কুষ্টিয়ায় সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভার্চুয়াল কোর্টে বিচারপ্রার্থীদের শুধুমাত্র জামিন শুনানি মামলার কার্যক্রম অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত কুষ্টিয়া জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচাকর সৈয়দ হাবিবুল ইসলামের আদালতে এ জামিন শুনানি অনুষ্ঠিত হয়।
আদালত সূত্রে জানা যায়, করোনার বিস্তার রোধে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে দেশব্যাপী চলমান সাধারণ ছুটির মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে আদালতে বিচারিক কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। এতে বিচার প্রার্থীদের সীমাহীন ভোগান্তি লাঘবে সরকার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন।
হাইকোর্ট বিভাগের সম্মতিক্রমে শুধুমাত্র জামিন সংক্রান্ত মামলার বিষয়সমূহ ভার্চুয়ালভাবে অনুষ্ঠিত হয়। এদিন কার্যতালিকায় যথাক্রমে ৪১টি ও ২১টি মামলা শুনানির কথা থাকলেও ৫৫টি মামলার জামিন শুনানি হয়। এ সময় ৪৭টি মামলায় জামিন মঞ্জুর করেন আদালত।
জানা যায়, কুষ্টিয়ার সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক অরূপ কুমার গোস্বামী ৪১টি মামলার মধ্যে ৩৯টি মামলা শুনানি করেন। ৩৩টি মামলায় ৫৫ জনকে জামিন দেন এবং চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক সৈয়দ হাবিবুল ইসলাম ২১টি মামলার মধ্যে ১৬টি শুনানি করেন এবং ১৪টি মামলায় জামিন দেন।
উল্লেখ্য, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব রোধে গত ২৬ মার্চ থেকে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ ও হাইকোর্ট বিভাগসহ দেশের সব আদালতের নিয়মিত কার্যক্রম বন্ধ ছিল।
এই পরিস্থিতিতে, রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ গত ৯ মে একটি অধ্যাদেশ জারি করেন যাতে তথ্য-প্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের বিচার কাজ পরিচালনার পথ তৈরি হয়।
এরপর, প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন ১০ মে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে জরুরি মামলা পরিচালনার বিষয়ে আদালতের জন্য কয়েকটি নির্দেশনা দেন।
কোভিড-১৯ মহামারীর কারণে সাধারণ ছুটির মধ্যে তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে আদালতের বিচারকাজ চালানোর অধ্যাদেশ জারির পর ‘প্র্যাকটিস ডাইরেকশন’ জারি করেন প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন।
তার ভিত্তিতে শুরু হয় নতুন ধরনের আদালত কার্যক্রম। যেখানে প্রচলিত এজলাসে বসেননি বিচারক। আর আইনজীবীরা গাউন ছাড়া কালো কোর্ট পরে বিভিন্ন ফৌজদারি মামলার অভিযুক্ত, আসামিদের পক্ষে জামিন শুনানি করেছেন তথ্য প্রযুক্তি ব্যবহার করে।
গত রোববার সুপ্রিম কোর্ট থেকে তিনটি আলাদা ‘প্র্যাকটিস’ নির্দেশনার পাশাপাশি ভার্চুয়াল কোর্ট পরিচালনা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরপর সোমবার থেকে নিম্ন আদালতে জামিন শুনানি শুরু হয়।