয়ে নেওয়া হয়।
উডল্যান্ড প্লাইউড প্রসেসিং কারখানার এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, কারখানায় রাতের পালায় কাজ চলছিল। কাঠের উচ্ছিষ্ট গুঁড়া জমা রাখার জায়গা থেকে আগুনে সূত্রপাত। চারজন শ্রমিক আগুন নেভাতে গিয়ে দগ্ধ হন। তাঁদের রাতেই ঢাকায় পাঠানো হয়েছে। ফায়ার সার্ভিসে খবর দিলে তাঁরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
আজ শুক্রবার দুপুর ১২টায় কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম মোস্তফা বলেন, ‘কারখানায় আছি। খোঁজখবর নিচ্ছি। বিস্তারিত পরে জানাতে পারব।’
স্থানীয়রা অভিযোগ করে জানান, আবাসিক এলাকায় এ কারখানা থাকায় আমাদের বসবাসের অনুপযোগী হয়ে উঠেছে। কারখনার নিগত ছাই ও ধোয়ায় আচ্ছাদিত থাকে পুরো এলাকা। এর আগে আমরা এলাকাবাসী পরিবেশ অধিদপ্তর, জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্টদের কাছে গণপিটিশন দিয়েও কোন লাভ হয়নি।