প্রশাসনের নজরে আসছেনা অভিযোগ এলাকাবাসীর!
নিজস্ব প্রতিবেদক ।। কুষ্টিয়া সদর উপজেলার উজাগ্রম ইউনিয়নের করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া কালী নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। সরকারের রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করে পকেট ভারি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী নেতারা। এদিকে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন করছে তবুও প্রশাসনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে অবৈধভাবে বালি উত্তোলন চলছেই। এবিষয় নিয়ে করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা যায়, উজানগ্রাম ইউনিয়নের করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া কালী নদী থেকে দীর্ঘদিন ধরে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে। আর এই বালি উত্তোলন করা হচ্ছে স্থানীয় নেতাদের যোগসাজসে। প্রতিদিন ২০০-৩০০ ট্রলি বালি করিমপুর, বাশঁগ্রাম,কুশলীবাসা হরিনায়পুনের বিভিন্ন জায়গায় সরবরাহ করা হচ্ছে। কুষ্টিয়ার অন্যসব জায়গায় ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলন বন্ধ করা গেলেও করিমপুর বালুমহল বন্ধ করতে পারেনি প্রশাসন।
বালি বহনকারী ট্রলির কারণে করিমপুর প্রায় রাস্তাতেই খানাখন্দনের চিত্র দেখা গেছে। অবৈধ বালি উত্তোলনের ট্রলির কারণেই চলাচলের অনুপযোগী হয়ে দাড়িয়েছে এসব রাস্তাগুলো। রাস্তার উপর বালির স্তপে পরিণত হয়েছে। বালি বহন করা ট্রলির কারণে ছোটছোট কিছু দূর্ঘটনাও ঘটেছে। যেকোন সময় বড় ধরনের দূর্ঘটনার আশংকা করছে এলাকাবাসী।
এমনকি অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের ভাগবাটোয়ারা নিয়েও রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে এলাকাবাসীর দাবী। অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের কারণে এসমস্ত সমস্যা তৈরী হলেও আশ্চর্যজনক ভাবে করিমপুর নেতামাতব্বরদের কোন পদক্ষেপ চোখে পড়েনি।
সূত্র জানিয়েছে,উজানগ্রাম ইউনিয়নের করিমপুর উর্ধ্বতন নেতাদের যোগসাজসেই এ বালি উত্তোলন হয়ে থাকে। প্রতি ট্রলি থেকে ১০০ টাকা করে নেওয়া হয়। প্রতিদিন ২০০-৩০০ ট্রলি বালি উত্তোলন করা হয় এখান থেকে। এসব টাকা কয়েক ভাগে ভাগ করা হয়। এই ভাগ পৌঁছে যায় স্থানীয় জনপ্রতিনিধি পকেটে।
এব্যাপারে করিমপুরের কয়েকজন সচেতন নাগরিকের সাথে কথা হলে তারা জানান, অবৈধ ভাবে বালি উত্তোলনের টাকা দিয়ে মাদকের ব্যবসা করা হয়, সন্ত্রাসীদের লালন পালন করা হয়। এই বালির ঘাট যদি সরকারি ভাবে বন্ধ করা না হয় তাহলে যেকোন সময় দুর্ঘটনা হতে পারে। এছাড়া করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া রাস্তা সংলগ্ন যে স্থান থেকে বালি উত্তোলন করা হচ্ছে সেখানে বাসিন্দারা ও সাধারণমহলের মধ্যে আতংক সৃষ্টি হয়েছে যে,বর্ষা সময় বড় ধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া।
অবৈধ বালি উত্তোলন প্রসঙ্গে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুহাম্মদ মুছাব্বেরুল ইসলাম জানান, করিমপুরের জোয়াদ্দার পাড়ায় অবৈধভাবে বালি উত্তোলনের বিষয়টি জেনেছি। আমরা আগামী দু-একদিনের মধ্যে যেসময়টিতে বালি উত্তোলন হচ্ছে সেসময়ে গিয়ে যেকোন ভাবে ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বন্ধ করা হবে।
এ বিষয়ে ইবি থানার অফিসার জানান, এ অবৈধ বালি উত্তোলনের টাকা কখনো পুলিশ নেয়নি এবং কখনো নেবে না।
বালি উত্তোলনের বিষয়ে কুষ্টিয়া সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি জানান, বালি উত্তোলনের সময় আমাকে জানাবেন। আমি ব্যবস্থা গ্রহণ করবো। এই অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
উজানগ্রাম ইউনিয়নের করিমপুর জোয়াদ্দার পাড়া সচেতনমহল এই অবৈধ বালি উত্তোলন বন্ধের জন্য কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও কুষ্টিয়া পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে।