বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের স্মৃতি বিজড়িত শিলাইদহ কুঠিবাড়িতে ভারতের অর্থায়নে ১৩ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হচ্ছে দৃষ্টিনন্দন কমপ্লেক্স। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় শিলাইদহ সফরে এসে কুঠিবাড়ির নানা সমস্যা অনুধাবন করে কমপ্লেক্স স্থাপনে প্রায় ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। কুঠিবাড়ির প্রধান ফটকের সামনে ৬ একর জমিতে নির্মিত হবে এই কমপ্লেক্স। যার ডিজাইন সম্পন্ন করেছেন দেশের বিশিষ্ট স্থপতি রবিউল হুসাইন।
এখানে বসে রচিত গীতাঞ্জলী কাব্যগ্রন্থ-ই তাঁকে এনে দিয়েছে নোবেল পুরষ্কার আর বিশ্বকবির মর্যাদা। এ সব কারণে দেশী বিদেশী পর্যটকদের কাছে শিলাইদহ কুঠিবাড়ির গুরুত্ব অনেক বেশি। পদ্মা নদীর সন্নিকটে ছায়া শীতল পরিবেশে অবস্থিত, কুঠিবাড়ি দর্শনে তাই আগমন ঘটে অসংখ্য পর্যটকদের। কুঠিবাড়ি রবীন্দ্র প্রেমীদের মুগ্ধ করলেও বিড়ম্বনাও কম পোহাতে হয় না! খাবার খাওয়ার কোন ব্যবস্থা নেই, নেই কোন টয়লেটের ব্যবস্থা। দর্শনার্থীদের নিরাপত্তা শঙ্কার পাশাপাশি রয়েছে আবাসনের দু:শ্চিন্তা, রেষ্ট হাউজ সহ অবকাঠামোগত সমস্যা থাকায় পর্যটকদের আকর্ষণও দিন দিন কমে যাচ্ছে। ভারতের রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় গতবার বাংলাদেশ সফরের সময়, কুঠিবাড়ি সফরে আসেন। তখন এসব বিড়ম্বনার চিত্র অনুধাবন করে, ’অত্যাধুনিক কমপ্লেক্স’ নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দেন। পরে ভারত সরকার এ প্রকল্পে বরাদ্দ দেয় প্রায় ১৩ কোটি টাকা।
দীর্ঘদিন অন্যের দখলে থাকা ৬ একর জমি উদ্ধার করে স্থানীয় প্রশাসন। এখন সেখানেই নির্মিত হবে এই কমপ্লেক্স ভবন। এরই মধ্যে এর ফলকও উন্মোচন করা হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে ওই স্মৃতিফলক উন্মোচন করেছেন। কমপ্লেক্সের ডিজাইনও এর মধ্যে সম্পন্ন করা হয়েছে।
কমপ্লেক্সের মধ্যে রয়েছে গ্রীক থিয়েটারের আদলে একটি দৃষ্টিনন্দন মঞ্চ এবং এম্ফি থিয়েটার, রয়েছে দৃষ্টি নন্দন ক্যাফেটারিয়া, লাইব্রেরী কাম ডকুমেন্টেশন সেন্টার, অত্যাধুনিক গেষ্টহাউজ, টয়লেট ও আনছার শেড। প্রবেশ মুখে থাকছে কুঠিবাড়ির আদলে অত্যাধুনিক গেইট এবং টিকেট কাউন্টার। সংস্কৃতিকর্মী ও দর্শনার্থীরা মনে করেন প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে, কুঠিবাড়ি আরো সমৃদ্ধ হবে।
শিলাইদহ কুঠিবাড়ির কাষ্টোডিয়ান মোখলেছুর রহমান জানান, ”নতুন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণের জন্য, ইতিমধ্যে ভারতের কাছ থেকে ১৩ কোটি টাকা বরাদ্দ পাওয়া গেছে। নতুন কমপ্লেক্স ভবনের ডিজাইনও সম্পন্ন হয়েছে। গণপূর্ত মন্ত্রণালয় দ্রুততম সময়ের মধ্যেই প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে”।