কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলায় সার্বিক বন্যা পরিস্থিতির আরো অবনতি হয়েছে। দিনকে দিন পানি বাড়ছেই। সমানে বাড়ছে মানুষের দুর্ভোগ। বুধবার বন্যার পানিতে ডুবে সোহাগ (৭) নামে এক শিশুর মৃত্য হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বুধবার বিকাল ৫টার দিকে শিশু সোহাগ নতুন করে বন্যা কবলিত প্রাগপুর ইউনিয়নের ভাগজোত তালতলার তলিয়ে যাওয়া পানিতে ডুবে যায়। পরে স্থানীয় লোকজন শিশুটিকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। সে ওই গ্রামের কৃষক ইকবাল হোসেনের ছেলে।
ফারাক্কা বাঁধের সবগুলো গেট খুলে দেয়ায় গত তিনদিন ধরে দৌলতপুর উপজেলার বন্যা কবলিত কয়েকটি ইউনিয়নে অস্বাভাবিকভাবে পানি বাড়ছে। প্লাবিত হচ্ছে নতুন নতুন এলাকা। উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারী, মরিচা ও ফিলিপনগর ইউনিয়নের সাথে প্রাগপুর ইউনিয়নেও বন্যার পানি ঢুকে পড়েছে।
প্রাগপুর ইউনিয়নের ময়রামপুর, ইসলামনগর, মুসলিমনগর, মহিষকুণ্ডি, জামালপুর, মাঠপাড়া ও পাকুড়িয়া গ্রামসহ অন্তত ১০ গ্রাম নতুন করে প্লাবিত হয়েছে। এতে সেখানকার কৃষকদের আবাদি ফসলের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বেশ কিছু বাড়িতে বন্যার পানি ঢুকে গেছে। বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছে।
ওই ইউনিয়নের মানুষ দুর্ভোগে পড়লেও সেখানকার চেয়ারম্যান এখনো তাদের পাশে দাঁড়াননি বলে অভিযোগ উঠেছে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত প্রাগপুর ইউনিয়নবাসীর অনেকে চেয়ারম্যান আশরাফুল ইসলাম মুকুলের ‘নীরবতায়’ চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন।
এদিকে ভারত সরকার ফারাক্কা বাঁধের ১০৯টি গেটের সবগুলো খুলে দেয়ার প্রভাবে পদ্মার পানি এখনো বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। অন্যদিকে তীব্র শ্রোতে রাইটা-মহিষকুণ্ডি বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ভেঙে হু হু করে পানি ঢুকে পড়ছে। অস্বাভাবিকভাবে পানি বৃদ্ধির চাপ অব্যাহত থাকায় প্রতিদিনই নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে।
দৌলতপুর উপজেলার চিলমারী, রামকৃষ্ণপুর, ফিলিপনগর, মরিচা ও সবশেষ প্রাগপুর ইউনিয়নের অর্ধশতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক মানুষ বন্যায় পানিবন্দি অবস্থায় রয়েছে। তলিয়ে গেছে প্রায় দুই হাজার হেক্টর জমির বিভিন্ন ফসল। এ অবস্থায় বন্যাদুর্গত এলাকার মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই।
বন্যা পরিস্থিতি চরম অবনতি হওয়ায় ইতোমধ্যে দুর্গত এলাকার সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়া হলেও বানভাসিদের আশ্রয়ের জন্য এসব প্রতিষ্ঠানের শ্রেণিকক্ষ খোলা রাখা হয়েছে।