গাড়িতে ডাক্তারের স্টিকার লাগিয়ে কুষ্টিয়া শহরের এ্যাপলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক দাবিকরে ভিজিটিং কার্ড ব্যবহার করে দীর্ঘদিন ধরে অসামাজিক কাজে লিপ্ত রয়েছে ডাক্তার পরিচয়দানকারী সালমা আক্তার বর্ষা।
শহর থেকে মাত্র ৫ কিলোমিটার দূরে পোড়াদহ স্বামীর বাসা বাড়ি থাকলেও শহরে বাসা ভাড়া নিয়ে স্বামীর চোখে ধোলা দিয়ে সালমা চালিয়ে আসছিল তার অসামাজিক কর্মকান্ড ! এবার অসামাজিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকা অবস্থায় পুলিশের হাতে আটকের পর বেরিয়ে আসছে আরো অজানা তথ্য। শহরে বাসা বাড়া নিয়ে অসামাজিক কর্মকান্ড চালিয়ে আসলে সব দেখেও চুপ থাকতে বাধ্য করা হতো বাড়ির মালিককে। তার কর্মকান্ডের প্রতিবাদ করায় ওই সালমা আক্তারের ক্যাডার বাহিনীর হামলা শিকার হতে হয় স্বামী নাসির উদ্দিনকে।
গত সোমবার বিকেলে কুষ্টিয়া শহরের মারকাস মসজিদের গলির মধ্যে এক বাসা বাড়িতে ডাক্তার পরিচয়দানকারী সালমা আক্তারসহ ৩ জন অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় স্থানীয়রা তাদের এক রুমে আটক করে রাখে। পরে সংবাদ পেয়ে পুলিশ তাদের আটক করে থানায় নিয়ে আসে। আটক ৩ জন হলো, আবুল কাশেম জেলার কুমারখালী উপজেলার চাপড়া গ্রামের আহম্মদ আলীর ছেলে ৷ নূপুর কুমারখালী উপজেলার বাঁশগ্রামের মৃত আনছার আলীর মেয়ে ও সালমা আক্তার বর্ষা একই গ্রামের জালাল উদ্দিনের মেয়ে বলে জানান পুলিশ। পরের দিন আসামীদের আদালতে হাজির করা হয়।
সালমা আক্তারের স্বামী নাসির উদ্দিন জানান, ২০১৩ সালের প্রথম দিকে সালমা আক্তারের সাথে তার বিয়ে হয় পরিবারের অসম্মতিতে। এর আগে নাসির জানতে পারে সালমা আক্তার নামে একটি ফুটফুটে মেয়ে টাকার অভাবে মেডিকেলে পড়াশুনা করতে পারছে না এবং এ কারনে জড়িয়ে পড়ছে অসামাজিক কাজে। সব কিছু জেনেই সালমা আক্তার কে স্ত্রীর মর্যাদা দিয়ে (৪ লাখ ১০ হাজার টাকা) কাবিন নামাতে বিয়ে করেন নাসির উদ্দিন।
বিয়ের পর থেকেই স্বামীর কাছে থেকে সালমার ডাক্তারী পড়ালেখার খরচসহ প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা নিতে থাকে । সালমা আক্তার কুষ্টিয়ার নাম করা সার্জারী ডাক্তার বলে স্বামীর কাছে পরিচয় দিলে স্বামী অশিক্ষিত সরল মনা নাসির উদ্দিন সেটাই বিশ্বাস করেন এবং সালমা আক্তার কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতালসহ শহরের বেশ কয়েকটি ক্লিনিকে বিভিন্ন রোগীদের অপারেশন করেন বলে স্বামী নাসির কে জানিয়ে প্রতিদিন বাসা থেকে বেড়িয়ে শহরে আসতে থাকে। এভাবেই চলতে থাকে দিনের পর দিন।
গত এপ্রিলে ডাক যোগে চিঠি আসে স্বামী নাসিরের নামে এবং চিঠিতে যা লিখাছিল তা শুনে স্ত্রী সালমা আক্তারের অসামাজিক কর্মকান্ডের বিষয় জেনে যায় এবং স্ত্রীকে প্রাইভেট কার দেয়া থেকে বিরত থাকে নাসির। কিন্তু চতুর সালমা সরকারী চাকুরী করেন ডিউটি না করলে চাকুরী চলে যাবে স্বামীকে জানিয়ে গাড়ি না নিয়েই পতিদিন শহরে চলে আসেন। এভাবে কয়েক দিন চলে যায়।
এরই মাঝে স্বামী নাসির জানতে চাই সে কিসের ডাক্তার এবং দেখতে চাই কোন হসপিটালে সে চাকরী করে এবং সন্দেহ করে সালমা কে বাসা বাড়ি থেকে বেরুতে বাধা দেয়। এতে স্বামীর প্রতি ক্ষিপ্ত হয় সালমা। এরই এক পর্যায়ে।
আর এতেই ক্ষিপ্ত সালমার ভাই ও তার এলাকার ক্যাডার দিয়ে রশিদ এগ্রোফুডের সামনের বাসা থেকে স্বামী নাসিরকে অপহরনের চেষ্ট করে ব্যার্থ হয়ে জনগনের হাতে ধরা পড়ে। এ সময় গণধোলাই দিয়ে সলমার ভাইসহ ৩ জনকে পুলিশে সোপর্দ করে।
পরে আইলচারা ইউপি চেয়ারম্যার ছিদ্দিকুর রহমান ও তৎকালীন সদর থানার ওসির মদ্ধস্ততায় বিষয়টি আপোষ হলে সালমা আক্তার কে ঘরে তুলে নেন নাসির উদ্দিন। এর কয়েক মাস যেতে না যেতেই আবার শহরের একটি ভাড়া বাসা থেকে দালাল,খদ্দেরসহ অসামাজিক কাজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় স্থানীয় জনতার হাতে ধরা খেয়ে পুলিশে সোপর্দ করা হয়।
ঐ বাসার বাসিন্দারা জানান,দালাল নুপুর ১মাস জাবত বাসা ভাড়া নিয়ে তাদের অপকর্ম চালিয়ে আসছিল। সালমা ও দালাল নুপুর কে বাধা দিলে নুপুর জেলা আওয়ামিলীগে নেতাদের নাম ভাঙিয়ে এবং পুলিশ ও তার হাত আছে জানিয়ে উল্টো ওই পরিবারকে হুমকী দিয়ে আসছিল বলে ওই পরিবারের বাসিন্দারা অভিযোগ করেন।
এদিকে কুষ্টিয়া সাদ্দাম বাজার এলাকার নিউ এ্যাপলো ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পরিচালক ও ডাক্তার পরিচয়দানকারী সালমার বিষয়ে জানতে ও ডায়াগনস্টিকে উপস্থিত হলে বাহিরের গেটে তালা বন্ধ অবস্থায় দেখা গেছে। পরে ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক রঞ্জুর মোবাইল নম্বরে একাধিকবার ফোন দিয়েও তাকে পাওয়া যায়নি।