কুষ্টিয়া মহাসড়কে চাঁদাবাজী যেন থামছেই না। এই চাঁদাবাজরা ভোর থেকে চাঁদা তোলা শুরু করে। এরা পৌর রোড ডেমারেজ স্লিপ দিয়ে চাঁদাবাজী করছে বলে জানা যায়। পৌরসভা রোড টোল/রোড ড্যামারেজ নামে মহাসড়কে এই চাঁদাবাজী হচ্ছে। যেখানে পৌরসভার প্রধান শর্ত হলো মহাসড়কে কোন ধরণের টোল আদায় করা যাবে না।
জানা যায়, ডিজিটাল বাংলা প্রোপাইটার ফরাদুল রহমান পৌরসভা কর্তৃক পৌর এলাকার মধ্যে (মহাসড়ক ব্যতিত) চলাচলকারী ট্যাংকলরী, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ, হালকা যানবাহন টোল/রোড ড্যামেজ চার্জ আদায়ের ইজারা নেয়। কিন্তু ফরাদুল রহমান শর্ত ভঙ্গ করে কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা সড়কের ত্রিমোহনী হতে মজমপুর গেইট রোড ড্যামেজে টোল আদায়ের ১৫% এবং ৮৫% চুক্তিবদ্ধ হয় অন্য একপক্ষের সাথে।
এখানে ডিজিটাল বাংলার প্রোপাইটার ফরাদুর রহমান তপন অপর এক পক্ষের কাছে তিন শত টাকার স্টাম্পে চুক্তিবদ্ধ হয়। এই চুক্তি কুষ্টিয়া পৌরসভা ম্যানুয়ালের নিয়ম নীতি উপেক্ষা করে করা হয়। এদিকে কুষ্টিয়া পৌরসভার দরপত্র বিজ্ঞপ্তি নং ০৪/২০১৭-২০১৮ স্মারক সংখ্যা-কুপৌ-নিঃপ্রঃ/২০১৭/৮০৫ তারিখ ১৬/১০/২০১৭ ও স্মারক সংখ্যা- কুপৌ- ২০১৭/৪৭০৬ তারিখ ২১/১১/২০১৭ উল্লেখ রয়েছে মহাসড়ক ব্যতিত এই টোল আদায় করতে হবে।
পৌরসভার প্রথম শর্ত ছিলো ট্রাক (পাঁচ টনের মধ্যে) প্রতি ট্রাক ১০টাকা, পাঁচ টনের উর্দ্ধে প্রতি ট্রাক ২০টাকা, কাভার্ড ভ্যান ১০টাকা, পিকআপ ১০টাকা, নছিমন, করিমন, এই জাতীয় ছোট যানবাহন ৫টাকা। দ্বিতীয় শর্ত কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা ও কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়কে যাতায়াতকারী যানবাহন থেকে টোল আদায় করা যাবে না। কিন্তু চাঁদার রশিদে দেখা যায় ২০ টাকা ও ৫০ টাকার নিচে কোন চাঁদার রশিদ পাওয়া যায়নি। এবিষয়ে কুষ্টিয়া পৌরসভার ২নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর খন্দকার মাজেদুল হক ধীমান বলেন আমাদের ম্যানুয়ালে ২নং শর্তে উল্লেখ রয়েছে, কুষ্টিয়া-রাজবাড়ী, কুষ্টিয়া-ঝিনাইদহ, কুষ্টিয়া-ভেড়ামারা ও কুষ্টিয়া-মেহেরপুর মহাসড়ক থেকে কোন টোল আদায় করা যাবেনা। যদি টোল আদায় করে তবে সে পৌরসভার শর্ত ভঙ্গকারী হিসেবে গন্য হবে। এছাড়া ৫০ টাকা কোন যানবাহন থেকে নেয়া যাবে না। আমাদের সর্বচ্চ টোল ২০ টাকা।
এদিকে এই সব শর্ত ভঙ্গের দায়ে টোল আদায়কারী কর্তৃপক্ষ ফরহাদুল রহমানের ৪ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখ সমস্ত টোল আদায় কার্যক্রম বন্ধ করে দেয় পৌরসভা কর্তৃপক্ষ। এরই জের ধরে গত ২৫শে মার্চ জেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের প্যাডে পুনরায় টোল আদায়ের জন্য নির্দেশ দেয়। যার স্মারক নং- জেপ/কুষ/১৮/ডিও/২২। প্যাডে উল্লেখ ছিল, জেলা পরিষদের কুষ্টিয়া পৌর এলাকার মধ্যে মহাসড়ক ব্যতীত চলাচলকারী ট্যাংকলরি, কাভার্ডভ্যান, পিকআপ ও হালকা যানবাহন হইতে টোল আদায় এর ভুল বোঝাবুঝির কারণে গত ৪ জানুয়ারি হইতে ২৫ মার্চ তারিখ পর্যন্ত বন্ধ ছিল। মাননীয় সদর এমপি জনাব মাহবুবউল আলম হানিফ এর নির্দেশ দরদাতাদের আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে আইনগত সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়।
স্মারক সংখ্যায় উল্লেখিত মহাসড়কের ওপর অথবা মহাসড়কের সম্মুখে যেমন শেখ রাসেল হরিপুর সংযোগ সেতু, মজমপুর -ভেড়ামারা মহাসড়ক, মজমপুর-ঝিনাইদহ মহাসড়ক ও চৌড়হাস-রাজবাড়ী মহাসড়কে কোন প্রকার টোল আদায় করতে পারবে না। সত্যের ব্যত্যয় ঘটলে পূর্বের ন্যায় সাথে সাথে জনভোগান্তির স্বার্থে কার্যক্রম বন্ধ করা হবে। কিন্তু এই টোল আদায়কারীরা এখন আবারও মহাসড়কে জনভোগান্তি সৃষ্টি করে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি করে যাচ্ছে।
কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন জানান, আমরা গেলেই এই সব চাঁদাবাজ দৌড়ে পালিয়ে যায়। তাদেরকে ধরে আইনের আওতায় আনার চেষ্টা চলছে।
শারিয়ার ইমন
কুষ্টিয়া