এইতো সেদিনের কথা, পাড়া মহল্লায় বন্ধদের সাথে আড্ডাই মেতে কখনো কারও গাছের ডাব চুরি, কুল গাছে ঢিল ছোঁড়া, কখনোবা নিজের বাড়ীর মুরগী চুরি করে অন্য বন্ধুর বাড়ীতে রাতের পিকনিক এসবই যেন এখন স্মৃতির পাতায় ভেসে বেড়াই । সেই সব দিন এখন আর নেই। তখনকার সেসময় বন্ধুদের হৈ হুল্লোড় আড্ডায় ভেসে যেতো যেন সকল ক্লান্তি।
কখনো কখনো এক জম্পেশ আড্ডায় দায়িত্বকান্ডহীন ঘটনার সুত্র ধরে মা ও মায়ের সমতুল্য ভাবিদের বকুনী ও শাসনটা ছিলো যেন মধুর। কিন্তু এখনকার এসব শাসন মানেই হিংসা আর ক্রোধ, যা বর্তমানে কখনো বা ভয়াহতায় রুপ নেয়। কিন্তু সেদিনের সেই স্মৃতিচারন চোখের সামনে ভেসে উঠেছিলো চিত্রনাট্যকার এবং পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলুর একটি নাটকের শ্যুটিং স্পটে গিয়ে।
প্রায় আড়াইশ পর্বের ধারাবাহিক নাটকটি কুষ্টিয়ার মফস্বল এলাকার বিভিন্ন লোকেশনের চিত্রায়িত হচ্ছে। নাটকটির নাম” প্রিয় দিন, প্রিয় রাত”। রিপন নবীর বাগানবাড়ী ‘হাসনাবাগে’ রবিবার দুপুরে শ্যুটিং স্পটে গিয়ে দেখা গেলো নাটকের শ্যুটিং চলছে। নাট্যকার সালাউদ্দিন লাভলু শিল্পীদের বিভিন্ন কলাকৌশল বুঝিয়ে দিচ্ছেন।
এর কিছুটা দুরেই অনেকটাই আগ্রহ নিয়ে সারি সারি দর্শক রয়েছে শ্যুটিং এর চিত্রায়িত দৃশ্য দেখার অপেক্ষায় । রিপা নামের এক দর্শক জানালেন, আমাদের কুষ্টিয়ায় নাটকের শ্যুটিং হচ্ছে জেনে আমি গতকাল এখানে এসেছিলাম। কিন্তু তারা ভেতরে শ্যুটিং করছিলো আমরা দুর থেকে দেখেছি। মাঝে মাঝে তাদের কাছে গিয়েও দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। টিভিতে তো সালাউদ্দিন লাভলুর নাটক কখনো মিস করিনা। তাই একেবারেই খুব কাছ থেকে নাটকের দৃশ্য বুঝিয়ে দেওয়াটা অনেকটাই স্বপ্নের মতো মনে হচ্ছে ।
শ্যুটিং দেখার সময় নাট্য শিল্পীদের অভিনয় দেখে আমরা অনেকটাই অতীতেই ফিরে যাচ্ছি বারবার। এমনটি জানালেন সেখানে উপস্থিত আরো কয়েকজন দর্শক।
নাটকে অভিনয় শিল্পী জেবানিকার মা মনিরা খাতুন জানান, মেয়ের শ্যুটিং থাকলে কখনো আমি বা তার বাবা সঙ্গে থাকে। আমারও খুব ভালো লাগে। কুষ্টিয়া এসে এই শহর ভালোভাবে দেখা হয়নি তবুও আমার খুবই ভালো লাগছে। কখনো কুষ্টিয়ায় আসা হয়নি এর আগে। আশা করি এই নাটকটি অনেকটাই দর্শকপ্রিয়তা পাবে। কারন সালাহউদ্দিন লাভলুর নাটক মানেই শিক্ষানীয় এবং ভিন্ন আয়োজন তার নাটকে ফুটে ওঠে।
রিপন নবী জানান, আমার বাড়ীটি সুন্দর করে সাজানোর ইচ্ছা থাকলেও বেশিরভাগ সময় কুষ্টিয়ার বাইরে থাকার কারনে ভালো করে দেখভাল করতে পরিনা। তবুও সাজিয়ে গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেছি মাত্র। আমার বাড়ীও আশপাশের একেবারে না গ্রাম না শহর এমন আঙ্গিকে মফস্বল এলাকা হিসেবে গড়ে তুলেছি। যে কারনে এই বাড়িটিতেই শ্যুটিং হচ্ছে যেটি কিনা নাটকের নির্মাতা ও পরিচালক সালাহউদ্দিন লাভলুর পছন্দ করেছে।
চিত্রনাট্যকার ও পরিচালক সালাউদ্দিন লাভলু জানান, মফস্বল এলাকার পরিবারকেন্দ্রীক ধারাবাহিক এ নাটকটি শীঘ্রই চ্যানেল আইতে প্রচার করা হবে। নাটকটিতে পাড়ার বন্ধুদের জীবন কাহিনীই তুলে ধরা হয়েছে। মুল চরিত্রে অভিনয় করছে নিলয় ও মিতিল ফারুক। এছাড়াও চ্যানেল আই সেরা নাচিয়ে সিনথিয়া, শাহেদ, জীবন, সাব্বির ও কুষ্টিয়ার মেয় সৃষ্টিসহ অনেক প্রতিভাবান শিল্পীরা অভিনয় করছেন ।
তিনি বলেন, একটা সময় আনন্দঘন দিন ছিলো। সেসব দিন আমরা এখন ভুলে যেতে বসেছি। ওইসব দিনের চিত্র তুলে ধরেই আমার এই ধারাাবহিক নাটকটি সাজিয়েছি। আশা করি দর্শকপ্রিয়তা পাবে এই নাটকটি।