একটি মন্ত্র শোনার জন্য রেসকোর্স ময়দানে লক্ষ লক্ষ জনতার অপেক্ষা। একটু পরেই এসে সে মন্ত্রখানি শোনাবেন কবি। অবশেষে জনতার ঢেউ চাপিয়ে বীর বেশে মঞ্চে আসলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। শোনালেন মুক্তির মন্ত্র, এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
এই একটি মাত্র ভাষণই ৭ কোটি বাঙালিকে মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়তে উদ্বুদ্ধ করেছিল। আর সেই শিউরে ওঠা শ্রুতিমধুর ১৯৭১ সালের ৭ই মার্চের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সেই ঐতিহাসিক ভাষণ পুরোপুরি আয়ত্ব করেছে মাত্র আট বছরের শিশুপুত্র আবু বক্কর সিদ্দিক মাহিম। সে কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের ত্রতীয় শ্রেনীর ছাত্র।
সোমবার সকালে জিলা স্কুলের বার্ষিক ক্রিড়া প্রতিযোগীতা উপলক্ষে শিক্ষার্থীদের সমন্বয়ে অনুষ্ঠিত ক্রীড়া প্রতিযোগীতা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান এবং যেমন খুশী তেমন সাজো অনুষ্ঠানে আবু বক্কর সিদ্দিক মাহিম মাইক্রোফোনের সামনে মুজিবীয় ভঙ্গিতে দাড়িয়ে আঙ্গুল তুলে বলে ওঠে
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
এবারের সংগ্রাম আমাদের স্বাধীনতার সংগ্রাম …….
মেধাবী এই শিশু এর আগেও কোরআন তেলওয়াত ও কবিতা আবৃত্তিতে প্রথম স্থান অধিকার করেছিলো।
৪ বছর বয়সে শুনে-শুনে মাহিম বঙ্গবন্ধুর ভাষণের অর্ধেকটা মুখস্ত করেন এবং তখন থেকেই বিভিন্ন প্রতিযোগীতায় পুরস্কার পেয়ে আসছিলেন। বর্তমানে তার বয়স ৮বছর। প্রায় প্রতিদিন রাতে ভাষণ শোনে মাহিম।
মাহিমের মামা শেখ রিপন আলী জানান, আমার ভাগ্নে মাহিমের ইচ্ছা ঐতিহাসিক এই ভাষণটি বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে শোনাবে। তার কন্ঠে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে প্রধানমন্ত্রী তাকে কোলে তুলে আদর করবে। এটাই তার একমাত্র আকাঙ্খা।
শিশু মাহিম কুষ্টিয়ার আশিক রহমান ও মামলী আক্তার মোলি দম্পতির একমাত্র ছেলে।
মাহিমের মা মামলী আক্তার মোলি জানান, মাহিমের আগ্রহে ভাষণ মুখস্ত করানো সম্ভব হয়েছে; অবশ্য তার বাবাও চেয়েছেন। তিনি বলেন, পুরো ভাষণ প্রথমে লিখে নিয়েছি; আমি পড়তাম, মাহিম শুনতো। পরে মোবাইল রেকর্ডিং থেকে বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শোনতে-শোনতে শিখা হয়।
কুষ্টিয়া জিলা স্কুলের প্রধান শিক্ষ এফতেখাইরুল ইসলাম জানান, এতটুকু শিশু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ শুনে আমাদের উপস্থিত সকলের তাক লাগিয়ে দিয়েছে। তার এই ভাষণ আমাদের মুগ্ধ করেছে।
পরে ক্রীড়া প্রতিযোগীতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার তুলে দেন অতিথিবৃন্দ।