পদ্মা-গড়াইয়ের মোহনায় উপচে পড়া ভীড়, দরকার চলাচলের রাস্তা
চারিদিকে সবুজে ঘেরা কাশবন মাথায় এক গুচ্ছ সাদা ফুল বাতাসে দুলছে। পদ্মা নদীর অথৈ জলরাশি। নদীতে ছোট ছোট নৌকায় পাল তুলে পদ্মার রুপালী ইলিশ ধরতে ব্যস্ত সময় পাড় করছে মাঝ বয়সী জেলে।
পানির কলকল শব্দে চারিদিকে এক অন্য জগৎ। নির্মল বিশুদ্ধ খোলামেলা বাতাস। অথৈ জলরাশি থেকে পাশ বেয়ে বয়ে চলেছে গড়াই নদী। বাংলার এক অপরুপ সৌন্দর্য খুব সহজেই উপভোগ করার মতো। এই যেনো এক সাগর কন্যা গরীবের কক্সবাজার। অল্প সময়ে স্বল্প খরচে এক অপরুপ সৌন্দর্যের লীলা ভূমি। হ্যাঁ বলতে ছিলাম। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার ঐতিহ্যবাহী হাটশ হরিপুর ইউনিয়নের পদ্মা গড়াই মোহনা। বহু কালের সাক্ষী নদী বেষ্টিত শান্তি প্রিয় এই জনপদের কথা। শহরের যান্ত্রিক জীবনের কোলাহল থেকে কিছুটা সময় পরিবারের সকলকে নিয়ে মুক্ত বাতাস আর অপরুপ সৌন্দর্য দেখার সুযোগ রয়েছে এখানে। সাপ্তাহিক ছুটি কিংবা ছুটির দিন পড়ন্ত বিকালের গোধূলি লগ্নে অপরুপ সৌন্দর্য উপভোগ করতে হাজার হাজার দর্শনার্থীর উপচে পড়া ভীড় দেখার মতো। দূর দূরান্ত থেকে ছুটে আসা সকল বয়সী মানুষদের পদচারণায় মূখরিত হয় পদ্মা গড়াইয়ের মোহনা। এমন সৌন্দর্য দেখতে আসায় আমাদের হরিপুরের সুনাম আরো বেড়ে যাচ্ছে প্রতিনিয়ত। কোমলমতি শিশু থেকে শুরু করে সকল বয়সী মানুষদের সুস্থ বিনোদনের একমাত্র জায়গা পদ্মা গড়াইয়ের মোহনা।
এই সৌন্দর্য দেখতে আসা হাজার হাজার দর্শনার্থীদের আগমনে স্হানীয় বাসিন্দাদের দোকান গুলোতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়েছে। কিন্তু এই অপরুপ সৌন্দর্য দেখতে আসার একমাত্র সড়কের বেহাল দশা। নৌবাহিনীর তত্বাবধানে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতাধীন ব্লক দিয়ে নদী রক্ষা বাঁধ করা হলেও পদ্মা গড়াই মোহনায় চলাচলের জন্য রাস্তার কোন ব্যবস্থা রাখা হয়নি। যদিও বিকল্প পন্হা হিসেবে সরু রাস্তা রয়েছে যেটা ভাঙ্গা। সামান্য বৃষ্টিতে পানি জমে কাদায় পরিণত হয় যা পদ্মা গড়াই মোহনায় বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য হুমকি।
প্রতিনিয়ত ঘটছে ছোট খাটো দূর্ঘটনা। যার ফলে দিন দিন বেড়াতে আসা দর্শনার্থীদের অনীহা সৃষ্টি হচ্ছে। আমলা মিরপুর থেকে পরিবার নিয়ে পদ্মা গড়াইয়ের মোহনায় বেড়াতে আসা একজন দর্শনার্থী গোলাম কিবরিয়া মাসুম জানান, দুই মেয়ে আর পরিবারের সকলকে নিয়ে ছুটির দিনে প্রায়ই বেড়াতে আসি এখানে। এতো সুন্দর অপরুপ সৌন্দর্য পরিবারের সকলকে নিয়ে উপভোগ করার মতো। পদ্মা গড়াই মোহনার কোল ঘেষে নদী রক্ষা বাঁধ করা হলেও রাস্তা না থাকায় চলাচলের খুব সমস্যা হচ্ছে। এই সৌন্দর্য দেখতে আসা দর্শনার্থীদের চলাচলের জন্য রাস্তার ব্যবস্থা করা না হলে এই সৌন্দর্য দেখতে আসা দর্শনার্থীদের সংখ্যা কমতে থাকবে। স্হানীয় কয়েকজন দোকানদার জানান, এখানে ঘুরতে আসা মানুষদের জন্যই আমাদের কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে পরিবার নিয়ে দুমুঠো ডাল ভাত খেয়ে বেঁচে আছি। কিন্তু দ্রুত রাস্তার ব্যবস্থা করা না হলে মানুষ জন বেড়াতে না আসলে আমরা পরিবার নিয়ে না খেয়ে থাকতে হবে। তাই স্হানীয় বাসিন্দা ও হাজার হাজার দর্শনার্থীদের দাবি যত দ্রুত সম্ভব পদ্মা গড়াই মোহনায় চলাচলের জন্য রাস্তার ব্যবস্থা করা হোক। তা না হলে এই সৌন্দর্য ভোগান্তিতে পরিণত হবে।
এস আই সুমন, কুষ্টিয়া