কুষ্টিয়া সদর থানার মাদক মামলায় তিনজনের এবং দৌলতপুর থানার পৃথক নারী পাচার মামলায় একজনের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন বিশেষ আদালতের বিচারক মুন্সী মো. মশিয়ার রহমান জনাকীর্ণ আদালতে আসামিদের উপস্থিতিতে এই রায় ঘোষণা করেন।
মাদক মামলায় যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত আসামিরা হলেন- সদর উপজেলার মজমপুর (ঝাউতলা গলি)র আজাহার আলীর ছেলে মহিরুল ওরফে মহিদুল (৫০), মেহেরপুরের গাংনী উপজেলার কাজীপুর গ্রামের বিল্লাল হোসেনের ছেলে শিশির ওরফে নাহিদ (৩৫) এবং ফজল মন্ডলের ছেলে কাজল (৩০)।
এছাড়াও এমামলায় আসামি মহিদুলের স্ত্রী রানী খাতুন (৩০) এবং পলাতক আসামি কাজীপুর গ্রামের গিয়াস উদ্দিনের ছেলে হাসানকে পাচঁ বছরের কারাদণ্ডসহ অর্থদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন আদালত।
পৃথক দৌলতপুর থানার নারী পাচার মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত হলেন- উপজেলার চামনাই আল্লারদর্গা গ্রামের বাদল মন্ডলের ছেলে মো. সেলিম রেজা (৩৮)কে যাবজ্জীবনসহ এক লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, ২০১৭ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় র্যাব-১২, সিপিসি-১ কুষ্টিয়া ক্যাম্পের অভিযানিক দল আসামি মহিরুল ওরফে মহিদুলের নিজ বাড়িতে অভিযানকালে ৫৪২ বোতল ফেনসিডিল এবং ১৩৯০ পিস ইয়াবাসহ মাদক ক্রয়-বিক্রয়রত আসামিদের আটক করে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে র্যাব সদস্য ডিএডি মনিরুজ্জামান বাদী হয়ে মামলা দায়েরসহ কুষ্টিয়া মডেল থানায় সোপর্দ করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ১৮ এপ্রিল আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে পুলিশ।
এছাড়া ২০১৫ সালের ১২ এপ্রিল সন্ধ্যা ৭টায় দৌলতপুর উপজেলার আল্লারদর্গা গ্রামের দিনমজুর আব্দুল করিমের মেয়ে রিতা আক্তারকে (১৯) চাকরি দেওয়ার প্রলোভন দেখিয়ে আসামি সেলিম রেজা ওই তরুণীকে ভারতে পাচার করেন।
এ ঘটনায় ওই তরুণীর বাবা বাদী হয়ে দৌলতপুর থানায় মানব পাচার প্রতিরোধ আইন ২০১২র ৬(২) ধারায় মামলা করেন দৌলতপুর থানায়। মামলাটি তদন্ত শেষে ২০১৫ সালের ২৯ অক্টোবর আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ।
আদালতের সরকারি কৌঁসুলি অ্যাডভোকেট অনুপ কুমার নন্দী জানান, কুষ্টিয়া মডেল থানার চিহ্নিত এই মাদক চক্রের মামলায় আদালতের রায়ের মধ্যদিয়ে প্রমাণ হল- মাদক চক্রের সঙ্গে যারাই জড়িত থাক তাদের পাড় পাওয়ার কোনো পথ নেই।
পৃথক নারী পাচার মামলায় আসামি সেলিম রেজার যাবজ্জীবনসহ এক লাখ টাকা জরিমানা ধার্যসহ তা আসামির স্থাবর-অস্থাবর সম্পত্তি ক্রোক ও নিলাম থেকে পাওয়া টাকা বাদীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদানে আদালত নির্দেশ দিয়েছেন বলে নিশ্চিত করেন ভারপ্রাপ্ত সরকারি কৌঁসুলি সাইফুল ইসলাম বাপ্পী।