কুষ্টিয়ায় উডল্যান্ড প্লাইউড কারখানায় ভয়াবহ অগ্নিকান্ডে গুরুতরভাবে দগ্ধ ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন চার হতভাগ্য শ্রমিক মৃত্যুর সঙ্গে লড়ে অবশেষে একে একে সবাই মৃত্যুরকোলে ঢলে পড়েন।
সর্বশেষ রবিবার দুপুরে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান সাজেদুল ইসলাম (২২) নামের এক শ্রমিক। তিনি কুষ্টিয়া সদর উপজেলার জুগিয়া-বারখাদা এলাকার মতিয়ার রহমানের ছেলে। এর আগে একে একে মারা যান একই এলাকার আব্বাস উদ্দিনের ছেলে মেহেদী হাসান (১৭), জুগিয়া উত্তরপাড়া এলাকার অমল কুমার দাসের ছেলে চান্নু কুমার (১৮) ও বটতৈল গ্রামের কবির উদ্দিনের ছেলে রায়হান (১৮)।
হতভাগ্য শ্রমিক পরিবারের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়, অগ্নিদগ্ধ হয়ে মারা যাওয়া ওই শ্রমিক পরিবারগুলোকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে প্লাউড কারখানা কর্তৃপক্ষ মাত্র দেড় লাখ টাকা করে প্রদান করছে। এ জন্য তিন শ’ টাকার স্টাম্পে স্বাক্ষরও নেয়া হচ্ছে। যাতে শ্রমিক পরিবার থেকে পরে কোন ঝামেলা করা না হয়।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শ্রমিকদের আত্মীয়-স্বজনরা জানান, মালিক পক্ষের লোকজন মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে স্থানীয় নেতাদের ম্যানেজ করে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলোকে ওই টাকা নিতে বাধ্য করছে। তারা জানতে চান চারটি জীবনের মূল্য কী মাত্র ৬ লাখ টাকা? এ নিয়ে নিহত পরিবারগুলোর মধ্যে বিরাজ করছে চরম অসন্তোষ।
গত ২২ নবেম্বর রাত সোয়া ৩টার দিকে কুষ্টিয়া-ঈশ্বরদী মহাসড়ক সংলগ্ন শহরের বারখাদা এলাকায় উডল্যান্ড নামক প্লাউড কারখানায় ওই অগ্নিকান্ডের ঘটনা ঘটে। কুষ্টিয়া ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা দীর্ঘ সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা প্রচেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে সক্ষম হয়।
ভয়াবহ এ অগ্নিকান্ডে কারখানার অভ্যন্তরে থাকা ওই চার শ্রমিক গুরুতরভাবে অগ্নিদগ্ধ হয়। মুমূর্ষু অবস্থায় তাদের উদ্ধার করে প্রথমে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল ও পরে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যালের বার্ন ইউনিটে ভর্তি করা হয়।